somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate )
জীবন একটা কৌতূহলী যাত্রার নাম- স্রষ্টা, সৃষ্টি, উদ্দেশ্য এবং এই সব কিছুর সত্যতা কে ঘিরে... আর আমি সেই পথের একজন সাধারণ যাত্রী। নিজের জায়গা থেকে সব স্থান, কাল, পাত্রে আপন অস্তিত্বকে কল্পনা করতে ভালোবাসি আর সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটা কাজ করে যাই...

#তথাকথিত দিবস সমূহ এবং #আমাদের অনুকরণপ্রিয়তা...

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে ভ্যালেন্টাইন্স ডে থেকে শুরু করে যত ধরণের বিদেশি ডে এন্ড নাইট আছে, তা পালন করা শুরু হয় ইন্টারনেট এর ব্যাপকতা বৃদ্ধির প্রাক্কালে। খুব বেশি বছর আগের কথা নয় কিন্তু। মানুষ দিন দিন যতই উৎসবমুখর এবং বিনোদনপ্রিয় হওয়া শুরু করেছে, ততই তাদের মাঝে নৈতিকতা,মূল্যবোধের অভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস এবং এর নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন তো অধিকাংশ মানুষের কাছে গৌণ বিষয় হিসেবে তাকের উপর তুলে রাখার মত সমাদৃত। জীবনযাপন পদ্ধতিতে এসেছে পাশ্চাত্যের ছায়া। মিডিয়ার ব্যাপকতার প্রভাব মানুষ প্রতিমুহূর্তে গিলে খাইছে। এর ই হাত ধরে- এই ডে, ঐ ডে থেকে শুরু করে উয়ান নাইট স্ট্যান্ড এর মত সংস্কৃতি ও কিন্তু অনুপ্রবেশ এর বেশি দেরি নেই। হয়তোবা চলছেই ইতিমধ্যে।

ভালোবাসার সংজ্ঞায়ন এ আমি যাবো না। সামাজিকভাবে বিয়ে কে কঠিন করে ফেলার ফলে এবং অবাধ যৌনাচার কে প্রেম- ভালোবাসার চাদর মুড়িয়ে দেয়ার কারণে আজ তা কোন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, তা কারোরই অদেখা বা অজানা নয়। দিন শেষে নারী এবং পুরুষের মাঝে সম্পর্কের বেড়াজাল কে ঘিরে ভালোবাসা আসলেই কি তা না বুঝতে পারার দায়ভার একে অন্যের উপর চাপিয়ে পরমুহুর্তে অন্যের গলায় ঝুলে পড়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। লিটনের ফ্ল্যাট এর জনপ্রিয়তা এবং পাশাপাশি প্রত্যেক টা ডে কে কোনভাবে টেনেটুনে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বানানো এখন যেনো জাতিগত স্বভাবে পরিণত হচ্ছে- হোক তা একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর অথবা কিস, হাগ এর মত আজাইরা ডে নামক কলঙ্কিত দিবসগুলো। যাই হোক এর পক্ষে বা বিপক্ষে আমি কিছু বলছিনা।

যেই পাশ্চাত্যের প্রভাবে আমরা এতোশত সংস্কৃতি অনুকরণ করছি তার সুবাদে ইতিমধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক সমলিঙ্গের পর্যায়ে চলে এসেছে এবং তা অপরাধ বা মস্তিষ্কবিকৃতি না ধরে অতি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আমাদের মাঝে আন্দোলনের মাধ্যমে বৈধতা প্রমাণের চেষ্টা ও কম চালানো হচ্ছেনা। পাশাপাশি সেক্যুলারিজম এর নামে নাস্তিকতার আদর্শ তো জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চার বেশ ধরিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছেই। তখন আর কোন কিছুতেই বাঁধা নেই, সব অপকর্ম তখন চাহিদার মাপকাঠি তে বিবেচ্য মাত্র! এমনকি নাস্তিকতার নামে শেখানো হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষ। সাময়িক আনন্দের মোহে পড়ে মানুষ কোন কিছুর প্রকৃত সুদুরপ্রসারী ফলাফল নিয়ে ভাবতে ইচ্ছুক ও নয়।

একটু লক্ষ্য করি, গত কয়েকবছরে আমাদের মাঝে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি যেই পরিমাণে প্রবেশ করেছে এবং তাতে কয়েক দশক পর আমাদের পরবর্তী জেনারেশন এর মাঝে কি কি দিবস এবং পাশ্চাত্য জীবন অনুকরণপ্রিয়তা আসতে পারে, চলুন একটু ঘুরে আসা যাক ফিউচার থেকে-

- মা কি যে ব্যাকডেটেড না তুমি! আজ “নো প্যান্টি ডে”! আমি আজ প্যান্টি না পড়েই বাইরে যাবো। ইটস অ্যা ক্ল্যাসি ট্রেন্ড, আমার বান্ধবীরাও তাই করবে!
- ড্যাড আজ বিচ এ উলঙ্গ হয়ে ঘুরবো। আজ “উয়ার্ল্ড নিউড ডে” প্লিজ আজ কোন কথা শুনবো না।
- আরে ইয়ার, পর্ণস্টার হইসি তো কি হইসে, এখন এই যুগে পর্ণস্টারের চেয়ে কার দাম বেশী বল!
- আজকে উয়ার্ল্ড ফাকিং ডে! আজকে না করলে হয় নাকি মাম্মা!


ছি ছি এইসব আমি কি বলছি! অনেক উদ্ভট এবং বাজে লাগছে তো, আজ থেকে কয়েক দশক আগেও বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতির চিত্র মানুষ জানলে তাদের কাছেও এমন ই বাজে এবং উদ্ভট মনে হতো, যা এখন আপনার কাছে মনে হচ্ছে। হয়তোবা উপরোক্ত ব্যাপারগুলো আপনারই ছেলেমেয়ের মুখে শুনতে হতে পারে। কারণ এগুলো পাশ্চাত্য সমাজের বর্তমান কমন ট্রেন্ড! আরও এমন হাজার হাজার বা লাখো উদাহরণ দেয়া সম্ভব, যা উল্লেখ করলে হয়তো আপনার পক্ষে সহ্য করাও সম্ভব না! ভাব্বেন, কিভাবে কি! এও সম্ভব! আপনার কাছে যদি এইসব ব্যাপারগুলো নরমাল মনে হয় এবং যুগের সাথে তাল মেলানোকে আধুনিকতা মনে হয়, তবে প্রস্তুত থাকুন আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তোবা দারূণ দারূণ সব দিবস পালনের মহড়া নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। সেই আধুনিক ভবিষ্যতের পথে আপনাকে সুস্বাগতম।

আজ থেকে ২ দশক পর আপনার ছেলেমেয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ভালোবাসা নামক অনুভূতি এবং এর কার্যক্রম কে আপনি ঠিক যেভাবে দেখতে চান, আপনার ভালোবাসা ও যেনো ঠিক তেমন ই হয়।

অনুকরণ এর জগতে অথবা সত্য বুঝে উপলব্ধির জগতে আপনাকে আবারো স্বাগতম। 

অনেকের ই মনে হতে পারে, প্রেম করে সাধু সাজো ব্যাটা! তুই জঙ্গি, তুই জঙ্গি! তাদের প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসা রইলো। শুধু এক ছাইপাঁশ দিবস উপলক্ষে নয়, বছরের প্রতিটি দিন ই থাকুক এই অকৃত্তিম ভালুবাসা।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৪
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×