somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম এবং আল্লাহ সম্পর্কে 'গাফফার চৌধুরীর' ধৃষ্টতাপূর্ণ অবমাননাকর বক্তব্যের জবাব

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"সম্প্রতি কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী নিউইয়র্কে বসে ইসলাম সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। তার ধৃষ্টতাপূর্ণ ছাগলামি মন্তব্যের জবাব নিম্নে দেয়া হলো---

:
গাফফার চৌধুরী বলেছে, "আল্লাহর ৯৯ গুণবাচক নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিলো। এগুলো আমার বাংলা ভাষায় (গ্রহণ) করেছি।" ( সুত্র - বিভিন্ন পত্রিকা)।
:
অথচ আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, "আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। --- সূরা বনী-ইসরাঈল আয়াত ১১০।" অনেক গুলো হাদিস দ্বারাই প্রমাণিত যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহ'র অনেক গুলো নাম-এর উল্লেখ করেছেন।

"আল্লাহ্‌ তা’আলার রয়েছে নিরানব্বইটি নাম, একশো থেকে একটি কম॥ [বুখারি ৩.৫০:৮৯৪, মুসলিম ৩৫:৬৪৭৬, তিরমিযি ৫১.৮৭:৫১৩৮]"

আরো বলা হয়েছে, "আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর,যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে। [তাফসীরে মা’আরেফুল এর চতুর্থ খন্ডের পৃষ্ঠা ১৪১-১৪৬]॥"

অতএব এমন ছাগলামি তথ্য "আল্লাহর ৯৯ গুণবাচক নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিলো" এই তথ্য গাফফার চৌধুরী কোথায় পেয়েছেন???
:

আবার গাফফার চৌধুরী বলেছেন, " আবু হুরায়রা নামে অর্থ হচ্ছে বিড়ালের বাবা, আবু বকর নামের অর্থ হচ্ছে ছাগলের বাবা। এভাবে আমরা অনেক নাম রাখি। কাফেরদের মধ্যে যারা মুসলমান হয়েছিলো তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়নি।"
:

কিন্তু গাফফার চৌধুরীর জানা নেই , পৌত্তলিকতার সম্পর্ক থাকলে ইসলাম গ্রহনের পর মুহাম্মদ (স) ঐ সকল নাম পরিবর্তন করে দিতেন। যেমন - হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পূর্বের নাম ছিল আব্দু আমর বা আব্দু ক্বাবা, যা পরিবর্তন করা হয়। হযরত আবু হুরাইরা (এটা উপাধি) উনার পূর্বের নাম ছিল আব্দে শামস বা সূর্যের দাস। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর উনার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আব্দুর রহমান। "আবু হুরায়রার জন্মস্থান ও বংশধারা সম্পর্কে যতটুকু জানা যায় তা এই যে, তার জন্ম ইয়েমেনের লোহিত সাগরের উপকূলস্থ তিহামা অঞ্চলের বাহাতে, Daws বংশের Azd গোত্রের বনি Sulaym উপগোত্রে, ৬০৩ সনের দিকে। তার প্রকৃত নাম Abd al-Rahman ibn Shams বলে ফিকহ ও হাদিস বেত্তা Al Nawawi উল্লেখ করেছেন। "বিড়ালের প্রতি স্নেহাধিক্যের জন্য তিনি আবু হুরায়রা (অর্থাৎ ছোট বিড়ালের পিতা) নামে অভিহিত হন। [দ্র: সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ; ১ম খ. ৩য় মুদ্রণ,আবু হোরায়রা অধ্যায়; পৃ: ৫৭]"
বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা থাকাটা নিশ্চয়ই দোষের কিছু নয়॥ "আর আবু বকর (র) তার পারিবারিক নাম আবদুল্লাহ, তবে আবু বকর উপনামেই তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন। পিতা আবু কুহাফা ওসমান। পিতামাতা উভয়ে ছিলেন মহানবীর (স.) সাহাবীর অন্তর্ভূক্ত। আবু বকর (র) কে ‘আতিক’ নামেও স্মরণ করা হতো। ‘আতিক’ অর্থ সৌন্দর্য্যরে অধিকারী, তিনি প্রথম জীবন হতেই রুচিশীল এবং সত্যনিষ্ট ছিলেন এজন্য তাকে আতিক বলা হতো। স্বয়ং হযরত (স.) এ নামের ব্যাখ্যা সম্পর্কে বলেনঃ আতিক অর্থ মুক্ত। আবু বকর জাহান্নাম হতে চির মুক্ত।’- (তিরমিজি ২/২১৪)। পরবর্তীতে মহানবী (স) তাকে ‘সিদ্দিক’ উপাধি দান করেন। এর অর্থ সত্যবাদী এবং সত্যের স্বীকৃতি দানকারী।’সম্পর্কের দিক দিয়ে আবু বকর (র) রাসুলুল্লাহ (স) এর চাচাতো ভাই। (ইঃ বিশ্বকোষ ২/১২১)।"
আবদুল গাফফরের ‘ছাগলের পিতা’ বলার ধৃষ্টতার জবাবে বলতে হয় আবু বকর মূল নাম না, এটা তার উপাধি॥ আবু অর্থ পিতা, বকর শব্দের অর্থ পৌড় বা বৃদ্ধ। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে উনার নাম ছিল আব্দুল কাবা বা কাবা ঘরের বান্দা। কিন্তু ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর পরিবর্তন করে রাখা হয় আব্দুল্লাহ বা আল্লাহ’র বান্দা।

:

গাফফার চৌধুরীর আরেক দাবি হলো, “হিজাব এবং বোরখা হচ্ছে মওদুদীর শেষ মতবাদ। হিজাব একটি আরব সংস্কৃতির পোশাক, বাঙালির নয়।”
:

অথচ গাফফার চৌধুরীর জন্মের আগে থেকেও বাঙালি মুসলমান মহিলারা হিজাব-বোরখা পরত। ব্রিটিশ আমলে ঢাকা ভার্সিটির শিক্ষক রমেশ মজুমদার তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন,"নিয়ম অনুসারে গভর্নরের বাড়িতে কোনো ভোজের নিমন্ত্রণ থাকলে গভর্নরের ঠিক ডানদিকের আসনে ভাইস-চ্যান্সেলারের স্ত্রীর বসার কথা। প্রথম দু’জন ইংরেজ ভাইস-চ্যান্সেলারের আমলে এই নিয়মই চলছিল। তারপরের ভাইস-চ্যান্সেলার রহমান সাহেবের স্ত্রী পর্দানশীন ছিলেন; গভর্নরের ভোজসভায় উপস্থিত থাকতেন না। (সূত্র: জীবনের স্মৃতিদীপে, রমেশ মজুমদার, পৃষ্ঠা ৯৬)"

:

হিজাব বা পর্দা মুসলমানের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় বিধান। সব নবী-রাসূল আঃ এবং তাদের উম্মতের ওপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পর্দা বা হিজাব পরিধান করা আবশ্যক ছিল। সৃষ্টির শুরু থেকেই পর্দা মানবসভ্যতার প্রধান নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। পর্দা মানবজাতির শালীনতাবোধ,উন্নত রুচি এবং সর্বোত্তম আদর্শের পরিচায়ক। মূলত মানবজাতিকে হিজাব বা পর্দাপালনের বিশেষ স্বাতন্ত্র্য এবং বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন করেই সৃষ্টি করা হয়েছে। শহীদ আয়াতুল্লাহ মোতাহহারী তাঁর গ্রন্থে হিজাব সম্পর্কে লিখেছেন :হিজাবের (আরবিতে) মূল ‘ হাজব ’- এর অর্থ আবৃত করা। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন নারী ও পুরুষকে এক অভিন্ন কর্তব্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের সূরা নূরের ৩০ ও ৩১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে :"মুমিন দিগকে বল , তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্থানের হেফাজত করে ; এটাই তাদের জন্য উত্তম। তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত। মুমিন নারীদিগকে বল , তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে ;তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ব্যতীত তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে.."
:

পরিশেষে বলতে হয়, গাফফার চৌধুরীরা নিজেদেরকে বিরাট জ্ঞানী মানুষ বলে মনে করে থাকে অথচ তাদের মাথা ভর্তি যে গোবর এটা তারা নিজেরাও যানেনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৯
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×