somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্লোরিয়েট ইন্ (শেষ পর্ব)

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"Dont be afraid boy, I am not your enemy" একটা রিনরিনে কন্ঠ বলে উঠলো। আবির স্থির হয়ে গেলো। ভুতেরা তো খনখনে গলাই কথা বলে কিন্তু এর কন্ঠ রিনরিনে কেন! এইরকম একটা কথা ভাবতে পেরে আবিরের ভালো লাগলো। তাইলে এখনো স্বাভাবিক জ্ঞান বুদ্ধি হারায়নি। আবির কাপা গলায় প্রশ্ন করলো, কে তুমি! রিনরিনে কন্ঠ বলল, আমি আত্বা , এইটাই আমার পরিচয়।
আবিরের মনে হলো , ঘরের প্রতিটা কোনা শব্দ উঠে এসে তার কানে লাগছে। হঠাৎ পুরো পুর্ণিমার চাঁদ যেন পেন্ট হাউসের ভেতর ঢুকে পড়লো । তীব্র আলোর ঝলকানিতে চোখ বুজে আসলো। চোখ খুলে আবির দেখতে নীল স্কার্ট পরে যে মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে তাকে শুধু সুন্দরী বললে ভুল বলা হবে। আটলান্টিকের নীল জলরাশীর মতো দুটো মায়াবী চোখ। সমুদ্রের ঢেউ এর মতো ফুলে ফেপে উঠা চুল নেমে গেছে কাধ বেয়ে।
বিস্বয়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই মেয়েটি কথা বলে উঠলো, দশটি বছর অসীম যন্ত্রনায় আমার আত্বা ঘুরে বেরিয়েছি এই পেন্ট হাউসের আনাচে কানাচে । যেদিন আমি আত্বহত্বা করলাম পৃথীবির সমস্থ যন্ত্রনাকে শেষ করার জন্য, সেদিন থেকে আরেকটি অব্যাক্ত কষ্টে আচ্ছন্ন হয়ে আছে আমার আত্বা। অনেকেই এই পেন্ট হাউসে এসেছে, তার শুধু ভয় পেয়ে চলে গেছে। হঠাৎ লক্ষ করলাম পেন্ট হাউসে কেউ আর আসছে না । তারপর এলে তুমি । আমাকে মুক্তি দাও, মুক্তি দাও এই অসীম যাতনা থেকে। আমি চলে যেতে চাই সেখানে, যেখানে রবার্ট গেছে। প্রতিটা প্রহরে সে আমাকে ডাকে রাত জাগা পাখির মতো। প্রতিটা মূহুর্ত সে আমার দিকে চেয়ে থাকে অবাক নয়নে। আমি আসছি না কেন! তার প্রতিক্ষার প্রহর আমি শেষ করতে চাই। বলতে বলতে শংখ সাদা মেয়েটি বসে পড়লো নতজানু হয়ে। যেন ভিক্ষা চাচ্ছে কিছু।
প্রেতাত্বারা কি কাদতে পারে?একবার ভাবলো আবির পরক্ষনেই মনে পড়লো সেই মেয়েটির কথা যাকে ফেলে ঢাকা আসতে বুকের পাজর ভেঙ্গে যাচ্ছিল। আমি যদি মারা যাই তাহলে সে কি আমার জন্য স্লিপিং পিল খাবে অথবা আমি যে তার কাছে নেই, সেই জন্য সে কি হাপুস নয়নে কাদে ?
কি করতে পারি আমি? আবির প্রশ্ন করলো। মেয়েটি বলল, কালকে ২৬ শে মে। দশ বছর আগে ঠিক এই দিনে আমি স্লিপিং পিল খেয়েছিলাম। আমার আত্বার মুক্তি জন্য এই পেন্ট হাউসে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে।
পরের দিন রাতে আবির পেন্ট হাউসে গেলো। ঘরে ছিটিয়ে দিল কেরোসিন । একটা সিগারেট জ্বেলে কাঠি ফেলে দিয়ে ছাদে এসে দাড়ালো। পেছনে পেন্ট হাউস পুড়ে যাচ্ছে। হোটেল জুড়ে ফায়ার এলার্মের শব্দ। সিড়িতে দুপদাপ পায়ের আওয়াজ।আকাশে পান্ডুর চাঁদ। সেই ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদের দিকে তাকিয়ে ঠোট নাড়লো আবির..

গভীর অন্ধকার থেকে নদীর ছল ছল শব্দে জেগে উঠলাম আবার,
তাকিয়ে দেখি পান্ডুর চাঁদ বৈতরনী থেকে অর্ধেক ছায়া গুটিয়ে নিয়েছে যেন কীর্তিনাশার দিকে।
ধান সিড়ি নদীর কিনারায় আমি শুয়ে ছিলাম পৌষের রাত্রে ।
কোন দিন জাগবো না জেনে, কোনদিন জাগবোনা আমি , কোনদিন জাগবোনা আর।


কবিতাঃ অন্ধকারঃ জীবনানন্দ দাশ।

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×