somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিওঃ দ্যা বদারসাম ম্যান (২০০৬)

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ট্রাফিক জ্যাম, দুর্গন্ধ, ময়লা আবর্জনা, চাকুরীর আকাল, মারামারি-হানাহানি, হরতাল অবরোধের এই শহর থাইকা আপানারে যদি একটা এসি বাসে উঠাইয়া দেওয়া হয়। বাসটা যদি আপনারে একটা আইসোলেটেড জায়গায় নামাইয়া দেয়। নামার লগে লগেই যদি একজন গাড়ি নিয়া আইসা আপানারে রিসিভ কইরা নেয় যেইখানে সে আপানার লাইগা ওয়েলকাম ব্যানারও লাগাইয়া রাখছিল। তারপর সে যদি আপনারে একটা ছোট্ট পরিচ্ছন্ন সুন্দর শহরে নিয়া গিয়া একটা হ্যান্ডসাম সেলারি যুক্ত চাকরির অফার দেয় লগে থাকার লাইগা একটা সুন্দর এপার্টমেন্টও দেয়। এবং চাকরিতে জয়েন কইরা দেখলেন যে বিশাল আলিশান অফিস, আপনার অফিস রুমটাও গরজিয়াস, তার ওপর প্রথম দিনেই এক মাসের এডবান্স বেতন দিয়া দিসে। যদি ঐ শহরে বসবাসের কিছুদিনের মধ্যেই এক সুন্দরী মাইয়া আপানার গার্ল ফ্রেন্ড বইনা যায় তাইলে বিষয়ডা কেমন হইব? আপানার কেমন লাগব? আপানাগো যেমনই লাগুক আমার যে কিরাম লাগবো সেই অনুভূতি এই রিভিওর ভিত্রে বইলা বুঝানো সম্ভব না!

মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্রের সাথে এইরকম ঘটনা দিয়াই মুভি কাহিনী শুরু হয়। তয় কেন্দ্রীয় পোলাডা এই শহরে আসার আগে ঢাকা শহরের মত কোন শহরে ছিল কিনা এই ব্যাপারটা ক্লিয়ার না। সে আসলে ঠিক কইথাইকা আসছে সেইটাও আনক্লিয়ার। যাই হোক এইরকম ভাবে তার দিন কাল অত্যন্ত সুখে কাটতেছিল। শহরের সবাই সুখী। দুঃখ বইলা কোন কিছুর অস্তিত্ব এইখানে নাই। সবাই সবসময় হাসে, কখনই কাঁদে না। অফিসের বস প্রতিদিন আইসা খবর লইয়া যায়। কিন্তু এতসব কিছুর মইধ্যে একটা বড় ধরনের ঘাপলা লুকাইয়া আছে। আস্তে আস্তে সেই বিষয়ডা কেন্দ্রীয় পোলাডার কাছে স্পষ্ট হইতে থাকে। সে খেয়াল করে এই শহরে কোন বাচ্চা কাচ্চা নাই। নাই মানে একটাও নাই। কোন দিন কোন বাচ্চার কান্না বা হাঁসি কোনডাই সে শুনতে পায় নাই। এক সময় বুঝল এইখানে কেউ মরেও না। আউট অব বোরডেম একদিন সে কাগজ কাটার মেশিনে আঙ্গুল ঢুকাইয়া দেয়। আঙ্গুল হারাইয়া রক্তারক্তি অবস্থায় জ্ঞান হারায়। পথে জ্ঞান ফিরে দেখে হাতে ব্যান্ডেজ, বাসায় গিয়ে ব্যান্ডেজ খুলে দেখে আঙ্গুল ঠিক আগের মতই আছে, যেন কিছুই হয় নাই। আরও অদ্ভুত ব্যাপার হইল এই শহরের বারে গিয়া আপনি যতই মদ খাইবেন, মাতাল হইবেন না। মদ বানানো হইছে এমনভাবে যাতে কেউ মাতাল হইয়া আবেগ প্রকাশ করতে না পারে। এইখানে বিনোদন বলতে আছে শুধু ডিনার পার্টি। এই পার্টি আসলে কোন পার্টি না। সবাই এসে চুপচাপ খায়, সিলি কিছু বিষয় নিয়া হালকা হাসে, তারপর বাসায় চইলা যায়। প্রত্যেক দিন এইরকমই চলে। এইখানে সেক্স কইরা কেউ কখনও অর্গাজমে পৌছাইতে পারে না। কোন মজা নাই। কাউরে কিস করা অবস্থায় দেখলে মনে হয় যেন কোন জম্বি কিস করতাছে। এইরকম আরও অনেক উদ্ভট ঘটনায় স্বর্গরুপী এইরকম একটা শহরে থাইকাও পোলডার লাইফটা হেল হইয়া যায়। একসময় সে প্রশ্ন করা শুরু করে অথরিটিকে। শুরু হয় জটিলতা। এইসব জটিলতা নিয়া আগাইতে থাকে মুভির কাহিনী।

মুভিটা হইল নরওয়িয়ান সারিয়াল কমেডি। মুভির শুরুতে বাস থাইকা নামার পরেই আপনি ঢুইকা পরবেন একটা পরাবাস্তব জগতে। মুভিতে যা দেখানো হইছে তারে কেউ বলে রিলিজিয়ান হেভেন এর উপর স্যাটায়ার, কেউ বলে মডার্ন সোসাইটির ক্রিয়েটেড আর্টিফিশিয়াল হেভেন এর উপর স্যাটায়ার। তবে আমার কাছে দুইটাই মনে হইছে। রোবটিক মিডেলক্লাস মডার্ন লাইফ হইল একটা জলজ্যান্ত জাহান্নাম! কিন্তু এইডারে স্বর্গ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয় ইনডিভিজুয়াল লেভেল থাইকা ন্যাশনাল লেভেল পর্যন্ত। যা আমরা সহজে অনুধাবন করতে পারিনা। সবাই এক অদৃশ্য স্বর্গ পাওয়ার আশায় বইসা থাকে। দুনিয়াতে না হইলেও পরকালে। কেউ একজন বলছিল, সম্ভবত এইডা কোন গানের কথা, “স্বর্গ হইল সেই জায়গা যেখানে আসলে কিছুই ঘটেনা।“ মানুষ কিভাবে ন্যাচারাল আবেগ হারাইয়া রোবটিক যন্ত্রতে পরিণত হইতেছে সেইটা এই মুভির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুভির সেটিং অন্যরকম। সচরাচর যেরকম দেখেন সেরকম না আর কি! এনডিংটাও ভিন্ন রকম। ভিন্ন ধাঁচের কাহিনী আর সারিয়াল অভিজ্ঞতার জন্য মুভিটা নিয়া বইসা পরতে পারেন। সিনেমাটিক মজাটাও পাবেন, সাথে চিন্তার খোরাক।

আমার রেটিং ৮.৫
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×