somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ
আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

কোলবালিশ ১৮-

২১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কোলবালিশ ১৮-(আঠারো মাইনাস) ;)

আজ থেকে ৪ বছর আগে বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লিখেছিলাম গল্পটা। গল্পটি আজ জীবনের ক্ষতবিক্ষত এক স্মৃতি মাত্র। গল্পগুলোর চরিত্রের বর্তমান পরিণতি জানা আছে কিন্তু কোলবালিশটা কেমন আছে, কোথায় আছে জানিনা? :(

বিশেষ দ্রষ্টব্য : এই কোলবালিশ কিন্তু সেই কোলবালিশ না। :D কমেন্টে পুরাতন লেখার লিংক দিলাম।



একটি কোলবালিশের গল্প....
অনবরত কেদে চলেছে আফসানা। প্রায় আধাঘন্টা ধরে সিফাত মোবাইলে আফসানার কান্না আর বকাঝকা হজম করছে।
-তুমি কি কখনোই সিরিয়াস হবেনা?
-আমি কি তোমাকে বেসিরিয়াস ভাবে ভালোবাসি বলতে চাও?
-তাহলে এইসব উদ্ভট কান্ড করো কেন?
-কি এমন করলাম?
-জানোনা কি করেছ? কি বিপদেই না ফেলেছ আমাকে! কোলবালিশ কেউ কাউকে উপহার দেয়‚ শুনেছো কোনদিন?
-আনকমন কিছু খোঁজে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ দেখলাম এক দোকানে কোলবালিশ। ব্যাস কিনে ফেললাম।
-জানো আমাকে কত কষ্টে এই কোলবালিশটাকে ম্যানেজ করতে হবে?
-কোলবালিশ ম্যানেজ মানে! ওটাকি মানুষ!
-ওরে বুদ্ধু তুমিতো সাত সকালে ঐ টা দিয়েই পালিয়েছো। বাসায় যখন জানতে চাইবে এটা কোত্থেকে এসেছে তখন কি থেকে কি বলে যে ম্যানেজ করবো একমাত্র আমি আর আল্লাহ জানেন। আমি কি বাসার মানুষকে বলবো যে সিফাত আমাকে কোল বালিশ গিফট করে গেছে? তাছাড়া ওরা তোমাকে পছন্দ করেনা। তোমার সাথে আমার ইয়ে জানলে আমাকে আর ঘর থেকে বেরুতে দেবে ভেবেছো?
-এই তোমার সাথে আমার কি বলতো!
-এক থাপ্পড় দেব কিন্তু ফাজিল। আমি মরি টেনশনে আর তুমি মজা নিচ্ছো?
-তাহলে আমি এখন কি করবো?
-তুমি বুঝার চেষ্টা করছনা কেন? ছোট খাট কিছু হলে সমস্যা ছিলোনা কিন্তু কোলবালিশ কি লুকানো সম্ভব। তাও আবার এই সকালে।
-আমি এখন কি করবো সেটা বল।
-এখনো কেউ ঘুম থেকে উঠেনি। প্লীজ তুমি আবার এসে কোলবালিশিটা নিয়ে যাও। পরে একসময় সুবিধা করে আমি নেব। বাসায় না হয় বলবো আমি কিনেছি।
-এইবার কিন্ত আমার মেজাজ বিগড়ে দিচ্ছো। কোলবালিশটা যদি এতো সমস্যা সৃষ্টি করে তবে এক কাজ করতে পারো। তোমাদের বাসার যে পুকুর সেই পুকুরে ডুবিয়ে ফেল যাও। আমি ফোন রাখছি।
সিফাত এইবার কল কেটে বন্ধই করে দিলো মোবাইল। আর আফসানা দৈত্যাকার কোলবালিশটার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। মনে হচ্ছে ওটা কোলবালিশ না একটা শিশু। সবাই এখন এসে এখন জিজ্ঞেস করা শুরু করবে "বাচ্ছাটা কার‚ এই বাচ্ছা এখানে আসলো কিভাবে?" কিভাবে ম্যানেজ করবে তখন? আফসানা ভাবতে বসলো কি করা যায়। পুকুরে ডুবিয়ে ফেলা বা ফেলে দেয়া কোনভাবেই সম্ভব না। সিফাতের উপহার বলে কথা। ছেলেটা আসলেই পাগল। পাগল না হলে সাত সকালে কেউ কাউকে কোলবালিশ দিয়ে যায়।

*** গতকাল রাত ১১ টা।
সিফাতের কল। তাড়াহুড়ো করে রিসিভ করলো আফসানা। একবারে না ধরলে আবার সিফাতের হাজারটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। আফসানা জানে সিফাত তাকে অসম্ভব রকম ভালোবাসে। সে বিশেষ কিছুই চায়না।
তার চাওয়াগুলো খুবই সিম্পল। আফসানার কাছ থেকে একটু লুতুপুতু রেসপন্স আশা করে যেগুলো আফসানা করতে পারেনা। এই যেমন জান লাভ ইউ কিংবা মিস ইউ এইসব ছেলেমানুষী লাগে আফসানার। আর এগুলোই ভাল্লাগে সিফাতের। ছেলেটা দিন দিন বড় হচ্ছে কিন্তু শিশুসুলভ আচরনগুলো যাচ্ছেনা। আফসানা যদি ফোন রিসিভ করতে একটু দেরী করে তবেই হয়েছে। সারাদিন যাবে সিফাতের খিটমিট শুনে শুনে। সিফাত ফোন ধরা মাত্রই আফসানাকে বললো-কাল তুমি ভোরে উঠবে।
-কেন?
-কাজ আছে।
বলইনা কি কাজ ভোরবেলা?
-ভোর হলেই দেখবে।
-ইশ বলোনা কি?
-একটা স্পেশাল গিফট কিনেছি তোমার জন্য।
-কি এমন গিফট যেটা ভোরবেলা দিতে হবে?
-আছে। আর এত প্রশ্ন করছো কেন? সকাল ছয়টায় ফোন দেবো আমি।বলেই লাইন কেটে দিলো সিফাত।
ভোরবেলা সিফাত ফোন দিয়ে বললো বাসার গেইটে আসতে। সবার চোখ ফাকি দিয়ে যদিও সবাই ঘুমে। আলতো করে দরজা খুলে বাসার গেইটে এল আফসানা। গিয়েতো আফসানার চক্ষু চরক গাছ। সিফাত একটা বিশাল কোলবালিশ কোলে নিয়ে রিকসায় বসে আছে। আফসানা বেরুতেই কোলবালিশটা তার হাতে দিয়ে রিকসাওয়ালাকে বলে তড়িঘড়ি করে ফিরে যাচ্ছে আর সেইদিকে হতভম্ব আফসানা চেয়ে আছে। কি করবে এই কোলবালিশ?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:১৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×