একটা ছবি প্রদর্শনি গ্যালারিতে পাশাপাশি দাড়িয়ে ছবি দেখছিলেন দুজন।
১ম জন আবেগের সাথে বললেন, গোধুলি বেলার ঢাকার ছবিটি দারুন, এক ধরণের বিষন্নতা ছেয়ে আছে ছবিটি জুড়ে যা মনকে প্রশান্ত করে।
ইসলামি বেশভুষার ২য় জন দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বলেন, কম্পিউটার জেনেরেশন আর্ট কিংবা ডিজিটাল আর্টেও এখন এধরণের ছবি তৈরি করা সম্ভব।
এই দুজন সমেত অফিসের অন্যান্য এমপ্লয়িদের এই আর্ট গ্যালারিতে আগমন, অফিসের নির্দেশনাতেই।
হুজুর মানুষদের শিল্প কলার জ্ঞান এরকমটিও হয়, ১ম জন অসন্তোষ প্রকাশ করে বললেন।
সেক্যুলার টাইপের ১ম জনের, এমনিতেই ইসলামি বেশভুষার মানুষদের ব্যপারে এক ধরণের এলার্জি আছে।
এরকম একটা দারুন ছবি ডিজিটাল আর্টে কোনভাবে সম্ভব নয়, কল্পনা শক্তিতে ঘাটতি থাকলেই এধরণের আর্টের ব্যপারে এরকম বাজে মন্তব্য করা যায়। - ১ম জন তার অসন্তোষ প্রকাশ করেই চললেন।
এই ছবিটি পেছনে একটি সুন্দর মন লুকিয়ে আছে, যিনি কিনা ইট পাথরের মধ্যেও গোধুলি বেলাটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন দারুনভাবে, যা হৃদয়কে ছুয়ে যায়। সুর্যের ম্লান আলো ছুয়েছে সবকিছুকেই, পুরো জগতটিই যেন মেতেছে রংয়ের খেলায়।
এই ছবির সৃষ্টিকর্তার কোন প্রশংসাই যথেষ্ট নয়, আর আপনি বলছেন এটি কম্পিউটার জেনেরেটেড, হুজুরদের আই কিউ সম্পর্কে অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন, আমার মনে হয় অভিযোগ করা হয় বাস্তবতার নিরিখে।
২য় জন তার শান্ত ভাব বজায় রেখে বললেন, আপনি কি ১০০% নিশ্চিত ছবিটি কম্পিউটার জেনেরেটেড নয়।
এমনি সময় বাইরে মাগরিবের আজানের ধ্বনি শোনা গেল।
২য় জন এবার কিছুটা রেগেই বললেন, আপনার সাথে আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না, আপনার খোদা আপনারের ডাকতেছেন, গিয়া সেজদা দেন।
১ম জন কথা না বাড়িয়ে গ্যালারির বাইরে এসে দাড়ালেন নামাজের প্রস্তুতি নিতে।
গোধুলি বেলার ম্লান আলো সারা ঢাকা শহর জুড়ে অপূর্ব মায়াময় পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। অদ্ভুদ সেই সৌন্দর্য্য।
১ম জনের হৃদয় অাপ্লুত হল মহান আল্লাহর প্রসংশায়।
তারপর দীর্ঘস্বাস ফেললেন তিনি, তার করুনা হল ১ ম জনের পেছনে।
একটা সাধারন ছবির পেছনে লোকটি একজন সুন্দর মনের সৃষ্টিকর্তা খুজে পায়, কিন্তু এই যে দৃশ্যমান সৌন্দর্য্য, এবং এমনতর আরো অনেক সৌন্দর্য্য যা ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে তার পিছনে কোন কোন সৃষ্টিকর্তাকে কোন রহমানকে খুজে পায়না হতভাগারা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৪