somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদের আধুনিক রোমান্টিক কমেডি সামাজিক অ্যাকশন ছবি- "চেপে যাও-The acid rain"

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফ্লোরা মেরিকা থেকে আসছে। বাড়িতে হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার। পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিশিষ্ট শিল্পপতি চৌধুরী সাহেব তার লাল স্যুট প্যান্ট পরে অপেক্ষা করছেন। মা মরা মেয়ে লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরছে। বাড়ির কেয়ারটেকার কাম জোকার হাসমত ব্যান্ড পার্টির আয়োজন করল। এর পরের দৃশ্যে ফ্লোরা গাড়ি থেকে নামল। সাথে সাথে গাড়িটার মাটির সাথে প্রায় দেবে যাওয়া চাকাগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এল।

মেরিকা ফেরত ফ্লোরার ১৬তম জন্মদিন উৎসব। বিশাল ঘরের মাঝখানে একটা কাঠের বিকট দর্শন পিয়ানো রাখা। সাদা একটা ফ্রক পরে ফ্লোরা তার গোবদা গোবদা আঙুল দিয়ে পিয়ানো বাজাচ্ছে আর গান গাচ্ছে।
চৌধুরী সাহেবের বন্ধু আরেক ধনী খান সাহেব চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "১২ বছর আগেও তোমার মেয়ের ১৬তম জন্মদিন করলা। এ মেয়ের বয়স কি ফিক্সড্‌?"
চৌধুরী সাহেব বললেন, "চেপে যাও। নায়িকা বলে কথা!"

ফ্লোরার গাড়ির জন্য একজন যুবক ড্রাইভার নিয়োগ করা হল। ছেলেটির নাম মকবুল। সে সৎ, পরিশ্রমী, ক্লাসে ফার্স্ট, গান গাইতে ও নাচতে পারে, পিটি করতে পারে, গুন্ডাদের পেটাতে জানে। তার সৎ পুলিশ অফিসার বাবাকে দেশের কুখ্যাত স্মাগলার খুন করেছে।

ফ্লোরার শুরুতে ড্রাইভারকে পছন্দ হলোনা। সে মেরিকান কাউকে ড্রাইভার হিসেবে চেয়েছিল। কারণ সে জানে এই হাবা ড্রাইভারের সাথেই তার নিয়তি লেখা আছে। গাড়ি শালবনের দিকে যাচ্ছে (কেন যাচ্ছে কেউ জানেনা)। ফ্লোরার পাশে হাসমত বসে আছে। ফ্লোরা মকবুলকে জিজ্ঞেস করল," এ্যাই তুমি ফর্মুলা ওয়ান খেলনা কেন?"
"জি না মেমসাহেব। আমরা গরীব, সৎ, মদ খাইনা। ঐ খেলায় জিতলে আনন্দে শ্যাম্পেন ছেটাতে হয়। আমি তা করতে পারিনা।"
ফ্লোরার ইগোতে লাগল, "এই হাসমত আমাকে চাবুক দাও। ওকে পেটাব। একটু পরেই আমি ছ্যাঁকা দিলে মদ খেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে গান গাইবে আর এখন ঢং করে।"

ফ্লোরা মধুপুর বনে তার সাখীদের নিয়ে ঘুরছে। এমন সময় খান সাহেবের ছেলে ডন আর তার চ্যালারা এসে তাদের উত্যক্ত করা শুরু করল। ফ্লোরা ডনকে দিল এক থাপ্পড়। এ জ্বালা সইতে না পেরে ডন আর তার ছয়জন বন্ধু কিডন্যাপের উদ্দেশ্যে ফ্লোরাকে ঠেলেঠুলে গাড়িতে ঢোকানোর চেষ্টা করল। ওজনের ভারে ন্যুজ এক চ্যালা চিঁ চিঁ করে বলল," আপা আপনে যে জিমে জিম করেন হেইডার ঠিকানা দেন...আমি নিজে গিয়া ওদের নামে মামলা করুম......যা ট্যাকা লাগব সব আমার।"
এমন সময় হাসমত মকবুলকে জানানোর সাথে সাথে কোথা থেকে যেন সাঁই করে মকবুল উড়ে এল। তারপর এক লাথি দিয়ে সাতজনকে কুপোকাত করে দিল। এরপর থেকে ফ্লোরা আর মকবুল প্রায়ই ফুল বাগানে, বন বাদাড়ে, কক্সবাজারে গান করে।

মকবুলের বাড়াবাড়ি সহ্য করতে না পেরে ডন তার মাকে আর ফ্লোরাকে কিডন্যাপ করে খান সাহেবের আস্তানায় নিয়ে বেঁধে রাখল। খান সাহেবকে দেখেই মা চিনে ফেলল এই তার স্বামীর খুনী। আবারো হাসমত মকবুলকে জানানোর সাথে সাথে সে সাঁই করে উড়ে এসে আস্তানার কাঁচের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকল। রাইফেল হাতে আস্তানার একজন পাহারাদার বলল, "ভাই কাঁচ ভাঙ্গার কি দরকার ছিল? দরজাতো খোলাই ছিল।"
পাশের জন চোখ টিপে বলল, "চেপে যাও। নায়ক বলে কথা!"

অনেক্ষন মারপিট হল। মকবুল একাই সবাইকে তুলোধুনো করতে লাগল। ফ্লোরার বাবা মেয়েকে বাঁচাতে ছুটে এলেন। সেই মুহূর্তে খান সাহেব মকবুলের দিকে তাক করে গুলি ছুঁড়ল। চৌধুরী সাহেব সেটা দেখে ঝাঁপ দিতে না চাইলেও পরিচালক তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়ায় তিনি ঝাঁপ দিলেন। গুলিটা তার বুকে লাগল। হাসমত তখন পুলিশ নিয়ে ঢুকল। চিকনা এক পুলিশ বলল, "আইন নিজের হাতে নিলে ১৮ ঘা, আর পুলিশের হাতে দিলে ৩৬ ঘা।"

শেষ দৃশ্য:
বাহিরে অ্যাসিড রেইন হচ্ছে।
চৌধুরী সাহেব মেয়ের কোলে মাথা রেখে পড়ে আছেন। ম্যাজেন্টা কালারের রক্তে আশপাশ ভেসে গেছে। ফ্লোরা বলল, "পাপ্পা মরার আগে সব কথা কম্প্লিট করতে পারবা। নো প্রব্‌!"
বাবা বলল, "মকবুল তোমার হাতে আমি আমার গাড়ি বাড়ি আর মেয়েকে তুলে দিলাম। প্রতি বছরই ওর ১৬ তম জন্মদিন পালন করবা। এর যেন ব্যতিক্রম না হয়।"
হাসমত কাঁদতে কাঁদতে বলল, "স্যার সব তো ঐ ড্রাইভার পাইল। আমি কি কিছুই পামুনা?"
চৌধুরী সাহেব বললেন," একটাও নিজের জিনিস না, সেজন্য ঐ বলদটারে দিতে খারাপ লাগেনাই। মকবুলকে সব মুখ মুখে দিসি, তবে তোকে আমার উইলটা দিয়ে গেলাম"
এ কথা বলেই চৌধুরী সাহেব ইহলোক ত্যাগ করলেন। মকবুল ফ্লোরা আর মকবুলের মা একসাথে বলে উঠলো, "এইটা কি হইল?"
হাসমত হাসি দিয়ে বলল, "চেপে যাও। বাংলা সিনেমার আধুনিকায়ন বলে কথা।"





২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×