somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিপ্লোমাতে আসার আগে করণীয়

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিপ্লোমাতে আসার আগে করণীয়
আহমেদ আরিফ



এস.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ।তাই অনেকে ইংলিশ কিংবা কম্পিউটার কোচিং এ ভর্তি হয়েছেন কিংবা হবেন।অনেকের আবার ইচ্ছা আছে ম্যাটস/ডিপ্লোমাতে ভর্তি হবেন , তাই অনেক স্টুডেন্ট ভর্তি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এবার একটু দেখে নিলে ভালো হয় ডিপ্লোমাতে কাদের আসা উচিত এবং কাদের আসা উচিত না।একটা কথা মনে রাখবেন, আবেগের বসে কিছু করে লাইফের কয়েকটা বছর নষ্ট করবেন না।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ যারা আসবেনঃ
অনেকেই আছেন যাদের আর্থিক সমস্যা আছে পড়াশুনা চালানো কঠিন হবে বলে মনে করেন অথবা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স না পাওয়ার ভয় আছে আর পাবলিকে চান্স না পেলে হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া সম্ভব না কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার প্রচুর ইচ্ছা আছে তারা চলে আসতে পারেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং করার জন্য । কেননা এখানে আসার পর আপনি যদি ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারেন তাহলে আপনাকে ওয়াল্ড ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রতি ছয় মাস পর পর দেওয়া হবে ৪৮০০ টাকা শিক্ষা বৃত্তি। এছাড়াও মোটামুটি রেজাল্ট হলেই পাবেন ৯০০ টাকা বৃত্তি যা দিয়া কিছুটা হলেও আপনি চালিয়ে যেতে পারেন আপনার পড়াশোনার খরচ । ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার পরে যেকোন একটা চাকরি পাবেন আর চাকরির পাশাপাশি খুব সহজেই আপনার পছন্দসই কোন একটা ইউনিভার্সিটি থেকে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিংকরে নিতে পারবেন ।কাজ শেখার ইচ্ছা শক্তি থাকলে অবশ্যই শিখতে পারবেন কারণ পলিটেকনিকে এমন কিছু ইন্সট্রুমেন্ট আছে যেগুলো অনেক নামকরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতেও নেই।আর একটা কথা মেধা তেমন না থাকলে না আসাই ভালো কারণ এখনকার ডিপ্লোমার সিস্টেম এবংপড়াশোনা আগের থেকে অনেক অনেক আপডেট হয়েছে ।সুতরাং যা করবেন একটু ভেবে চিন্তে করবেন আবেগের বসে কিছু করে ফেললে আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যেতে পারে কয়েকটি বছর । আসলে ভাই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থাটা বাইরের দেশে যেমন দাম আছে আমাদের দেশে তার একবিন্দুও নেই, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত এর ডিপ্লোমা শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন।
ডিপ্লোমায় যাদের আসার তেমন একটা প্রয়োজন নাইঃ
বাবার টাকা আছে বাইচান্স পাবলিক কোন ইউনিভার্সিটি তে চান্স না পেলেও প্রাইভেট ইউনিভারসিটিতে বি.এস.সি করে নিতে পারবেন তাদের ডিপ্লোমাতে আসার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনেকরি না, কারণ একেতো ডুয়েট ছাড়া অন্য কোন পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স নেওয়ার কোন সুযোগ নাই। যদিও ইদানীং কয়েকটা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ করে দিছে।যেমন :আমার জানামতে সাস্টে কম্পিউটার ডিপার্টমেন্ট এ ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ আছে। তারপরেও সব সাবজেক্ট এর জন্য এখন পর্যন্ত উন্মুক্ত করা হয় নি, আর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলেও ভালো কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবেন না,আর যদিও হন তাহলে একেতো খরচ আছে সাথে আবার সেই ৪ বছর ধরে বি.এস.সি করতে হবে আর নরমাল কোন ইউনিভার্সিটিতেই ডিপ্লোমাদের জন্য আই.ই.বি আনুমোদন নেই। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিএসসি করার জন্য ঢাকার রমনাতে AMEI এর নাম হয়ত শুনেছেন,এখান থেকে ও আপনি অল্প সময়ে বিএসসি করতে পারেন।তবে আপনাকে ধৈর্যবান ও মেধাবী হতে হবে। আর একটা কথা, ডিপ্লোমায় আপনি আপনার ইংলিশের দক্ষতা আপনার অজান্তেই হারিয়ে ফেলবেন তবে এটা আসলে সবার ক্ষেত্রে নয়।কারণ অনেকেই আছে ডিপ্লোমা করেছেন।কিন্তু ইংলিশে অনর্গল কথা বলতে পারেন তবে এটা হাতে গোনা কয়েকজন হবে যারা সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টাতে বিভিন্ন কোর্স ও ইংলিশ ক্লাব এর মাধ্যমে ইংলিশকে ধরে রাখে । ইংলিশে দক্ষতা হারানোর প্রধান কারণ ডিপ্লোমাতে ইংলিশ নামে মাত্র দুইটা সাবজেক্ট থাকে যা ২ বা ৩ সেমিস্টারেই শেষ হয়ে যায় তারপর ৩ বছর শুধু বাংলিশ পড়ানো হয়, কাজ শেখার ব্যাপারে হাতেগোনা কয়েকজন টিচার ব্যতিত খুব কম টিচার এর কাছ থেকেই সাহায্য পাবেন বলে আশা করা যায়, আর এমন কিছু ইন্সটিটিউট আছে যেখানে চার অথবা পাঁচটি বিভাগের জন্য স্যার আছে মাত্র চার থেকে ছয়জন, ডিপ্লোমা করতে গিয়ে সব পেলেও পাবেন না দক্ষ স্যার ।অনেক স্যার আছেন যারা স্টুডেন্টদের টাকায় পকেট ভারি করে রাখেন।
যাদের ইচ্ছা আছে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমানোর তাদের ডিপ্লোমাতে আসার কোন প্রয়োজনই নাই কারন ডিপ্লোমাতে উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে যাওয়ার যতটা সুযোগ আছে তার থেকে হাজারগুন বেশী সুযোগ আছে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে যাওয়ার । আর যদিও ডিপ্লোমা কম্পিলিট করে যান তবে খরচও সেই একই লাগবে এবং সুযোগও সেই একই পাবেন।মাঝে দিয়ে আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যাবে অতি মূল্যবান ২টি বছর আর যদি কোন আন্দোলন হয় তাহলেতো ৩ বছরও হারিয়ে যেতে পারে ।
আর যে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংলিশ পাঠ্যপুস্তককে বাংলিশ পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন করে পড়ানো হয় সে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থা হতে কখনও খুব ভালো কিছু আশা করা সম্ভব না ।যার ফলাফল ...... খুব ভালো স্টুডেন্ট হয়ে ডিপ্লোমাতে ভর্তি হচ্ছে আর বের হওয়ার সময় আগে যা ছিল তাও হারিয়ে ফেলছে ।এখানে না আছে স্টুডেন্টদের কোন দোষ আর না আছে শিক্ষকদের কোন দোষ, এখানে মূল সমস্যাটাই হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার ।যেখানে ডিপ্লোমার প্রত্যেক ডিপার্টমেন্ট এর থাকা উচিত ছিল নিজেস্ব ক্লাব যেখানে ছাত্ররা প্রতিনিয়ত নতুন কিছু প্রজেক্ট বানানোর চেষ্টা করবে সেখানে ক্লাবতো দূরের কথা প্রজেক্ট বানানোর ব্যাপ্যারে যে কেউ অনুপ্রেরণা দিবে সেরকম লোক খুজে পাওয়াও মুশকিল ।
২০১৩ সালে সাস্টে অনুষ্ঠিত কাইজেন বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করে সিলেট পলিটেকনিক এর ইলেকট্রিকাল ডিপার্টমেন্ট এর কয়েকজন ছাত্র।জাফর ইকবাল স্যারের সাথে ছবিসহ তাদের সাক্ষাতকার পরদিন দেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রকাশ হয়।পলিটেকনিক এর ছাত্রদের প্রতি বৈষম্যের কিছু টা তখন ফোটে উঠেছিল। তারপর আবার সব উধাও।
৪৯টা সরকারী এবং চারশতাধিক প্রাইভেট পলিটেকনিক ছাত্রদের জন্য একমাত্র ডুয়েট ব্যতিত অন্য কোন ইউনিভার্সিটিতেই ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ারই সুযোগ দেওয়া হয় না ।
আসলে এর কারণটা কি ??
তাহলে কি ডিপ্লোমার স্টুডেন্টরা অন্য কোন পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতাও রাখে না ??
অথচ দেখা যাচ্ছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আন্ডারে যারা এইচ.এস.সি ভোকেশনাল দিয়েছে তাদেরও যদি পয়েন্ট থাকে তবে তারাও প্রায় সব পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স নিতে পারতেছে। তাহলে এখানে ডিপ্লোমার ছাত্ররা কি দোষ করেছে যে তাদেরকে ডুয়েট ব্যতিত অন্য কোন ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন পরীক্ষা দেওয়ারই সুযোগ দেওয়া হয় না ??
যাই হোক অনেক কথা বলে ফেললাম ,এখন যে ভাইয়ারা এবার এস.এস.সি দিয়েছেন তারা আশা করি এই পোস্ট থেকে বর্তমান
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×