somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই কথাঃ ০৬ - দ্য সার্জন

২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আমি রিভিউ খুব ভাল লিখতে পারিনা। শুধু চেষ্টা করি পড়ার পরের প্রতিক্রিয়াটা ব্যক্ত করতে।



কাহিনি সংক্ষেপ

বোস্টনে বিকারগ্রস্ত এক খুনি রাতের বেলায় ঘুমন্ত অবস্থায়ই আক্রমণ করছে মেয়েদের। মেডিকেল জ্ঞানের দক্ষতার কারণে সংবাদমাধ্যম এই লোমহর্ষক খুনির নামকরণ করে ‘সার্জন।’ বোস্টন হোমিসাইড ইউনিটের ডিটেকটিভ টমাস মুর এবং তার পার্টনার জেন রিজোলি এমন একটি বিষয় আবিষ্কার করে যা এই কেসটাকে অন্য একটি জটিল রহস্যের দিকে ধাবিত করে। বছর দুয়েক আগে, সাভানাতে এক সিরিয়াল কিলার ঠিক একই প্রক্রিয়ায় তার শিকারদের হত্যা করতো। কিন্তু দুধর্ষ সেই খুনি নিজের শেষ শিকারের হাতে খুন হয় বছর দুই আগেই। তার শেষ শিকার ট্রমা সার্জন হিসেবে বোস্টনের নামকরা হাসপাতালে কর্মরত। কি সম্পর্ক সেই শিকারের সাথে এই খুনগুলোর? কপিক্যাট কিলার কেন করছে এসব? কি তার উদ্দেশ্য?

পাঠ প্রতিক্রিয়া

লেখিকা ডাক্তার হবার কারণে ঘটনার বর্ণনাগুলোতে মেডিক্যাল টার্মগুলি এমনভাবে লিখেছেন যে আমার অবস্থা হয়েছিল এই থ্রিলারের ডিটেক্টিভ মুরের মত। বেশিরভাগ ব্যাপার মাথার উপর দিয়ে চলে গেছে। তবে যেহেতু বইটার কিলারটা একটা সার্জন, কাহিনিতে ডাক্তারি টার্মগুলি সত্যিই খুব প্রয়োজন। একজন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট আমার চেয়ে অনেকগুনে বেশি উপভোগ করবেন বইটা।

সাধারণত থ্রিলার পড়ার সময় আমি খুনি কে, তা খোঁজার চেষ্টা করি না। শুরুতেই যদি বুঝে ফেলি, কে খুনি, পুরো বইয়ের স্বাদই নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটা পড়ার সময় বারবার মনে প্রশ্ন জেগেছে, কে এই নিষ্ঠুর সাইকো কিলার? ইচ্ছে হচ্ছিল বিকৃত মস্তিস্কের লোকটাকে ওরকম পৈশাচিকভাবে মারি!

এই বইটার চ্যাপ্টারে চ্যাপ্টারে টুইস্ট। এত বড় বই! অথচ বই থেকে আমার মনোযোগ একবারের জন্যও বিচ্যুত হয়নি। একবারো মনে হয়নি, এই অংশটুকু আমি জোর করে পড়ছি। কখনো কোন টুইস্ট বুঝে ফেলার চেষ্টা করি না আমি। কিন্তু এবারে মনের অজান্তেই বইয়ে দেওয়া শেষ টুইস্টটা বুঝেছিলাম। শেষ পৃষ্ঠায় যখন জানলাম, আমার অনুমানটা সঠিক, তখন মোটেও খারাপ লাগেনি। বরং বেশ ভালো লেগেছিল।

চমৎকার অনুবাদ করেছেন রিকি আপু। তবে কিছু কিছু বর্ণনা (যেমনঃ খুনির ভাষ্যগুলো, উত্তম পুরুষে লেখা হয়েছে যেটা) আলাদা চ্যাপ্টারে দিলে, নিদেনপক্ষে স্টার দিয়ে প্যারা করে দিলে পড়ে আরাম পেতাম। 'য়' আর 'ই' এর মধ্যকার গোলমাল এবং চন্দ্রবিন্দুজনিত ভুল বানানগুলি এড়িয়ে গেলে অনুবাদে কোন খুঁত নেই। এইসব খুঁটিনাটি ভুলগুলি বাদ দিয়ে দিলে, এটা এমন একটা অনুদিত থ্রিলার, যেটায় সত্যি সত্যিই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টান টান উত্তেজনায় আটকে রাখতে পেরেছে। বেশিরভাগ অনুবাদেই যেটা ব্যর্থ হয়।

বইয়ের শেষটা পড়ে খুব খুব তৃপ্তি পেয়েছি।

শেষ কিছু কথা

কথাগুলি হয়তো অফটপিকের দিকে চলে যাচ্ছে, কিন্তু না বলে পারছি না।
এই থ্রিলারে আজকের দুনিয়ায় মেয়েদের অবস্থান দেখে, সেই সাথে ভিক্টিম (বাধ্য হয়ে ভিক্টিম লিখলাম। ক্যাথরিন ছাড়া কারোর নাম মনে নাই। ওদের নাম খুঁজে বের করে লেখাটা নেহাতই বাচ্চামি হত) মেয়েগুলির মানসিক অবস্থার বাস্তব বর্ণনাটুকু পড়ে একজন মেয়ে হিসেবে ভয়াবহ আতঙ্কে আছি আমি। সত্যিই তো, এ দুনিয়া আমার জন্য কতটুকু নিরাপদ?

বই পরিচিতিঃ

বইঃ দ্য সার্জন
লেখক: টেস গেরিটসেন
অনুবাদিকা: সান্তা রিকি
প্রচ্ছদ: ডিলান
পৃষ্ঠা: ৩৩৬
মূল্য: ৩২০
প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী
প্রকাশকালঃ বইমেলা-১৬
রেটিংঃ ৫/৫
অনুবাদ রেটিং: ৪.৭৫/৫
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:০৩
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×