চলতি বছর রমজান মাসের কোন এক দিন। অফিসে আমরা কলিগেরা ফলফাকড়া দিযে সবেমাত্র ইফতার শুরু করেছি।কিছুক্ষণ পর আমার পাশের টেবিলের মহসিন ভাই কলা নিয়ে আপত্তি তুললেন। বললেন, ‘এ অন্যায়। এ অসম বন্টন মেনে নেওয়া যায় না।’ অন্যায়টা কি? তাঁর টেবিলে যে কলা দেওয়া হয়েছে সেটার নাকি আগা মোট গোড়া চিকন!!
সঙ্গে সঙ্গে অপর কলিগ রোবায়েত ভাই ফাল দিয়ে উঠলেন। কি সমস্যা? তাঁর কলা নাকি লৌহদণ্ডের ন্যায় শক্ত, মানে কাঁচা। এর পরপরই অপর কলিগ সালাম ভাই রাগান্বিত কন্ঠে অভিযোগ করলেন, তাঁর কলা নাকি ছোট। আমি তাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে বললাম, সালাম ভাই ছোট হলেই যে জিনিস খারাপ হয় তা কিন্তু নয়। সাইজ ডাজেন্ট ম্যাটার। আরে রাখো বলে তিনি আমার আশ্বাসবাণী ধুলিসাত করে দিলেন এবং তাকে দেওয়া কলাকে তিনি তাঁর মাত্র তিন বছরের ছেলের গোপনাঙ্গের সঙ্গে তুলনা করে বসলেন। এতো ছোটো নাকি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
পাশের সাখাওয়াত ভাই, অতি ভদ্রলোক। কোনো অভাব অভিযোগ করার লোক তিনি নন। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তাঁর কলা ওকে আছে কিনা? গম্ভীর মুখে তিনি বললেন, তাঁর কলা বেশি পাকা। এবং সিফিলিস ও গণোরিয়ার মতো ছোয়াচেঁ রোগে আক্রান্ত। তারপরও তিনি মেনে নিলেন এবং প্রশ্ন করলেন, এখন আর ভাল জিনিস পাইবা কই?
অফিসের ইফতারি ক্রয় ও বন্টনের দায়িত্বে রয়েছে আমারই বন্ধু কাম কলিগ সাবের হোসেন। ও আমার অপর পাশের ডেস্কে বসে। আমি ওকে ডেকে আনলাম এবং অভিযোগগুলোর ফিরিস্তি দিয়ে রোগাক্রান্ত কলার জন্য তাকে কিঞ্ছিত ভতসনা করলাম। কলা কেনার সময় ফ্রেশ কলা দেখে কেনার উপদেশ দিলাম।
আবুল বললো, দেশের কোন জিনিস কি ফ্রেশ আছে? ফ্রেশ কলা কবে দেশ থেকে উধাও হয়েছে।
আবুলের কথার সমর্ন দিয়ে মহসিন ভাই আফসোসের সঙ্গে বললেন, শালার দেশের কলাটাও আজ ধ্বজভঙ্গ। এই ধ্বজভঙ্গ কলা দিয়ে আর কত্দিন চলবে?
প্রশ্নের উত্তর নেই। কিছুক্ষণ পর সবাই যার যার কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।............