somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিসসা শোনার আসরঃ পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জামাল ও কামাল নামে এক গাঁয়ে দুই ভাই ছিল। জামাল ছিল বড় ভাই এবং কামাল ছিল ছোট ভাই। কামাল তার বড় ভাইয়ের অনেক ভক্ত ছিল এবং ভাইয়ের বিরুদ্ধে কখনো যেত না। তাদের বাবা কিছুদিন হল গত হয়েছে। মৃত্যুকালে তাদের বাবা একটি খেজুর গাছ, একটি গাই গরু ও একটি কাঁথা রেখে গিয়েছিল। পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করতে হবে কিন্তু এগুলো কিভাবে ভাগ হবে তা নিয়ে সমস্যা বেধে গেল। জামাল চাইছিল সমস্ত সম্পত্তি তার করতে। কিভাবে কামালকে সম্পত্তি থেকে বঞ্ছিত করা যায় তা নিয়ে সে ফন্দি আটলো। অবশেষে সে একটি বুদ্ধি বের করলো যার ফলে কামাল সম্পত্তি পেলেও তার কোন উপকারে আসেনি। যেহেতু কামাল তার বড় ভাইকে খুব মান্যকরে এবং সে খুব সহজ সরল তাই সে কোন প্রতিবাদ করেনি। তারা সম্পত্তি এভাবে ভাগ করেছিল-

খেজুর গাছঃ গাছের উপরের অংশ জামালের এবং গাছের নিচের অংশ কামালের
গাই গরুঃ গরুর সামনের অংশ কামালের এবং পিছনের অংশ জামালের
কাঁথাঃ দিনেরবেলা কামালের এবং রাতের বেলা জামালের

এভাবে চলতে থাকলো। কামাল প্রতিদিন তার খেজুর গাছের নিচের অংশে পানি দিত এবং নিচের আগাছা পরিষ্কার করতো আর জামাল খেজুর গাছের উপরের অংশ খেজুরের রস সংগ্রহ করত। সে কামালকে একটুও রস দিত না। কামাল প্রতিদিন গাই গরুর সামনের অংশ পরিচর্যা করত। যেহেতু গরুর সামনে মুখ থাকে সেহেতু সে ঘাস কেটে প্রতিদিন খাওয়াত। আর গরুর পিছনে দুধের ওলান থাকে যা জামাল সংগ্রহ করে বিক্রি করত। শীতের রাতে জামাল কাথা ব্যবহার করত আর কামাল কষ্টে ঘুমাত, দিনের বেলাতো আর কাঁথার দরকার নেই। এভাবে কামাল দিন চলতে থাকলো সে বুঝতে পারলেও কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি।

একদিন মনের দুঃখে সে কাঁদতে কাঁদতে বাসা থেকে চলে গেল। পথে দেখা হল এক লোকের সাথে। সেই লোক কামালের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো সে কেন কাঁদছে? কামাল তার সব ঘটনা খুলে বললো। পরে সেই লোকটি তাকে একটি বুদ্ধি দিল। সেই লোকটি বললো তুমি খেজুর গাছের নিচের অংশ কেটে ফেল, আর তোমার ভাই যখন গরুর পিছন থেকে দুধ দোহাতে আসবে তখন তুমি সামনে থেকে গরুর মাথায় বাড়ি দিতে থাকবে আর দিনেরবেলা কাথা তুমি পানিতে ভিজিয়ে রাখবে। যদি তোমার বড় ভাই জিজ্ঞেস করে কেন তুমি এইসব করছো? তখন তুমি বলবে আমার ভাগের অংশ আমার যা মনে চায় তা করবো। লোকটির বুদ্ধি কামালের পছন্দ হল। সে বাড়ি ফিরে গেল। তার বড় ভাই যখন খেজুর গাছে উঠলো তখন সে গাছের গোড়া কেটে ফেলতে লাগলো। তার ভাই বলল, গোড়া কেটে ফেললে গাছ মরে যাবে। সে বলল- আমার ভাগের অংশ আমি যা মনে চায় তা করবো। ভাই এর মুখে এই কথা শুনে সে বললো ঠিক আছে তোমাকে খেজুরের রসের ভাগ দিব তুমি গোড়া কেটো না। এরপর তার ভাই যখন দুধ দোহাতে আসলো সে তখন গরুর সামনের শিং ধরে নাচাতে লাগলো। ফলে তার ভাই দুধ দোহাতে পারলো না বরং গরুর লাথি খেল। তার ভাই জিজ্ঞেস করলো কেন তুমি এমন করছো? সে বলল গরুর সামনের ভাগ আমার, সামনের ভাগে আমার যা ইচ্ছা তাই করবো। তার ভাই এই কথা শুনে বলল ঠিক আছে তোমাকে দুধের ভাগ দিব তবুও গরুকে দুধ দোহানের সময় বিরক্ত করিস না। আর দিনের বেলা কাথা সে পানিতে ভিজিয়ে রাখত ফলে রাতে তার ভাই ভিজা কাথা গাঁয় দিতে পারত না। তার ভাই বুঝতে পেরে বলল আচ্ছা রাতের বেলাও তোমায় কাঁথার ভাগ দিব তবুও কাথা ভিজিয়ে রেখো না। এভাবে কামাল তার পৈতৃক সম্পত্তির সুন্দর ভাগ পেল। দুইভাই মিলেমিশে থাকতে লাগলো।

“ঐ দেখা যায় ম্যাচ
আমার গল্প শেষ। :D "
আমাদের ফেইসবুক পেইজে গিয়েও কিসসা পড়তে পারেন-
লোকসংস্কৃতি রক্ষা করি (লোরক) সোসাইটি

৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×