আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি আমরা ভিনদেশী সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। এরফলে আমরা আমাদের সংস্কৃতির পারস্পরিক তুলনা করতে পারবো। এই পর্বে আমরা আজকে জানবো স্পেনের ষাঁড়ের লড়াই সম্পর্কেঃ
ষাঁড়ের লড়াই (Bull Fight): স্পেনে ষাঁড়ের লড়াই 'কোরিদা' নামে পরিচিত। স্পেনের মাদ্রিদ আর কাতোলোনিয়ায় সপ্তদশ শতাব্দী থেকে চলে আসছে মানুষের সাথে ষাঁড়ের লড়াই। যে ব্যক্তি ষাঁড়ের সাথে লড়াই করে তাকে 'ম্যাটাডোর' বলা হয়।
জীবন বাজি রেখে এই খেলা শুধু খেলা নয় এ এক শিল্প। অতি সম্প্রতি স্পেন 'ম্যাটাডোর' দের শিল্পীর মর্যাদা দিয়েছে। শক্তসমর্থ চেহারার যুবক বিশেষ চামড়ার পোশাক পরে, মাথায় উঁচু টুপি চড়িয়ে, হাতে একটা লাল কাপড় আর সরু লিকলিকে স্টিলেটো তলোয়ার নিয়ে দারুণ স্বাস্থ্যবান তেজি খ্যাপা ষাঁড়ের মোকাবিলা করছে৷ তাদের ঘিরে রয়েছে গ্যালারি ভর্তি দর্শক৷ চরম উত্তেজনা, অসম্ভব ক্ষিপ্রতা, দারুণ পৌরুষ, একটু অসাবধান হলেই ষাঁড়ের শিং-এর গুঁতোয়, নাহলে তার বিশাল শরীরের চাপে মৃত্যুর আশঙ্কা, সব মিলিয়ে এ এক দুরন্ত বীর্য, সাহস আর পুরুষালি খেলা৷ যে খেলা শেষ হয় ষাঁড়ের মৃত্যুতে৷
স্পেনের মাদ্রিদে প্রতি বছর মার্চ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই খেলা হয়ে থাকে। প্রতি রবিবার 'মাদ্রিদ দি টুরস প্লাজায়' এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। টিকেটের মূল্য ৩ ইউরো থেকে ১০০ ইউরো পর্যন্ত।
এই খেলায় ম্যাটাডোর যদি ভালো পারফর্ম করতে পারে তাহলে সে ষাঁড়ের একটি কান পুরস্কার হিসেবে পেতে পারে। যদি অনেক ভালো করে তাহলে তাহলে দুইটি কান পেতে পারে পুরস্কার হিসেবে।
খুব রেয়ারলি , দর্শক যদি মনে করে যে ষাঁড় টি সাহসি ফাইট দিয়েছে তাহলে ষাঁড়টার জান বাঁচানো হবে এবং ঐ ষাঁড় টা সারা জীবন হিরো স্টেটাস পাবে।
খেলার পরে আবার মারা যাওয়া ষাঁড়ের মাংশ বিক্রি হয় চড়া দামে।এবং যেই টুকরো মাংসে তারোয়ালের ছিদ্র থাকবে সেটা বিক্রি হবে সবচে বেশি দামে।
স্পেনের এই ঐতিহ্যবাহী খেলা দেখতে চলে যান হলিউড- বলিউড এর তারকারা। কিন্তু পশু প্রেমিক সংগঠন বরাবর এই খেলার বিরোধিতা করে আসছে। তারা এই নিষ্ঠুর খেলা বন্ধের দাবী জানান। তারা তাদের দাবীর পক্ষে ১৮০০০০ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। অবশেষে কাতোলোনিয়ায় এই খেলা নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই খেলা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে সমর্থকদের দাবী এই খেলা স্পেনের একটি ঐতিহ্য এবং একটি শিল্প। এই খেলাকে সংরক্ষণ জরুরী।
এছাড়াও আমাদের ফেইসবুক পেইজে গিয়েও ভিনদেশের লোকসংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারেন-
লোকসংস্কৃতি রক্ষা করি (লোরক) সোসাইটি