লিখবো কিনা পদ্যপাদ্য ছড়ায় ছড়াছড়ি,
বদরবাবার বদরগঞ্জ সেথায় বসত করি।
বাংলাদেশের উত্তরে সেই যমুনেশ্বরী পাড়ে,
কাঁচা পাকা ঘর যেখানে নদীর ধারে ধারে।
জলের বরে জলুবর ঢাকা অন্ধকার,
তিনটি নদীর জলের ধারা মিলেই একাকার।
রং হয়েছে ‘অং’ আমার রংপুরেতে এসে,
তিস্তা ঘাঘট কত নদীর জলের ধারা মেশে।
নীলফামারীর নীল মেখেছে আকাশ সারা গায়,
তাই দেখতে তারার মেয়ে লাজুক চোখে চায়।
ফুলের বাড়ী পেরিয়ে এবার দিনেই দিনাজপুরে,
রামসাগরের পাড়ে না হয় এসো এবার ঘুরে।
কান্তজির মঠ মন্দির দেখার মত বেশ,
গড় পাঁচটি পঞ্চগড়ে দেখার কোথা শেষ।
ঠাকুরগাঁয়ে না থাক ঠাকুর একটু ক্ষতি কই,
খোলা চোখে দেখতে পাবে দুরের পাহাড় ওই।
বিরামপুরে বিরাম নিয়ে নওগাঁ পাহাড়পুর,
পথের উপর দাঁড়িয়ে আছে ওইতো জয়পুর।
করতোয়াতে কর না দিয়ে কেউ যেওনা চলে,
বিরল হলো তুলনাহীন সব লোকেরাই বলে।
ভুলেই গেছি ওমা আমি কেমন ভুলা মন !
তেঁতুলিয়ায় ছাড়লে বুঝি হাজার তেঁতুল বন।
ইদ্রাকপুরের নাম শুনেছ? আজকে ঘোড়া ঘাট,
মুছে গেছে দূর অতীতের সকল কারুপাট।
নবাবগঞ্জ নয় লবগঞ্জ রামের ছেলের স্মৃতি,
কুশদহ সে কুশের নামে হয়নি হারা রীতি।
লব-কুশ সীতার সাথে পঞ্চবটি বনে,
খেলতো খেলা দুটি ভা’য়ে হেথা আপন মনে।
রত্নাকর ভীষণ ডাকাত দস্যু ছিল বটে,
বিধির মাহামুনি লিখন ললাটে।
এসো এবার পলাশবাড়ী করতোয়া দেই পাড়ি,
হাঁটুপানির জলের ধারা নয়তো গভীর খাড়ি।
চৌধুরাণীর নাম শুনে আজ জাগছে মনের পটে,
ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের সূত্র হেথায় ঘটে।
ভাবানী পাঠক গোঁসাইজী আর দেবী চৌধুরাণী,
স্বাধীনতার অমর নায়ক আমার টা কি জানি।
পথেই পড়ে পীরগাছা সে চারণ কবির দেশ,
ছলিমুল্লাহ হারিয়ে গেছেন নেইকো কিছু রেশ।
চলতে গিয়ে বমনডাঙ্গা পথেই পড়ে বুঝি,
মুক্তামানিক লাল্মনিতে এসো এবার খুঁজি।
সোনার স্বদেশ! দেশজুড়ে হায় চিল শকুনের হানা,
দাঁড়িয়ে কোথা আমারা সবাই, নেইতো মোদের জানা।
আমরা কেন আজকে নিথর দাওগো ঝাড়া গা’,
স্বৈর শাসন (!) সোনার দেশে তাকেই বল-না।
মানুষ বটে আমারা সবাই বাঁচার অধিকারে,
ভিত নাড়িয়ে দাওগো তাদের যারাই শোষণ করে।
সারা দেশে একাত্তুরের গন্ধ আছে গাঁড়া’,
ডাকাত যারা ডাকাত তারা তাড়া তাদের তাড়া।
১২, ১২, ১৯৮৬
আবুল কাশেম সরকা
ছবি- লাবিব ফয়সাল
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫