somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ের দোয়া

০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শামীম সাহেব ছোট বয়সেই তার মা বাবাকে হারিয়েছেন, তাই তাদের কথা খুব একটা মনে নেই।

বড় হয়েছেন এক চাচার কাছে। চাচার কাছে তিনি প্রায় সবকিছুর জন্যই ঋণী। মা বাবার শূন্যতাকে পূরণের চেষ্টায় কোন কার্পণ্য করেননি এই চাচা, চাচীও ব্যতিক্রম নন। মায়ের দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট ছিলেন তিনিও।

সিদ্ধান্ত নেয়ার বয়সে পৌছলে শামীম সাহেব মনস্থির করেন প্রোকৌশন বিদ্যায় পারদর্শী হওয়ার জন্য। চাচা চাচী দুজনের অনুপ্রেরণা এবং সায়, দুটিই কাজ করছিল এতে।

কিন্তু একটি দু:সংবাদে সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য হন। দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত চাচীর কথা মাথায় রেখে ডাক্তারি পড়াতে মনোনিবেশন করেন।

বহু বছর পর আমেরিকাতে ডাক্তারী বিদ্যায় উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করে দেশা ফেরা হয় শামীম সাহেবের। ডাক্তার হিসাবে সারা দুনিয়া জুড়ে তার খ্যাতি।

ততদিনে চাচা চাচী দুজনাই এই দুনিয়ে ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন। মাঝখানে তাদের দেখতে দেশে ফিরেছিলেন তিনি।

দেশে ফিরেই গ্রামের বাড়ির দিকে রওয়ানা দেন শামীম সাহেব। চাচা চাচীকে কবর দেয়া হয়েছে পারিবারিক গোরস্থানে, যেখানে মা বাবাও শায়িত আছেন।

সবার কবর জিয়ারত শেষে এক নিকট আত্মিয়ের বাড়িতে আতিথেয়তা গ্রহন করেন, সম্পর্কে তিনি ফুপা হন।

জ্যোৎস্নালোকিত রাতে বাড়ির দাওয়ায় বসে তারায় ভরা রাতের আকাশে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন শামীম সাহেব।

কিরে মার কথা কিছু মনে পড়ে - ফুফুর কথায় ধ্যান ভাংগে তার।

দীর্ঘস্বাস ফেলেন তিনি।

তোর মা তোকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতেন। আকাশের সবচাইতে বড় তারাটি দেখিয়ে সবাইকে বলতেন আমার ছেলে ঐ তারার সারা দুনিয়ায় আলো ছড়াবে।

কিছুক্ষণ নিরব থাকেন, শামীম সাহেব। তারপর আস্তে করে ফুফুকে শুধান, মা আমাকে নিয়ে কি স্বপ্ন দেখতেন।

তোর মা মারা যাওয়ার কয়েক বছর আগে, ভয়ানক এক রোগে তার আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারি আমরা।

আমরা তোর মাকে তার আশু মৃ্ত্যুর কথা জানাতে চায়নি, কেননা তুই তখন খুবই ছোট। শুধুই আকার ইংগিতে বলতাম তোমার রোগ হয়েছে, সারাবার জন্য বড় ডাক্তার প্রয়োজন।

ফুফু চোখ মুছতে মুছতে বলেন, তোর মা সবাইকে বলে বেড়াত আমার ছেলে দুনিয়ার সবচাইতে বড় ডাক্তার হবে। আমায় সারিয়ে তুলবে।

শামীম সাহেবের দুচোখ বেয়ে অঝোরে পানি বইতে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:৪৬
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×