somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাভ হলো কার ??? ক্ষতিতো সীমাহীন!!! প্রসঙ্গ ডেসটিনি।

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকটি মিডিয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগ আর লাগাতার অপপ্রচারে ১৫ মাসেরও বেশী সময় ধরে আটকে রাখা হয়েছে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যাংক একাউন্ট। আটকে রাখা হয়েছে তাদের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে। অথচ এই দীর্ঘ সময়েও অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি দুদক। অভিযোগকারী ও সাক্ষী না পাওয়ায় মামলার কোন চার্জশিটও দেয়া হয়নি। তদন্ত করার আগে, কোন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই সব বন্ধ করে দিয়ে ৪৬ লক্ষ মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ, বিনিয়োগ এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের রুজী রোজগারে লাথি দিয়ে লাভ হলো কার? জানি না । তবে ক্ষতি হয়েছে সীমাহীন। মানবিক বিপর্যয় ডেসটিনিকে কেন্দ্র করে ২৫ লক্ষ লোকের পেশা ছিল ডাইরেক্ট সেলিং। এদের অনেকেই ১২ বছর ধরে এটিই করেছেন। এখন ১৫ মাস
ধরে তারা বেকার। এই ২৫ লক্ষ পরিবারের প্রায় এক কোটি মানুষ গত দুটি ঈদ
করতে পারেন নি। এবারও পারবেন না। ঈদ করা তো দূরের কথা। এদের অনেকেই
না পেরে শহরের বাসা ছেড়ে পরিবার গ্রামে পাঠিয়েছেন। বাচ্চার স্কুল ছাড়িয়েছেন টাকার অভাবে। বাবা মার ওষুধের টাকার ব্যবস্থাও করতে পারেন না অনেকেই। জমি জামা সঞ্চয় সব বিক্রি করে কোন ভাবে টিক আছেন তারা। গার্মেন্টসের শ্রমিকদের চেয়েও খারাপ অবস্থা তাদের। কোন অপরাধ প্রমাণের আগেই দুদক এই শাস্তি দিয়েছে তাদের। চাকরী হারিয়েছেন ৯০ হাজার মানুষ ডেসটিনি কোম্পানীর নয়,
ডিস্ট্রিবিউটরদের নিজস্ব অফিস ছিল দেশজুড়ে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার অফিস
বন্ধ হয়েছে অর্থনৈতিক কারণে। প্রত্যেক অফিসে অন্তত তিনজন করে কর্মচারী ছিল
( অফিস এসিস্ট্যান্ট, অফিস এক্জিকিউটিভ এবং একজন একাউন্টেন্ট)। অফিস বন্ধ হওয়ায় এই ৩০ হাজার অফিসের ৯০ হাজার কর্মচারী চাকরী হারিয়েছেন। এরা ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটর না । এরা ছিলেন স্রেফ এই অফিসগুলির কর্মচারী। অফিসগুলোকে কেন্দ্র করে চা স্টল আর রেস্টুরেন্টের যে রমরমা ব্যবসা ছিল সে ব্যবসার ক্ষতি হিসাব কেই বা জানে? আর আটকে আছে ডেসটিনির বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করা টিকাদার ও সাপ্লায়ারদের কোটি কোটি টাকা। ডিস্ট্রিবিউটরদের ক্ষতি ৩০ হাজার অফিস বন্ধ হওয়ায় ডেসটিনির নয় ডিস্ট্রবিউটরদের ব্যক্তিগত পুজি নষ্ট
হয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। ৭ মাস, এক বছর বসে বসে অফিস ভাড়া দেয়ার পর এগুলো বন্ধ করে দিতে হয়েছে দুদকের ধীরে চলো কৌশলের কারণে। বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি ডেসটিনিতে বিনিয়োগ করা প্রায় সাড়ে আট লক্ষ মানুষের এই ১৫ মাস সময় কেটেছে চরম দুশ্চিন্তার মধ্য। তারাও ক্ষতিগ্রস্ত। মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটির বিনিয়োগকারীরা গত তিন বছর ১০%, ১২%, ১৫% হারে লভ্যাংশ পেয়েছেন। কাজকর্ম ও একাউন্ট বন্ধ থাকায় তারা গতবছর কোন লভ্যাংশ পান নি। এ বছরও পাবেন না। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আগামী বছরেরটিও অনিশ্চিত। এখানে অনেক অবসরভোগী মানুষ আছেন এই লভ্যাংশই যাদের একমাত্র আয়ের উৎস। তারাও আছেন মানবেতর অবস্থায়। ডেসটিনির ক্ষতি অফিস ভাড়া, অফিস ব্যয়, কর্মচারিদের বেতন এবং অন্যান্য খরচের কারণে ডেসটিনি গ্রুপের ক্ষতি হয়েছে ৫০০ কোটি টাকার চেয়েও বেশী। নষ্ট হয়েছে অফিসের লক্ষ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র এবং গাড়ী। বন্দরে নষ্ট হয়েছে ৬৭ কোটি টাকার আমদানী করা পণ্য। সরকারের ক্ষতি ব্যাংক একাউন্ট আটকে থাকায় রাজস্ব বিভাগ ক্যাশ করতে পারেনি ৬৪ কোটি টাকার চেক। ডেসটিনি প্রতিমাসে গড়ে ৮ কোটি টাকা ট্যাক্স দিতো। সে হিসাবে ১৫ মাসে সরকার হারিয়েছে ১২০ কোটি টাকার রাজস্ব। ডেসটিনির ৪৬ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটরের প্রত্যেকেই তাদের কমিশনের ওপর ১০% কর দিত। গত ১৫
মাসে সেটিও পায়নি সরকার। আওয়ামীলীগের ক্ষতি ঘরে ঘরে চাকরী দেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল সরকারের। সেখানে ২৫ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটর এবং ৯০ হাজার কর্মচারী চাকরী হারিয়েছে অন্যায় পদক্ষেপে। এই প্রায় ২৬ লক্ষ পরিবারের প্রায় ১ কোটি মানুষ অভিশাপ দিচ্ছে কাকে? ৪৬ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউটরের পরিবারের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ তাদের চরম দূর্দশার জন্য দায়ী করছে কাকে? অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে ষড়যন্ত্র হয়েছে ডেসটিনির বিরুদ্ধে। এই ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে বিতর্কিত করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের এক বীর সেনানী জেনারেল হারুনকে এবং আড়াই কোটি মানুষের কাছে আওয়ামীলীগকে অভিশাপের বস্তুতে পরিণত করেছে ষড়যন্ত্রীরা।সেই সাথে বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি অংশের অর্থনৈতিক মুক্তির পথকে বিপর্যস্ত করা হয়েছে। কিন্তু ডেসটিনি এখন বাংলাদেশের এক বাস্তবতা। সুযোগ দিলে যে কোন সরকারেরই অর্থনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এরা হতে পারে সহায়ক শক্তি।

লিখেছেনঃ মাহমুদুল হাসান শামিম
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×