একজন কৃষকের বাড়িতে গেলাম। ভাত খেলাম। মুরগী দিয়ে। বেগুন আর চাপিলা মাছ ভাজি। একটা ঘর কাম বেড রুম কাম ড্রয়িং রুম কাম ডাইনিং রুমের ভেতরে বিশাল একটা তক্তাপোষের সাইডে থাকা টেবিলে প্লেট রেখে। চেয়ারে বসে। কৃষক খেলো মাটির ফ্লোরে ফ্রি'তে। নিজের পুকুরের মাছ, নিজের ক্ষেতের চাল আর সবজি খাওয়ালো কৃষক। সারা বছরের ধান তার গোলায় ভরা, সারা বছরের মাছে তার পুকুর পূর্ণ। প্রকৃতি ঠাসা তাদের আহারে আর ব্যবহারে। সারাদিন তারা হাঁটে খালি পায়ে, আর সন্ধ্যা হলে পা ধুয়ে স্যান্ডেল পরে। তাদের শিক্ষা নাই তাই তাদের কোনো ধর্মীয় গোঁড়ামি নাই। তাহাদের রাজনৈতিক জ্ঞান নাই, তাই তারা পছন্দের মানুষকেই নির্ভয়ে ভোট দেয়। তারা মাটির মানুষ...আর আমরা সিমেন্টের।
আমাদের শহুরে জীবন ঐ কৃষকের দানের উপরে নির্ভরশীল। তাদের যা উদ্বৃত্ত থাকে সেসব নিয়ে আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তাও আবার যখন আমাদের প্লেটে আসে তার আগে মাছে মেশে বিষ, চালে মেশে সিমেন্ট। প্রকৃতি আমাদের কাছে আর আসে না। মাঝেমাঝে আমরা প্রকৃতির পা ছুঁয়ে আসি মাত্র।
শহরে যা আমরা তৈরি করেছি তার বেশীরভাগই ঐ কৃষকের প্রয়োজন হয়নি। তার বিনোদনের উপাদান তার প্রকৃতিতে, মাটির ভাষায়, মাটির গানে....তার সুরে। যা সে নিজেই তৈরি করে। সবাই মিলে তৈরি করে, জেনো আনন্দের যৌথখামার!