নিতান্ত ব্যক্তিগত এক দূভার্গজনক অবস্থার কারণে দেশের কনটেমপরারী রাজনৈতিক তৎপড়তা সন্বন্ধে আমি অজ্ঞ থেকে যাই। ব্লগের ঐতিহ্য বজায় রেখে নিয়মিত প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ ও রাজাকার প্রসঙ্গের পোস্টগুলোর শিরোনাম প্রতিনিয়ত চোখে পড়ছিল। এর সাথে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ইস্যুগুলো বোঝার চেষ্টা করতাম। ব্লগকে প্লাটফর্ম করে কোন তৎপড়তায় আমি আশাব্যঞ্জক কিছু দেখি না নানাবিধ কারণে। ফলশ্রুত এখানে সংগৃহিত তথ্য অনেক বেশী আমার নিজস্ব রাজনৈতিক দর্শন সংগঠনের কাজে লাগে, ব্লগীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষণের চেয়ে। ব্যক্তিগত দূর্ভাগ্যজনক অধ্যায়ের দীর্ঘমেয়াদীতা লক্ষ্য করে এখন উহাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। মনে হচ্ছে রাজনৈতিক মনস্কতা হারাতে দেয়া ঠিক নয়।
বিশ্বের ক্ষমতাবানদের হাতে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ, পাকিস্থানের রাজনীতির দিকে পাশ্চাত্যের গভীর আগ্রহ ও কর্মতৎপড়তা থাকার অন্যতম দুই কারণ
১. বাণিজ্য যা আবার দুই পদ্ধতিতে; এক, সাম্রাজ্যবাদীদের বিনিয়োগ লব্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে উৎপাদিত পন্য; দুই, তাদের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও পন্যের জন্য উপমহাদেশীয় বাজার; এবং
২. উপমহাদেশীয় ইমিগ্রেন্টস যাদের আবার দুই ধরণের অস্তিত্বের সাথে পাশ্চাত্যের নিরাপত্তা ও স্কিলড ওয়ার্কার সেক্টর জড়িত; এক, ইমিগ্রেন্টসদের সাথে উপমহাদেশিয় লিংকেজের সহায়তায় স্পর্শকাতর তথ্য ও প্রযুক্তি পাচার; দুই, উপমাহদেশীয় বিশাল রেডি স্কিলড ওয়ার্কারের প্রয়োজনীয়তা পাশ্চাত্যের ভুখন্ডে।
এই উপমহাদেশের ঔপনিবেশিক লিগ্যাসী এত বেশী প্রচন্ড যে বেশীরভাগ জনগণ পাশ্চাত্যের মত হয়ে ওঠার একটা সাংস্কৃতিক তাড়না বোধ করে। শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিকতা থেকে শুরু করে সর্বত্রই পাশ্চাত্যীয়তে মুক্তির নিশ্বাস ফেলে। তো আমেরিকার জন্য রেডিমেড একটা গোষ্ঠী সবসময়েই রয়েছে। যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে সে পরোক্ষ একটা রাজনৈতিক প্রভাবক হিশেবে থেকে যায়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাহাই হোক না কেন সবচেয়ে বড় বাস্তবতা হচ্ছে তা কখনই পাশ্চাত্যবিরোধী হয় নি। যে সরকার এসেছে সে সরকার পরিবর্তনে দেশের মানুষ আশা দেখেছে বটে কিন্তু তা সবচেয়ে বেশী স্বস্তি দিয়েছে সাম্রাজ্যবাদীদের। প্রচলিত রাজনৈতিক যে মেরুকরণই বর্তমানে থাকুন বা না থাকুক এই রাজনীতি দেশের মানুষকে বৈদেশিক স্বার্থমুক্ত একটা নিশ্চিত অর্থনীতি প্রদান করতে সক্ষম হবে না।
রাজনীতির আমূল সংস্কার চাই দুই বেসলাইনের উপরে; একঃ ধর্মনিরেপক্ষতা; দুইঃ সমাজতন্ত্র।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:৩২