বিএনপি সংসদের দীর্ঘদিনের প্রমিত ভাষা ব্যবহারের প্রাগৈতিহাসিক শ্লীল-অশ্লীল ধারণা ভেঙে দিয়েছে। চুদুরবুদুর, চুৎমারানী - এইসব শব্দসমূহ সংসদে সাহসের সাথে আগে কেউ উচ্চারণ করে নি। সাধুবাদ জানাই এই চর্চাকে, অপেক্ষায় আছি শুনতে কোন এক এমপি তার প্রতিপক্ষকে বলবেন....'তুই একটা চুৎমারানি', সত্যি কথা বলার জায়গা তো সংসদই, যতই শ্লীল-বিরোধী হোক না কেনো।
আশা করি সমস্ত সংসদরা এভাবেই তাদের সঠিক অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য সঠিক শব্দটি ব্যবহার করবেন। কারণ সাধারণ মানুষ যে গালি দিতে অভ্যস্ত তা যদি সংসদেও না দেয়া যায় সঠিক রিপ্রেজেনটেশন হয় না। আপনাদের ভোট দিয়ে আমরাই সংসদে পাঠিয়েছি - সুতরাং আপনাদের মুখের জবান হবে আমাদের মতই। শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে গিয়ে ভাষা, আচরণের বিধিনিষেধে সংসদকে ধর্মাগার বানালে সমালোচনা করবে কে? 'আপনি এততোগুলো পচা' এইসব বলার দিন গত হয়েছে, মনে মনে আসলে যে গালিটা দেন সেটা উচ্চারণ করাই দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর।
গালি বিষয়ে ধর্মের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে একটা সামাজিক ধারণা পরিবারসমূহে গ্রোথ্থিত থাকলেও আমাদের অনলাইন এক্সপেরিয়েন্স ভিন্ন। আমরা দেখেছি ধর্মকে ডিফেন্ড করতে বা সমুন্নত রাখতে ধার্মিক নামধারী মানুষদের গালির তুফান। দেখে দেখে একসময় মনে হতো ধর্মবিরোধীদের জগতের নিকৃষ্টতম গালি না দিলে সম্ভবত ধর্ম ভেঙেচুড়ে গুড়ো গুড়ো হয়ে যাবে। ধর্মকে সুরক্ষায় জাতিয়তাবাদীদের গালি প্রয়োগ ও ব্যবহার যার জন্য ভিন্ন কিছু নয়।
ধর্ম-সমালোচকরা কেবল গালি ব্যবহারের অধিকার সংরক্ষণ করবেন, কবি সাহিত্যিকদের আমরা পুজো করবো, তাদের ব্যবহৃত গালিকেও পবিত্রজ্ঞানে আবৃত্তি করবো - আর সেটা মসজিদ, মন্দির বা সংসদে ব্যবহারের অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে এই প্রচলিত কাঠামো থেকে চুদুরবুদুর ও চুৎমারানী বড় ধরণের অগ্রযাত্রা।