somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ইঞ্জিনিয়ার কবির আহমেদ মাধব
এটাই আমার একমত্র আইডি। আমার আর কোন আইডি নেই। আমার নাম,ছবি দিয়ে ফ্যাক কয়েকটা আইডি খোলা হয়েছে। সো সাবধান থাকুন। পারলে ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করুন। আমি করেছি,লাভ হয় নাই। ওদের যন্ত্রণায় কমেন্ট অপশনও বন্ধ রাখা হয়েছে ধন্যযোগ,সাথে থাকার জন্য।

স্মৃতিতে বাংলাদেশ ডিফেন্স বাহিনী!

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আমার জানা মতে বিজিবিতে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের কেউ নিয়োগ পায় না"

পায়? আমি শিওর পায়না!

আমার এলাকায় একচৌকিদার ছিলেন।(মারাগেছে মনে হয়) ভুল করে তারে আমি ছোটবেলায় পুলিশ ভাবতাম। কারন তার পোশাক,খ্যাকি কালারের ছিল,তখনকার পুলিশের ড্রেস খ্যাকি ছিল। আর পুলিশরে ভয় পাইতাম অনেক।

আব্বু বাজারে যাবে আজ, শুনলেই তার আগে গোসল,খাওয়াদাওয়া করে রেডি হয়েযেতাম। গতবার বলছে গোসল করি নাই তাই নিবে না,তার আগে বলছে খাই নাই তাই নিবে না। এবার সব শর্ত আগেভাগে পুরণ করে আমি রেডি,আব্বুর আগে। উদ্দেশ্য একটাই,বাজারে গেলে গরমগরম, সিঙ্গারা আর রসগোল্লা খাওয়া যেত। আব্বুর অনেক স্টুডেন্টসদের সাথে দেখা হত,ওদের সাথেও দুষ্টামি করাযেত। আর সুযোগ বুঝে জাদু দেখা,মজমার লোকদের সার্কাস দেখাযেত।

আব্বুর শেষ অস্ত্র
“” আজ বাজারে পুলিশ আসবে”
চুপ হয়েযেতাম
ত আম্মুরে জিজ্ঞাস করতাম
“আব্বুরে পুলিশে ধরবে না? তারও না যাওয়াই উচিৎ! ”
আম্মু আর আমার বড়বোন বলত,বড়দের না, ছোটদের ধরে নিয়েযায়।
(বাজারের ব্যাগ অনেক কিছু সামলানোর পর আমার মত পিচ্ছিরে সামলানো ছিলো আরেক ঝামেলা! সবাই ভাবত আমি হারিয়েযাব,আমিও চাইতাম আমি হারিয়ে যাই এই দুনিয়া আর ভাল্লাগেনা, সকালেই স্কুল যেতে হয় )

আমাদের বাসার পুকুরের পাড় ঠিক করার জন্য মাটিকাটার জন্য লোক দরকার ছিল। তাদের ভিতর সেই চৌকিদারকেও দেখলাম!

আম্মুকে কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞাস করলাম,আম্মু যা শুনাইলো তাতে আমার চৌকিদাররুপি পুলিশম্যান সম্পর্কে ধারনাটাই চেঞ্জড!

""উনিই ত এদের লিডার,ওনার আন্ডারেই বাকি লোক মাটিকাটার কাজ করে। চেয়ারম্যান ডাকলে মাঝেমাঝে পরিষদে দেখাযায়""

রিলিফের সময় আসলে দেখতাম,লাঠি হাতে তিনি জনগণ কে লাইনে দাড় করাচ্ছে! চা এনে দিচ্ছে চেয়ারম্যানকে।পরিষদ অফিসের সামনে একদিন দুটা কুত্তা হঠাৎ কেমনে যেন দৃষ্টিকটু ভাবে জোড়ালেগে গেল,তাকে দেখলাম তা খুব দক্ষতার সাথে তাড়িয়ে দিয়ে আসতে। সাহস আছে লোকটার। আমি কুকুরের কাছে যাই না ভয়ে,আর সে!!

এই চৌকিদার এবং পরে অনেক পুলিশকেই দেখছি আব্বুকে স্যার স্যার বলে কথা বলতে। পুলিশের ভয় আমার কেটেগেছে,এখন আমি নিজেই ছোটদের পুলিশের ভয় দেখাই,ছোটভাইকে পুলিশ আর জ্বীনভুতের ভয় দেখিয়ে ওর বিস্কিট, সিঙ্গারা, চকলেট, আইসক্রাইম নিজেই খেয়ে নিয়েছি কতশত বার!

এবার আমি ভয় পাই BDR কে। আমাদের এলাকায় একটা ভোট কেন্দ্র ছিল,মারামারি হবেই। ভোটের সময় টানটান উত্তেজনা থাকে নান্টু ভাই আর জাকির মামার সমর্থকদের মাঝে। আর সেখানেই জাঁদরেল ৪ টা বিডিআর। একটু আগে বলেগেছে এই এই করতে হবে,পরে এসে দেখল কিছুই করেই নাই। ২০/৩০ জন পুলিশ যা করতে না পারল ঐ ৩/৪ জন বিডিআর পুরা ইউনিয়নের ৯টা ওয়ার্ড পাহারা দিল। এসেই একশন শুরু। রাস্তার পাশে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ধুমধাম লাথি, কোন কথা নাই,মাইর ধুমধড়াক্কা, ৫ মিনিটে এলাকা শান্ত।

এখনো মনে পরে
""এক বিডিআর জওয়ানের সামনে ৩/৪ শ পাবলিক থরথর করে কাঁপছে। তিনি বসতে বললে সবাই বসে যাচ্ছে খুব ভদ্র ছেলের মত,বুড়ো,জোয়ান সবাই,কেউ কেউ ত কাদামাটিতেও বসে পরল""
(আমি ভয় পেলেও সাহস হারাই নাই ,শেষ বিকেলে এদের সাথেই একটু কথা বলেছিলাম)

BDR কে ভাবতাম, আর্মি। দেখতে একই রকম ছিল। সেই থেকে আর্মিদের লাইফটা আমার পছন্দ ছিল। আমাদের এলাকায় যেখানেই আর্মি আসত,চেষ্টা করতাম সাহস দেখিয়ে তাদের সাথে কথা বলতে,ভয় ত মনে আছেই। ছোটবেলায় দেখতে কিউট আর স্টাইলিশ ছিলাম তাই সাহসিকতা দেখে তারাও কাছে ডাকত,আব্বুর নাম,কোন ক্লাসে পড়ি,আব্বু কি করে? সব জানত! তারপর জিজ্ঞাস করত আর্মিতে জয়েন করবে কি না বড় হয়ে? সরাসরি না বলে দিতাম!

তারা অবাক হত,এত কিছু জানতে চাচ্ছ অথচ এখানে না!! তাদের জানাতাম
""আর্মির লাইফটা ভাল্লাগে কিন্তু আম্মু বলছে এটা অনেক কষ্টের আর রিস্কি লাইফ,সব কিছু দেশের জন্য,মারাও যেতে পারি, তাই না,ইঞ্জিনিয়ার হবো""
(তারাও কিছুটা সায় দিত আমার কথায়,সবখানে যাও,আর্মিতে না)

আমি ইঞ্জিনিয়ার হয়েছি ঠিকই,তবে মনের কোনে একটা সফট কর্নার থেকেই গেল,আর্মিদের জন্য। হোয়াট আ লাইফ,হোয়াট আ পার্সোনালিটি! যেখানে কোন ডর ভয় নেই। হেরেযাবো,এটা মনেই আসে না। জয়ের জন্যই যেন তারা। যত বাধা আসুক,সামনে আগাও। আর তাদের পোশাক,জুতার স্টাইল সেই!

ইন্ডিয়ান বিএসএফ একবার বাংলাদেশের কয়েকটা গ্রাম দখল করেনেয়,সাথে সাথে এটাক,নিজেদের এরিয়া উদ্ধার ত করলই আগের কিছু দখল করা বা বিতর্কিত এরিয়া ছিল সেটাও দখল করে নিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৩/৪ জন বিডিআর সদস্য শহীদ হয়েছিল,আর ইন্ডিয়ার কয়েকশ! ২০০০ সালে মায়ানমারের ৬০০ জন সেনাকে হত্যা করল অথচ আমাদের কেউ হতাহত হয় নাই।

ক্রিকেটারদের পর আমার সবচে ভালোলাগার জায়গা বাংলাদেশ আর্মি। তাদের নিউজ,প্রোগ্রাম,শান্তি মিশনে সাফল্য কথা যা ই হোক মিস করি না!

বন্যায় রিলিফ দিতে একবার ৪/৫ জন আর্মি এসেছিল আমাদের এলাকায়,এসে নিজেরদের ছাতাটাই হারিয়েফেলছে,২ জনকে গলায় হাত দিয়ে বন্ধুর মত হাটতে,হাসাহাসি করতে। তাদের লিডার ভালই ছিল,মনে হচ্ছে অনেক রাগী কিন্তু কারই গোফ নাই। সবাই বলাবলি শুরু করল এরা বাচ্চা,আর্মি!

৫ ই জানুয়ারির নির্বাচনের সময় দেখলাম, ঢাকার বনানী এরিয়ায়,আমার বাসা থেকে একটু দুরেই আর্মি ক্যাম্প করেছে,টহল দিচ্ছে। তাদের কাছদিয়ে লোকজন যাচ্ছে,কথা বলছে,তাদের তারা কিছুই বলছে না। একজন আর্মিকে দেখলাম নতুন বছরের ক্যালেন্ডার চেয়ে নিচ্ছে,উৎসুক এক জনতার কাছ থেকে। তার কাছে নাকি নেই তাই! তারপর সর্বশেষ ভয়টুকুও কেটেগেল আর্মি নিয়ে।

তারপর তাদের ট্রাফিক,হাতিরঝীল,রাস্তানির্মান,ব্রীজ নির্মাণ সহ কতশত কাজে দেখলাম। ভাবলাম আর্মিদের ত বসিয়ে বসিয়ে রাখা যায় না,যাক কাজ করুক যুদ্ধ ত নাই। আমরা যুদ্ধও ত করি না,কিছু যদি আয় করে নিজেদের বেতনটাওত নিজেরা ইনকাম করতে পারে! স্বনির্ভর! আমিও রাতে ভাবি,অনেক খাস জমি আছে,কতশত নতুন চর জাগতেছে নদীতে। ওগুলায় আর্মি দিয়ে চাষাবাদ করলে খাদ্যঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা। সরকারি জমিরও একটা সঠিক ব্যবহার হবে। চর নিয়ে দখলদারদের মারামারিও বন্ধ হবে।

সীমান্তে মায়ানমাররের কাণ্ডকারখানা দেখতেছি,রাগ হচ্ছে,নিজের উপরই!
তাই আর্মি নিয়ে নিজের কিছু স্মৃতিচারণ!
১১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×