হাদা রামের সাথে পরিচয় আমার অনেকদিনের। বাবামায়ের কাছে থাকার সময় তার নাম হাদিউজ্জামান থাকলেও বন্ধুদের মাঝে আবর্তণের কারণে সে এখন হাদারামেই বেশি পরিচিত।
এর মাঝে অবশ্য যৌক্তিক কিছু কারণও আছে। হাদির দৃঢ় বিশ্বাস, বন্ধুত্ব বিষয়টা সবসময়ি সমানুপাতিক। এটাকে সময়ের সাথে আবার পরিবর্তণ হতে হবে কেন। পিথাগোরাস সে কবে তার সমানুপাতিকটির জ্যামিতি বানিয়ে গিয়েছেন তা কি পরিবর্তণ হয়েছে কখনো। তা তো এখনো ২৩ নাম্বার উপপাদ্য হিসেবেই বইয়ে বিরাজ করেই চলেছে। কিন্তু বন্ধুত্বের সমানুপাত কেন পরিবর্তিত হয়ে বিচরণ করবে..
এমন লজিকগুলো বুঝিয়ে বুঝিয়ে নিজের নাম ‘ হাদারাম’ টি বন্ধুদের কাছ থেকে এক রকম জোর করেই চেয়ে নিয়েছে।
ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে আম্মুর কাছে জানতে পারলাম হাদিউজ্জামান নাকি আমার খোজ করেছে কয়েকবার।
আমি ভাবলাম কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে হয়তো। এর আগেও তো একবার কোন এক বন্ধু ওর ফেসবুকে চুড়ি করে ঢুকে দুষ্টামি করে লিখে দিয়েছিল “ আমি গরু”।
আমি ওর আইডি ঠিক করে দেয়ায় হয়তো আত্ন-বিশ্বাসটা কিছুটা অপ্রয়োজনীয় দৃঢ় হয়ে উঠেছে।
হাদিদের বাড়ির মেইন গেটের সাথে লাগানো দরজাটা হাত দিতেই খুলে গেল। বাহির থেকেই দেখা যাচ্ছে হাদি উঠোনে বসে আছে। মুখটা মলিন। আমাকে দেখে চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বলল বস। দোস্ত, আজ আমার চোখ খুলে গেছে রে। সালা পিথাগোরাসের আর বন্ধুত্বের পৌনপৌনিকতায় অনেক পার্থক্য। আমি পিথাগোরাস ভালো বুঝতাম দেখে মনে হয়েছিল আমার বন্ধুত্বের ব্যাপারে আকা জ্যামিতিটাও সঠিক। কিন্তু আজ আমার চোখ কান, সাথে হাতও খুলে গিয়েছে। আর নেকামো করে কাজ নেই। চল লুডু খেলি।
হাদির দ্রুত পরিবর্তণ হতে পারার ক্ষমতাটার জন্য ওকে আমার খুব ভালো লাগে। ছেলেটা হাদি হলেও ভালো।
কিন্তু কোন সে বক্র রেখা হাদির এত দিনের লালিত পৌনপৌনিকতার জ্যামিতি কে সসম্মানে ভুল প্রমাণিত করলো তা কিন্তু সেদিন সে বলে নি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৭