somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিভাবে বুঝবেন ইসলামি ব্যাংকে চাকরি হারাম না হালাল

২৫ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা ইসলাম প্রিয় মানুষ। আমাদের প্রত্যেকের মনেই ধর্মভীতি রয়েছে। মহান আল্লাহ তাড়ালার অশেষ মেহেরবানীতে আমরা এই সুন্দর পৃথীবিতে এসেছি। পৃথীবিতে তিনি শুধু আমাদের পাঠিয়েই দেননি, বলে দিয়েছেন করনীয় আর বর্জনীয় গুলো। এসব বিষয়ে প্রায়শই আমরা বিভ্রান্ত হয়ে যাই আমাদের গাফিলতির কারনে, কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল এ সিদ্ধান্তে আশাকরি হারাম না হালাল?

লেখাটি আগে এখানে প্রকাশিত হয়েছে

ইসলামি ব্যাংকে চাকরি হারাম না হালাল এই বিষয়ে ভিডিও দেখুন

মূলত ধার দেয়ার বিনিময়ে সুদ গ্রহন এবং হারাম ব্যবসাকে ইসলাম অবৈধ করেছে। আর শরিয়ার এই রীতি মেনে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিচালনার ধারনাকেই ইসলামি ব্যাংকিং বলে। খোলাফায়ে রাশেদীনের পর থেকে শুরু করে, ৮০০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ইসলামি স্বর্নযুগে, যে ব্যাপক ভিত্তিক ইসলামি অর্থনীতির বিকাশ ঘটে, তারই অনুপ্রেরনায় ৬০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মিশরে প্রথম ইসলামি ব্যাংকিং পদ্ধতির  প্রচলন হয়। পরবর্তীতে এই ইসলামি ব্যাংকিং  বিস্তৃত হয় ইরান, সৌদি আরব এবং মালেশিয়ায়।

ইসলামে টাকার অংকের দিকে তাকিয়ে কোন জিনিসকে হারাম বা হালাল বলা হয় না। যদি হারাম হয় এক টাকাও হারাম, আর যদি হালাল হয় লক্ষ টাকাও হালাল। কোন জিনিসকে হারাম বা হালাল বলার জন্য ইসলামে রয়েছে মাসআলা। কোন মাসআলা অবলম্বন করলে কোন জিনিস হালাল হয়, আর কোন মাসাআলায় কোন জিনিস হারাম হয় তা আমাদের জানতে হবে।

ইসলামেও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছিল, সুতরাং বলা যায়, ইসলামি ব্যাংকিং না জায়েজ নয় বা এর বৈধতা রয়েছে। কিন্তু আমাদের জানতে হবে কিভাবে ইসলামি ব্যাংকিং বৈধ হবে বা  জায়েজ হবে। আমাদের সবার প্রিয় নবি হযরত মুহম্মদ (সঃ) এবং সাহাবা কেরামগন যে নিয়ম অনুযায়ি লেনদেন আর কেনাবেচা করতেন। সেই নিয়ম অনুযায়ি লেনদেন আর কেনাবেচা করলে সব ব্যাংকের লেনদেনই হালাল হবে। আর ইসলামি ব্যাংক নাম দিয়ে ধর্মীয় নিয়ম না মেনে চললে ইসলামি ব্যাংকের লেনদেনও হারাম হবে। বিষয়টি এভাবে বলা যায়, বিসমিল্লা- বলে মদ খেলে যেমন মদ জায়েজ হয় না, তেমনি ইসলামি ব্যাংক নাম দিলেই তাদের কার্যক্রম জায়েজ হয়ে যাবে না। ইসলামি নিয়ম অনুসরন করছে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বাধ্যতামূলক একটা জামানত রাখতে হয় এবং লেনদেন করতে হয়। তো বাংলাদেশ ব্যাংককি ইসলাম ভিত্তিক লেনদেন করছে, না বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন অনুযায়ি করছে? এখন প্রশ্ন হল, বর্তমান বিশ্ব অর্থব্যবস্থায় কোন বিশেষ ব্যাংকিং ব্যাবস্থার পক্ষে কি বাদবাকি ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাথে লেনদেন না করে থাকা সম্ভব? অর্থাৎ একটা দেশের সব ব্যবস্থা যখন ধর্মনিরপেক্ষ, তখন শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইসলামি হওয়া সম্ভব নয়।

দুঃখের বিষয় হল, ইসলাম শব্দটির সাথে আমাদের দেশের মানুষের যেহেতু একটা দুর্বলতা আছে, সেই সুযোগ নিয়ে অনেকেই ইসলামের নামে লাভজনক ব্যবসা করছেন। এইচএসবিসি, এবং স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের মতো বহুজাতিক ব্যাংক তাদের সাধারন সুদি ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি সাদিক, আমানাহ ইত্যাদি নামে ইসলামি ব্যাংকিং চালু করেছে। ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও সত্যি যে এটা অনেকটা ইংরেজদের ইংরেজী প্রিন্সিপাল দিয়ে আলিয়া মাদ্রাসা চালু করার মত হয়ে গেছে।

অতএব, মুদারাবা, মুশারাকা, মুরাবাহা, সাদিক, আমানাহ ইত্যাদি যে নামই দেয়া হোক না কেন- নিয়ম কানুন যদি সাধারন ব্যাংকিং এর মতই হয় তাহলে নামে ইসলামি  হলেও সেই ব্যাংকিং ব্যবস্থা কিন্তু জায়েজ হবে না। আর যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা  না  জায়েজ তাতে চাকরি করাও হারাম হবে। কেননা তথাকথিত ইসলামি ব্যাংকিং আর অন্যান্য ব্যাংকিংযের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে কোন পার্থক্য নেই। সবাই বাংলাদেশ ব্যাংকের  নিয়মের  অধীনে কাজ করছেন, শুধু ভিন্ন নামে ডাকছেন।

ইসলামি ব্যাংকিং বিষয়ে আরও পরিষ্কার ধারনা পাওয়ার জন্য একজন ধর্মীয় আলেমের সাহায্য নেয়াটা আপনার জন্য আরও সহায়ক হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×