এক মেয়ের বান্ধবি, তার বাবাকে ইশারায় বুঝায় যে তার ন্যাপকিন লাগবে !
এটা নিয়ে মেয়েটির যে কতো ইগোতে লেগেছে সেটা সে নিজেও ভাষায় প্রকাশ করতে পারে নি ! বাবাকে কেন ইশারায় বুঝাতে হবে যে, আমার ন্যাপকিন লাগবে ? বাবাকে ন্যাপকিনের কথা মুখে বলতে অসুবিধা কোথায় ? সবশেষে মেয়েটির আহবান, আসুন একটু সভ্য হই... মেয়েটির সেই পোস্টে ছেলে মেয়ে জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র সেই সাথে মানুষ গড়ার কারিগর নামে খ্যাত তার টিচার সহ সবাই মিলে মেয়েটিরে এপ্রিশিয়েট করেছে ! করারই কথা !......
আপনাদের আপন ভেবেই আমার একটা গোপন ঘটনা বলি, আপ্নারা আবার কাওকে বলে দিয়েন না, সেটা হলো বছর তিনেক আগে বিয়ে করেছি ! বিয়ের পরই জানলাম, একটা প্যাকেটে ৩টা কনডম থাকে ! তো সেদিন রাতে হুট করে কনডম শেষ ! বাপকে গিয়ে বললাম, বাবা একটা কনডম দাও তো ! বাপ বলল, আমার কাছে একটাই আছে ! এটা আজকে আমারই লাগবে...
এদিকে বউ ছন্নছাড়া ! পিল খেয়ে তার সাইড ইফেক্ট নিতে সে রাজি না ! বললাম, সাবধানে থাকবো, অসুবিধা নেই ! কাজ হল না, তার বক্তব্য হলো, সেই সময় নাকি আমার হুশ থাকে না ! তাই কনডম লাগবেই ! বাধ্য হয়ে গেলাম ছোটভাইয়ের কাছে ! সে মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে করেছে ! বল্লাম, একটা কনডম দে ভাই আমার ! কালকেই শোধ কইরা দিমু কথা দিলাম ! ভাই বলল, একটাই ছিল, মাত্র শেষ হয়ে গেল ! থামো দেখি, একাদটা খুজে পাই কি না ! ২-৩ মিনিট পর রুম থেকে ১টা 'আসল পুরুষ' নিয়ে এসে বলল, অনেক আগে থেকেই এই ব্র্যান্ড বাদ দিয়ে দিসিলাম ! এইটাই ছিল, আপাতত কাজ চালাও...
আমার আবার 'এক্সট্রিম' ছাড়া চলে না ! কি আর করা, নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো ! সেই রাতটা কোনরকম রক্ষা পেলাম ! পরদিন থেকে পুরো বক্স ধরে কিনি ! আর কারো কাছে চাইতে যেতে হয় না ! বরং তারাই মাঝে মাঝে আমার কাছে এসে চায় ! আমার আবার দয়ার শরীর..... !
আপনারাও যদি আমার এই পোস্টে আমারে এপ্রিশিয়েট না করেন, তাহলে আপনাদের সবার কপালে ফুটাওয়ালা কন্ডম আছে ! এরকম বাবা-ভাইয়ের সাথে সম্প্রীতির পরিবার আমাদের দেশে খুব কমই আছে, শিগগির আমারে এপ্রিশিয়েট করেন ! তারপর বাকিটা পড়েন !
ভাইয়েরা আমার বোনেরা তোমার, এবার একটা কথা নিরপেক্ষ কথা বলি, অন্দরের জিনিস অন্দরে থাকাই ভালো ! ভিতরের কথা, গোপন কথা, যেটা সবাইকে জানানো উচিত নয়, সেটা গোপন রাখাই ভালো ! বাবাকে যদি ইশারায় বুঝাতে পারেন যে, আপনার ন্যাপকিন লাগবে, তাহলে মুখে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না ! তার অর্থ এই নয় যে, এটা ট্যাবু ! এটা হলো একে অপরের প্রতি সম্মান জানানো ! স্রদ্ধা জানানো ! আমি আমার বাবার সাথে খুব ফ্রি, তার মানে এই নয় যে, তার কাছে কনডম(আমার তো ন্যাপকিন লাগে না) চাইতে যাবো ! এই না চাওয়াটাই তার প্রতি আমার স্রদ্ধা ! বাবা-সন্তানের এই দূরত্বের নামই একে অপরের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা ! এটাকে ট্যাবুর সাথে গুলিয়ে ফেলাটা আপনার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা !
আর যদি একান্তই গুলিয়ে ফেলেন, তাহলে উপরের ঘটনাই ঘটবে ! সেটা আমাদের সমাজের জন্য খুব বেশি সম্মানের হবে বলে মনে হয় না ! যদি সম্মানের হত তাহলে এই পোস্ট লাইক কমেন্ট শেয়ারে ভেসে যেতো ! এই যে এখন এই পোস্ট শেয়ারে ভেসে যাওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে, এটাই আমাদের সমাজের শালীনতা ! বাবাকে ন্যাপকিন কেনার কথা বলতে আমরা এখনো প্রস্তুত নই ! আমাদের বাবারাও সেসব শুনতে প্রস্তুত না !
জেগে উঠতে তো অসুবিধা নেই বোন, আমাদের বোনেদের অনেক বিষয়ে জেগে উঠতে হবে এবং এটা জরুরিও, তবে শালীনতা বজায় রেখে জাগতে অসুবিধা কোথায় !
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫১