somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

প্রজ্জলিত মেশকাত
ব্যক্তিজীবনে অহিংসায় বিশ্বাস করি। বুদ্ধের দর্শন গভীরভাবে ভাবায় আমায়। “আসক্তিই সকল দুঃখের কারণ, অধিকারবোধ থেকেই দুঃখের সৃষ্টি।” এই দুটো বাক্যের উপর অগাধ বিশ্বাস। কারো চিন্তা-চেতনাকেই ছোট করে দেখিনা। আমি বিশ্বাস করি যে মতবাদই হোক, তার গভীরে না ঢ

স্রষ্টার অস্তিত্ব অনুসন্ধান।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ সবসময় যেমন আনুগত্য খুঁজে ঠিক তেমনিভাবে প্রভুও খুঁজে। প্রভূ খুঁজতে গিয়েই একসময় মানুষ প্রকৃতিকে প্রভু বানিয়েছে। মানুষ যখন দিন দিন বুদ্ধিমান হতে লাগল তখন প্রকৃতিকে প্রভু হিসেবে মানতে পারলো না। প্রকৃতির সাথে যোগ করল কাল্পনিক দেবতা আর প্রভুর। সাথে সাথে মানুষ শুধুমাত্র অল্পসময়ের জন্য পৃথিবীতে থাকাকেও মানতে পারলোনা। ঠিক তখনি সৃষ্টি করল পরজনমের ধারণা। যে মানুষ আবার রিসাইকেল হয়ে পৃথিবীর বুকে আসবে। তখনই তৈরী হল পাপ পুণ্যের ধারণা। এই ধারণা তৈরী হল কিছুটা মানুষের নৈতিকতা আর অন্তর্চেতনা মিলিয়ে আর বাকিটা ধর্মের কাল্পনিক রীতিনীতি লঙ্ঘনকে নিয়ে। নৈতিকতা আর introspection মানে অন্তর্চেতনা থেকে সৃষ্ট পাপের ধারণা সমাজের জন্য কিছু নিয়ন্ত্রণ আর কল্যাণ বয়ে আনলো। অপরদিকে কাল্পনিক ধর্মীয় বিধিনিষেধ থেকে সৃষ্ট পাপের ধারণা সমাজে সৃষ্টি করল অনিষ্ট আর তা হয়ে গেল শাসক শ্রেণীর শোষণের হাতিয়ার।

এরপর ধীরে ধীরে মানুষ প্রকৃতি আর কাল্পনিক দেবদেবীর প্রার্থনা থেকে সরে নতুন কিছু ভাবতে লাগলো। তখনি আসলো একেশ্বরবাদের ধারণা। মূলত আব্রাহাম( ইব্রাহীম) প্রথম একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠা করলেন। প্রার্থনা পদ্ধতিতেও আসলো পরিবর্তন। স্রষ্টাকে একেকজন একেক নাম দিল। ইব্রাহীম দিয়েছিল জাহুভা যে নামে ইহুদীরা ডাকে। কয়েক হাজার বছর চলল। তারপর কয়েকজন পেরিয়ে এল জেসাস(ঈসা) যিনি দিলেন গড।

তিনি চেষ্টা করলেন সমাজ পরিবর্তনের। পারলেন না। তাকে ক্রুশ বিদ্ধ করে শাসক গোষ্ঠী হত্যা করল। যারা তাকে হত্যা করল তারাই জেসাসকে ঈশ্বরের পুত্র বানিয়ে খৃস্টান ধর্মের সূচনা করলেন।

সবশেষে মুহাম্মদ। অতীতের সকল প্রচলিত ধর্মকথাকে এক করে আর আরবের প্রচলিত আইনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভার্স বা সূরা তৈরী করে দীর্ঘ ২৩ বছরে সৃষ্টি করলেন নতুন ধর্ম। যার নাম দিলেন শান্তি। যার আরবি ইসলাম। আল্লাহ নামটা মুহাম্মদের দেওয়া বা কুরআনে নাযিল হওয়া নাম নয়। এটা আরব পৌত্তলিকদের মুখে আগে থেকেই প্রচলিত ঈশ্বরের নাম। খুব সহজ উদাহরণ। মুহাম্মদের পৌত্তলিক পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ। মানে আল্লাহর বান্দা। এ থেকে খুব সহজেই বোঝা যায়।

আবার জেসাস ব্যভিচারের দায়ে পাথর ছুঁড়ে হত্যাকে ঘৃণা করতেন। তিনি বাতিলও করেছিলেন। মুহাম্মদ পৌত্তলিক সমাজে প্রচলিত ফৌজদারি আইনসমূহকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন। যার মধ্যে বেশিরভাগই নিষ্ঠুর এবং মানবতাবিরোধী আইন।

আমরাই স্রষ্টা তৈরি করেছি এবং একেক সময় একেক নাম দিয়েছি। কখনো জাহুবা, কখনো গড আবার কখনো আল্লাহ। ভারতবর্ষে এসেছে ঈশ্বর আর ভগবান।

তাই বলে স্রষ্টা নেই তা নয়। স্রষ্টা আছেন। তিনি আপন মহিমায় মহিমান্বিত। তিনি মানুষের সৃষ্টি করা জাহুবা, গড বা আল্লাহ নন। তবে যে নামেই ডাকা হোক তিনি একজন। যেকোন নামে ডাকলেই তিনি সাড়া দেন। তিনি মৃত্যুর পর হুর, গেলমান আর সরাবে ভর্তি স্বর্গও তৈরী করেননি আবার sadistic বা সবচেয়ে নির্মম উপায়ে জঘন্যতম শাস্তির ব্যবস্থাও করেননি। তবে আপনি যা করবেন তার ফল মৃত্যুর আগ মুহূর্তে হলেও ভোগ করে যেতে হবে।

কোরআন এবং হাদিসে তখনকার নতুন ধর্ম গ্রহণকারী উদ্দাম যোদ্ধাদের কামলিপ্সা নিয়ন্ত্রণের জন্য জান্নাতে অপরুপা সুন্দরী হুরের অবতারণা করা হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ণনার জন্য প্রাচীন মিথের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে মিথকে অতিক্রমকে করে আরো অনেক বেশি উদ্ভট কথাবার্তা বলা হয়েছে, বিকৃত কথাবার্তা বলা হয়েছে। আমার কথা শুনে হয়তো আপনার ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগছে কিন্তু এর জন্য অনেক পড়াশুনার প্রয়োজন। অনেক অনেক।

জন্মের আগেও আপনার কোন অস্তিত্ব ছিলনা। ঠিক তেমনি মৃত্যুর পরেও থাকবেনা। আজ পর্যন্ত যত বড় বড় মনিষী, বিজ্ঞানী পৃথিবীকে বদলে দিয়েছেন তারা কেউ ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না। মুসলমানরা যেসব মনিষী এবং বিজ্ঞানীদের নিজেদের বলে দাবি করেন তাদের কেউই ইসলামে বিশ্বাসী ছিলেন না। তবে স্রষ্টাতে বিশ্বাসী ছিলেন আর নৈতিকতাপূর্ণ ছিলেন। ইবনে সিনা , উমার খৈয়াম ,মুসা আল খারিজমি , মির্জা গালিব এমনকি মওলানা আবুল কালাম আজাদ পর্যন্ত।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১০
২৭টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইরান ইসরাইলের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ আর আমাদের সুন্নী-শিয়া মুমিন, অ-মুমিন কড়চা।

লিখেছেন আফলাতুন হায়দার চৌধুরী, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

(ছবি: © আল জাযীরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক)

শ্রদ্ধেয় ব্লগার সামিউল ইসলাম বাবু'র স্বাগতম ইরান পোষ্টটিতে কয়েকটি কমেন্ট দেখে এই পোষ্ট টি লিখতে বাধ্য হলাম।
আমি গরীব মানুষ, লেখতে পারিনা। তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯




আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতী যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য, নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দিয়েছি। এখানে মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান চাকমা মারমা তথা উপজাতীরা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপমহাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×