somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার নব্যরাজাকারিতার সন্ধানে

৩০ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি বিজ্ঞাপন
আপনি কি কম খরচে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচয় দিতে চান? মুক্তিযুদ্ধ না করেও, জীবনে কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে একটা বাক্যব্যয় না করেও মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পেতে চান? বাস্তবে সম্ভব না হলেও কল্পনায় তা সম্ভব। ভার্চুয়াল জগতে আমার অসম্ভব কল্পনাকেও সম্ভব করে দিচ্ছেন সামহয়ারের ভার্চুয়াল মুক্তিযোদ্ধারা। এর জন্য আপনাকে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে হবে না। ছাত্রলীগের মিছিল করে জয় বাংলাও বলতে হবে না। স্রেফ সামহয়ারে এসে গালি দিন, যে কারো উদ্দেশে, যে কোনো অজুহাতে। ভার্চুয়াল মুক্তিযোদ্ধারা আপনাকে রাতারাতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেবে।

আরেকটি বিজ্ঞাপন
কারো সাথে আপনার পূর্ব শত্রুতা আছে? কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করতে চান? কেউ আপনার বিরুদ্ধে কখনো কথা বলেছিল? কাউকে আপনার পছন্দ হয় না? কেউ আপনার বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে? আপনার পোস্ট পড়ে না এমন কেউ আছে? তার বিরুদ্ধে আপনাকে তুকতাক, জাদু টোনা কিছুই করতে হবে না। দাওয়াই আপনার পাশেই আছে। ভার্চুয়াল মুক্তিযোদ্ধাদের শরণাপন্ন হউন। নিমেষে কাজ হয়ে যাবে। রাতারাতি আপনার শত্রু হয়ে যাবে রাজাকার। আপনি এমনকি তাকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার দাবিও তুলতে পারবেন। কম খরচে এভাবে রাজাকার বানানোর উপায় আর কোথায় পাবেন না।


গালিবাজদের বিরুদ্ধে আমার পোস্টগুলোর সময়ে অনেকেই হয়তো ভেবে বসেছিলেন, গালিবাজদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রথম আহবান আমি জানিয়েছি। কিন্তু কথাটা সত্য নয়। আমার আগে বহু মানুষকে যেহেতু গালি খেতে হয়েছে। সব গালি মুক্তিযোদ্ধা বনাম রাজাকার হয় নাই। অথচ গালি খেয়ে অনেককে ব্লগ ছাড়তে হয়েছে। সম্মান নিয়ে পালাতে হয়েছে। তাই প্রতিবাদ অনেক হয়েছে। কিন্তু, সে প্রতিবাদ গুণ্ডাদের টলাতে পারেনি। সো, ক্রেডিটটা আমি নিতে চাই না। ব্লগের সেইসব মেহেনতি ব্লগারদের দিতে চাই যারা গালিবাজ মুক্ত ব্লগ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিরবে হলেও দেখেন।
বিষয় এইটাও না আইজকা। আইজকার বিষয় একটা গুরুতর সংকট। একস্লিপ নামে একজন ব্লগার আমাকে নব্য রাজাকার উপাধি দিয়েছেন। অনেকের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে বলে নিজেই ব্যাপারটার দিকে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একস্লিপ নতুন ব্লগার। ব্লগ রিভিউ করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার আমি ভক্ত। তার পোস্ট সংখ্যা কম। মতাদর্শ বোঝা যায় না। কিন্তু ফতোয়া দেয়ার মতো যথেষ্ট অথরিটি তিনি ধারণ করেন। কিন্তু তার ফতোয়াটার উৎস হাসিবের কমেন্ট। এই ফতোয়ার দার্শনিক হাসিব সাহেব।
যখন গালিবাজদের বিরুদ্ধে পোস্টাপোস্টি চলছে তখন আমার ইউনিভার্সিটির বন্ধু নোভেল আইসা পড়লো। বললো, তুমি নাকি রাজাকারদের পক্ষ নিছো? আমি বললাম না। নেই নাই। কথায় কথায় তারে চ্যালেঞ্জ কইরা কইলাম, বন্ধু তোরে তিনদিন সময় দিলাম। আমার ব্লগ থেকে রাজাকারদের পক্ষে একটা লাইন বাইর কইরা দেখা। নোভেল দেখায় নাই। দেখাইবে হয়তো। কিন্তু তিনদিন কাইটা গেছে। বন্ধুকে চ্যালেঞ্জ করা যায় কিন্তু সহ-ব্লগারদের চ্যালেঞ্জ করার মতো ধৃষ্টতা কি দেখানো যায়?
হাসিব ও একস্লিপ আমার কোনো কমেন্ট বা পোস্ট থেকে বের করেন নাই যে আমি নব্যরাজাকার। তারা আমার গালি বিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে এইটা বাইর করছেন। সামহয়ারে অনেকে আমারে অনেক গালি দিছেন। অনেকে অপছন্দ করছেন। অনেকে সমালোচনা করছেন। আমার কথার ফল রাজাকারে খাইতেছে এইটা বলছেন। লেকিন, সরাসরি নব্যরজাকার কেউ বলেন নাই। একস্লিপ এই কামটা করলেন। একস্লিপ ও হাসিব এই বিষয়ে একমত যে, আমি হঠাৎ করেই গালিবাজদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো শুরু করছি। তখন নাকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সিরিয়াস কাজ হইতেছিল। আমার প্রতিবাদে সেইটা আর হইতে পারে না। হাসিব মোটামুটি দিনভর অনলাইনে থাকেন দেখি। আর একস্লিপ নিবিষ্ট পাঠক হিসেবে খ্যাতি কুড়াইছেন। আমার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে গালি দিয়া, পজেটিভ থিংকার্স গ্রুপের বিরুদ্ধে কথা তুইলা পোস্টগুলা যখন মুক্তিযোদ্ধারা করছিলেন তখন মনে হয় ওনারা চউখে ঠুলি দিয়া আছিলেন। চক্ষু তখন এড়াইয়া গেছে। উনারা আমার হঠাৎ ক্ষেপনের কারণ না পাইয়া অন্য উদ্দেশ্য পাইছেন। সামহয়ারের তখনকার সংকট বিষয় আমি একখানা কাল্পনিক গল্প লিখছিলাম সেইটাও হয়তো ওনারা পড়েন নাই। ওইখানে আমি একটু ক্লিয়ার করা চেষ্টা করছিলাম বিষয়টা।
যাই হোক, আমার প্রতিবাদের ফল এখন রাজাকাররা খাইতেছে এইটা ওনারা বিশ্লেষণ কইরা এর দায় আমার কান্ধে তুইলা দিছেন। মিরাজের কান্ধেও দিছেন। কিন্তু গুণ্ডারা গুন্ডামী করলো। গালি দিল। তাদের জন্য আমর প্রতিবাদ করলাম। এইগুলা তাদের নিকট কিছুই না। আমি রাজাকারদের বিরুদ্ধে কত কথা বলছি, সেইটাও বিষয় না। ওনারা আমাকে নব্যরাজাকার ফতোয়া দিয়া বসছেন।
বিষয়টা নিয়া খুব অবাক হওয়ার কিছু নাই। সামহয়ারে লিখছেন, গালি দিচ্ছেন না, অমুকের পিরালির অন্তর্ভুক্ত হন নাই। অমুকদের স্যার স্যার করেন নাই। তো আপনে একদিন না একদিন রাজাকার খেতাব পাইবেনই। নো টেনশন। এইখানে গুণ্ডারাই মুক্তিযোদ্ধা আর ভালরা রাজাকার। আর আসল রাজাকারের সমর্থকরা মিথ্যা রাজাকারদের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার জোগাড়। আমি আগেও বলছি এখনও বলি, কোনো মতাদর্শ বাঁচানোর দায়িত্ব যখন শেষ পর্যন্ত গুণ্ডাপাণ্ডাদের হাতে গিয়া পড়ে তখন সেই মতাদর্শের অপমানই করা হয়। এখন এইসব বইলা লাভ নাই। প্রতিবাদ কইরাও লাভ নাই। হাসিবের দর্শন ও একস্লিপের ফতোয় বিষয়ে আপনাদের কিছু জানাইতে চাইলাম। মনে বড় দুঃখ হইলো। দুঃখে দুইটা বিজ্ঞাপন লিখলাম। কেউ কষ্ট পাইলে বইলেন। আগে থেকে ক্ষমাও চাইয়া রাখলাম।
৭৫টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×