**ইহা একটি সত্য ঘটনা। এক রাজাকারের পুত্রের ডায়রি থেকে।**
আজ আমাদের পরিবারের সবার মন খারাপ।
আর কিছুক্ষণ পরই আমার বাবার ফাঁসি হবে।
নানু, মা, বোন সবার চোখে আর কোন জল নেই কাঁদার জন্য। শুধু অপলক নিস্তেজ হয়ে তাকিয়ে আছি জেলখানার ফটকের দিকে। তাকিয়ে আছি সকাল হবার আশায়। লাশটা নিতে হবে।
আজ আমরাও হয়তো অন্যান্য হাজারো পরিবারের মত স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম। হয়তো পারতাম এই রাতটায় শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকতে। কিন্তু পরম করুণাময় আমাদের কপালে সেই ভাগ্য লিখে রাখেননি।
একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার বাবার ভুল থাকতেই পারে। কিন্তু তারপরও সেতো আমার বাবা! আমার জন্মদাতা পিতা! আমি কি করে তাকে অভিশাপ দিই?
সে যদি কোনো অন্যায় করেই থাকে, মহান আল্লাহ্পাক তাকে কেয়ামতের দিনে শাস্তি দেবেন। পৃথিবীর আদালতে নাহয় তাকে যাবজ্জীবন শাস্তি দিল, তবু মেনে নিতাম। কিন্তু তাই বলে একেবারে মৃত্যুদণ্ড? এটা কি করে সহ্য করা যায়?
আমার মনে পড়ে শৈশবের কথা। আমাদের বাসায় কত সুন্দর সুন্দর বিদেশী মেহ্মান আসতেন। বেশীরভাগই পুরুষ। তাদের সুঠাম দেহ, সুন্দর গায়ের রং, খাকি পোষাক আমাকে আকৃষ্ট করতো।
রাতে খেয়েদেয়ে তারা ৪/৫ জন মিলে একসাথে আমার মা'র রুমে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দিতেন। তারপর সারারাত শুধু শুনতাম আমার মা'র শীৎকার আর হাসি!
মধ্যরাত হলে তারা মাকে রুমের বাইরে পাঠিয়ে রুমে ডেকে নিত আমার বোনকে। এরপর আবার শুরু হত আনন্দমেলা!
বাবাও প্রায়ই আমার বোনের বয়সী থেকে শুরু করে নানুর বয়সী মেয়ে নিয়ে আমাদের বেড রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিতেন।
আমিও স্বপ্ন দেখতাম, বড় হয়ে আমিও এরকম করবো!
আহা! কি আনন্দময় ছিল সেই দিনগুলো!
"দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না।"
৭১ এ গণ্ডগোল হল। বাবা পালিয়ে গেলেন পাকিস্তানে। আমাদের একা ফেলেই!
নানু, মা , বোনকে ধর্ষণ করলো বাবার নিজ বন্ধুরাই!
আমার ছোট মামা, ছোট ভাই আর ছোট ভাগ্নীর জন্ম হল ওদের বীর্য থেকেই।
একা পেয়ে আমাকেও বাবার বন্ধুরা অনেকবার আমার পেছনে তাদের শক্ত জিনিস প্রবেশ করিয়েছে। আমি অসহ্য ব্যথায় ককিয়ে উঠতাম!
কিন্তু তারা থামতো না। সাদা সাদা কি যেন আঠার মত লেগে থাকতো আমার সারা পাছায়। ব্যথায় সারাদিন হাঁটতেও পারতাম না।
৭৫ এ বাবা আবার দেশে এলেন! বীরবেশে!
এরপরতো শুধু স্বপ্ন!
বাবার গাড়ীতে উড়ত পতাকা!
অবশ্য বাবা প্রতিদিন সকালে আগে সেই পতাকায় থুতু দিতেন!
বাবার দামী গাড়ী, বাড়ী সব হল এবার!
সাথে গোলাপের মত দেখতে একজন হলেন বাবার বেস্ট ফ্রেন্ড। অনেকে বলে উনারা নাকি আরো গভীরে চলে গিয়েছিলেন!
কিন্তু, আবার ঝড়!
আবার প্রলয়!
এবার বাবা পাকিস্তানে পালানোরও টাইম পেলেন না!
তাকে যেতে হল জেলে। সেদিন গিয়ে দেখি কোমর বাঁকা করে হাঁটছেন, পাশের সেলের কয়েদী বলল সারারাতে নাকি ৮ টা রাজহাঁসের ডিম বাবার পাছায় ঢোকানো হয়েছে!
ইয়া আল্লাহ্! ! ইয়া পরওয়ারদেগার!
এই জালিমদের তুমি ধ্বংশ করে দাও!
ও হ্যাঁ, ভোর হয়ে গেছে। ঐ যে! বাবার লাশ আসছে!
বিঃদ্রঃ গেলমান আযমের পরিবারের সত্য ঘটনা অবলম্বনে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৬