চোখ বন্ধ করে স্যাড ভায়োলিন মিউজিকটা শুনলে অন্য একটা ভুবন ভেসে ওঠে,চিন্তায়।জাগতিক সবকিছু পেছনে ফেলে আমি ছুটছি অন্যভুবনের পথে।ফেলে যাচ্ছি সব ঐকতান।আর কোনদিন ফেরা হবেনা।এটা মনের মধ্যে নাড়া দিতেই একটা ধাক্কা লাগে। স্যাড ভায়োলিনের আওয়াজ আরো গাঢ় হতে থাকে।আমি দেখতে পাই অনেক কিছু। কারো স্মৃতিচারণ। কারো চোখের পানি।কারোবা পাথর হয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
আরো দেখতে পাই আহাজারির অকৃত্তিমতা।সেই শহরের ডাক উপেক্ষা করে আমি যাচ্ছি।যে শহর আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে মানুষকে। সব মায়া কাটিয়ে আমি ক্রমে ক্রমে নিঃশব্দ হচ্ছি। আমি ছুটছি এক অজানা ঠিকানায়। কেউ কেউ আমার নিশ্চুপ নিশ্চলতা দেখে বড্ড নিশ্চুপ হয়ে গেছে। স্যাড ভায়োলিন কড়া সুরে সামনে এগোয়। আমি দেখতে পাই প্রিয় ট্যাব,সেলফোন আমাকে মিস করছে।প্রিয় বই আমার স্পর্শ পাবার অধীর অপেক্ষায় মুষড়ে পড়েছে। প্রিয় ক্যানভাস তখনও আমার অপেক্ষায়। যেন আরেকটু দেরী হলেই শাসানোর প্রস্তুতি নেবে।
আর প্রিয় মানুষদের চোখেমুখে এমন একটা বিষন্নতা যাতে খুব সহজেই প্রতিয়মান হয় তাদের বুকের একপাশ যেন হারিয়ে গেছে। স্যাড ভায়োলিনের করুণ সুর আমার চিন্তনে এমন এক ভুবনের ছবি একে দেয় যেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়।যেখানে গেলে কেউ ফিরে আসার কোন পন্থা জানেনা।যারা কোনদিন আমাকে দেখেনি অথচ আমাকে চিনতো তাদের বুকেও এক অদ্ভুত ব্যথা।আমি দেখতে পাই প্রিয় স্ট্যাটাসবার আমার আঙুলের স্পর্শ পেতে বড্ড ব্যাকুল।
আনমনেই ভেবে ফেলি প্রিয় কন্ঠ আর শোনা হবেনা।আর আড্ডার ঝড়ে ভাসবোনা।কিংবা আর কোনদিন আমি হাসবোনা।বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ছাদের যে কর্ণারটায় বসতাম সেখানে বসা হবেনা। খুব দ্রুত রিপোর্ট লিখার তাড়া থাকবেনা। প্রিয় লাইব্রেরীতে আসা হবেনা। এরকম আরো অসংখ্য না।
স্যাড ভায়োলিনের সুর থেমে যায়।আমি চোখ খুলি। দেখি চোখের জলে ভিজে গেছে প্রিয় শার্ট। কিন্তু এমন কি হবার কথা ছিলো?