somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেজর জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা আব্বুসহ সকলকে অনুপ্রাণিত করে: তাজউদ্দীন কন্যা শারমিন

২৬ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‪বাংলাদেশের‬ মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিব নগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ বলেছেন, আজকে স্কুল কারিকুলাম বা পাঠ্যসূচিগুলো দেখলে, দেখা যায় সেখানে একনায়কতন্ত্রের সবগুলো বীজ প্রোথিত হয়ে যাচ্ছে। জনগণের মতামতকে সে ক্ষেত্রে কোন গুরুত্বই দেয়া হচ্ছে না।
গত ১৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে ‘তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা’ শীর্ষক তার লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শারমিন আহমদ বলেন, আমার বাবা সম্পর্কে কিছু লেখার সুযোগটি হয়তো আসতো না, যদি আমার বাবা তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক মানস থেকে একেবারেই অদৃশ্য হয়ে না যেতেন। কি করে এটা সম্ভব, স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন প্রাণ পুরুষ যার নাম একটিবারও শোনা যায় না।
তিনি বলেন, আমি যখন গভীর হতাশার সাথে আজকের পেপারগুলো খুলে দেখেছি, দেখা হলো যারা মুজিব নগর দিবস পালন করেছেন তারা একটিবারও উচ্চারণ করেনি এই মুজিবনগরের স্রষ্টা, সংগঠক ও চিন্তাবিদ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশের অভূদ্যয় হতো কঠিন ব্যাপার।
শারমিন আহমদ বলেন, এটা কি করে হতে পারে ইতিহাসকে আমরা বিচ্ছিন্নভাবে দেখবো? আমরা ইতিহাসকে খন্ড বিখন্ডভাবে যা মনে পছন্দ তাদের সমালোচনা করবো, এটাতো আসলে একটা জাতির জন্য বিরাট অধ:পতন।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি তরুণদের সাথে আমার চিন্তার একটা সেতুবন্ধন করতে চাচ্ছি। কোন জাতি, দেশ স্বাধীনতার জন্য এতো রক্ত দেয়নি আবার কোন জাতি বা দেশ এমনভাবে তার ঐতিহাসিক স্বাধীনতা নিয়ে এত বিভ্রান্তিতেও ভোগেনি।
শারমিন আহমেদ বলেন, যেটা সত্য সেটা শোনতে হবে, জানতে হবে। ভালো না লাগলেও তা শোনতে হবে।
‪#‎সরকারের‬ কর্মকান্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখানে আমার চোখে পড়েছে ১০০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু, ৫০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু, ১০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু, ৫০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু, ২০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু, ১ টাকার টাকার নোটে বঙ্গবন্ধু। আমরা এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে আবদ্ধ করে একটা স্বৈরতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ডেভোলাপ করতে সহযোগিতা করছি। তিনিতো এটা চাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ১ ডলার বিলে ফাদার অব দ্য কান্ট্রির প্রতিকৃতি, ১০০ ডলার বিলে বেজ্ঞামিন ফ্রাঙ্কলিন এর ছবি। ফ্রাঙ্কলিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন না তিনি ছিলেন ফিলোসফার। কার ছবি কোথায় যাবে, কতখানি যাবে, কিভাবে যাবে এটা দেশটির পারিবারিক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আসেনি, ব্যক্তি সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আসেনি, এসেছে কংগ্রেসনাল ডিসিশন মেইকিং এর মাধ্যমে। এসেছ গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে, আলাপের মাধ্যমে আলোচনার মাধ্যমে। শারমিন বলেন, আমরা আজ কোথায় যাচ্ছি।
‘তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা’ বইয়ে স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিচারণ করে শারমিন আহমদ লিখেছেন, ‘বড় কোনও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আব্বুর উপদেশ গ্রহণে মুজিব কাকু এর আগে দ্বিধা করেননি। আব্বুর সে কারণে বিশ্বাস ছিল যে, ইতিহাসের এই যুগসন্ধিক্ষণে মুজিব কাকু কথা রাখবেন। মুজিব কাকু, আব্বুর সাথেই যাবেন। অথচ শেষ মুহূর্তে মুজিব কাকু অনড় রয়ে গেলেন।
তিনি আব্বুকে বললেন, বাড়ি গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকো, পরশু দিন (২৭শে মার্চ) হরতাল ডেকেছি। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্বু স্বাধীনতার ঘোষণা লিখে নিয়ে এসেছিলেন এবং টেপ রেকর্ডারও নিয়ে এসেছিলেন। টেপে বিবৃতি দিতে বা স্বাধীনতার ঘোষণায় স্বাক্ষর প্রদানে মুজিব কাকু অস্বীকৃতি জানান। কথা ছিল যে, মুজিব কাকুর স্বাক্ষরকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (বর্তমানে শেরাটন) অবস্থিত বিদেশী সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে এবং তাঁরা গিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা করবেন।
জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা প্রসঙ্গে শারমিন আহমদ বইটিতে লিখেছেন, শহর ছেড়ে যাওয়ার পথে পদ্মার তীরবর্তী গ্রাম আগারগাঁয়ে শুকুর মিয়া নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মীর বাড়িতে তারা আশ্রয় নেন। এই বাড়ির সকলেই তাঁতের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেখানে তারা শুনতে পান মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সমপ্রচারিত এই ঘোষণাটি আব্বুসহ সামরিক ও বেসামরিক সকল বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করে বলে বইটিতে উল্লেখ করেন শারমিন।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×