somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিটলারের নাৎসী জার্মানী , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ , এবং হলকাস্ট(HOLOCAUST)

১৪ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর অন্যতম একনায়ক যাকে সবাই একনামেই চিনে, নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই এডলফ হিটলার, এবং তার বাহিনীর নাম ছিল নাৎসী বাহিনী।

NAZI(নাৎসী) SIGN
নাৎসী ১৯৩৩ সালে জার্মানীতে প্রভাব বিস্তার শুরু করে । তাদের বিশ্বাস ছিল জার্মানীর উন্নতি স্বমৃদ্ধি কিছু পঙ্গু ও গরিব মানুষের জন্য আটকে আছে!! তারা দেখল বিশেষ ভাবে ইহুদী(jews)রা জার্মানীর জন্য আশঙ্কাজনক। তারা একে BIOLOGICAL THREAT বলে আখ্যায়িত করে। ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত নাৎসী জার্মান বাহিনী দ্বারা জার্মানী সহ গোটা ইউরোপে ইহুদী , জিপসি(roma), শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্দী দের যে গনহত্যা করা হয় তা আজ হলকাস্ট(HOLOCAUST) নামে পরিচিত। তবে ইহুদী রা ছিল PRIMARY VICTIM. প্রায় ছয় মিলিয়ন ইহুদী তখন নাৎসী বাহিনীর হাতে মারা যায়। আর ও কয়েক মিলিয়ন মানুষ HOMOSEXUAL, সোভিইয়েত যুদ্ধে বন্দী, বাম রাজনীতিবিদ সহ নাৎসী বাহিনীর ঘৃণীত কর্মের শিকার হন।

হিটলারের জার্মান নীতি ও সূচনাঃ

এডলফ হিটলার ও নাৎসী বাহিনী


এডলফ হিটলার যখন ক্ষমতা দখল করলেন তখন জার্মানীর আর্থনৈতিক অবস্তা ছিল করুণ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঋন এর বোঝা মাথায় নিয়ে দেশকে পৃথিবীর ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র করার চিন্তা মাথায় ঢুকে ছিল এডলফ হিটলারের। দেশ থেকে তিনি অপ্রয়োজনীয় মানুষ সরানো ও ইহুদী হত্যা নীতি গ্রহণ করেন।
এডলফ হিটলার প্রথমেই সেন্ট্রাল ইউরোপে ক্ষমতা বাড়ানোর চিন্তা করেন। আস্ট্রিয়া কে যুক্ত করে ১৯৩৮ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যেই চেকস্লোভাকিয়া দখল করে নেন।নাৎসী বাহিনী তখন থেকেই বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষ হত্যা শুরু করে। নাৎসী বাহিনীর হাতে শুধু তখন ই প্রায় ৩০,০০০ জার্মান ও আস্ট্রিয়ান ইহুদী মারা যায়। এ জন্য তাদের অনেক গুলো ক্যাম্প ছিল, DACHAU ও KRISTALLNACHT ক্যাম্প ছিল অন্যতম।

নাৎসী বাহিনীর ক্যাম্প গুলো যেখানে মানুষ হত্যা করার গ্যাস চ্যাম্বার ছিল

এর পর ই ১৯৩৯ সালে নাৎসী বাহিনী পোল্যান্ড আক্রমন করে, যা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা।

গ্যাস চ্যাম্বার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-নাৎসী(AXIS) বাহিনী ও মিত্র(ALLIES) বাহিনীঃ
সেপ্টেমবর ১৯৩৯ সালে নাৎসী বাহিনী আক্রমনের কিছু সপ্তাহের মাঝেই পোলিশ আর্মি হেরে যায়।পোল্যান্ড কে সাপোর্ট করে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানীর উপর যুদ্ধ ঘোষনা করে। পোল্যান্ড-সোভিয়েত সীমান্তে জার্মান ও সোভিয়েত ইউনিওনের মাঝে একটি গোপন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।কিন্তু সোভিয়েত ইউনিওন ১৯৪১ পর্যন্ত অফিসিয়ালী নিউট্রাল ছিল।এডলফ হিটলার হাজার হাজার পোল্যান্ড নাগরিক কে হত্যার আদেশ দেন শুধু মাত্র জার্মান দের জন্য নতুন বাসস্তানের জায়গা করতে!! জার্মান পরিবার গুলো পোল্যান্ড এর খালি সম্পত্তি দখল করে নেয়। জার্মান কতৃপক্ষ ইহুদী জনগণ কে সামান্য কিছু জায়গায় বন্দী অবস্তায় সরকারের নজরদারীতে থাকতে বাধ্য করে।

নজরদারীতে থাকা কিছু বন্দী

এর পরবর্তী দুই বছরে নাৎসী বাহিনী ভয়ংকর আকার ধারন করে। তারা ডেনমার্ক এবং নরওয়ে মানে নিম্নবর্তী এলাকা গুলো আক্রমন করে। বেলজিয়াম, নেডারল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গ হল সেই নিম্নবর্তী এলাকা। একই সাথে ফ্রান্স আক্রমন করে বসে জার্মানী! তখনই ইটালী জার্মানীর Axis পার্টনার ফ্রান্স ও ব্রিটেন এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে।
সোভিয়েত ইউনিওন ও তখন বসেছিল না ।সোভিয়েত তখন ফিনল্যান্ড আক্রমন করে এবং লিথুয়ানিয়া , ল্যাটভিয়া, ইস্টনিয়া যাদের কে Baltic country বলা হয়,দখল করে নেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর ম্যাপ

স্লোভাকিয়া,হাঙ্গেরী,রোমানিয়া এবং বোল্গেরিয়া পরবর্তীতে ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া জার্মানীর সাথে যুক্ত হয়। ১৯৪১ সালের জুন মাসে জার্মানী সোভিয়েত ইউনিওন আক্রমন করে বসে চুক্তি ভঙ্গ করে।জার্মান বাহিনী সোভিয়েত ইউনিওন এর বেশ ভিতরে ঢুকে পরে।তারা ১.৫ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করে mass shooting এর মাধ্যমে। যার অধহিকাংশই ছিল ইহুদি নারী, পুরুষ ও শিশু। জার্মান বাহিনী সোভিয়েত ইউনিওন ও পোল্যান্ড এর মাঝখানে mass shooting এর জন্য ক্যাম্প খুলে।

mass shooting
কার্বন মনোক্সাইড(carbon monoxide gas CO) এবং যাইগ্লন বি গ্যাস( ZYKLON B gas HCN) ছিল প্রথমিক হত্যা করার প্রক্রিয়া। এগুলো তারা গ্যাস চ্যাম্বারে ব্যাবহার করত!

১৯৪২ সালের শেষের দিকে ও ১৯৪৩ সালের প্রথম দিকে সোভিয়েত বাহিনী কাউন্টার এটাক শুরু করে এবং তাদের জায়গা পুনুরুদ্ধার শুরু করে জার্মানীদের কাছ থেকে ।অন্যদিকে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স বাহিনী ও ফ্রান্স স্বাধীন করে ইটালির মেইনল্যান্ড আক্রমন করে জার্মানীর সীমান্তে পৌছায়। অর্থাৎ একই সাথে দুই দিক থেকে আক্রমনে জার্মানী আটকে যায়। জার্মানীর ক্যাম্প গুলো তে তখন খাদ্যাভাবে বেশির ভাগ বন্দীই মারা যায় যাকে বলা হয় MASS DESTRUCTION।১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে এইসব ক্যাম্প এর আর্ধেক মানুষ ই মারা যায়।সোভিয়েত ইউনিওন পোল্যান্ড দখল করার পর ১৯৪৫ সালের মে(may) মাসে কোন শর্ত ছাড়াই মিত্র বাহিনীর কাছে জার্মানী আত্মসমর্পন করে।
জার্মানী সহ ইউরোপের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ইহুদী নাৎসী জার্মান বাহিনীর হাতে মারা যায় । জার্মান নাৎসী বাহিনীর এই নিস্বংসতা HOLOCAUST নামে পরিচিত।

মে(MAY) ১-৮ এই দিন পালন করা হয়।


মানুষ কোনদিনই যুদ্ধের পক্ষে নয়। উপরের পেইন্টিং টা দেখুন, এক মায়ের কোলে কোমলমতি শিশু। মানুষ এইরকম ভাবেই বাচঁতে চায় যেমন ভাবে মায়ের কোলে একটি শিশু নিরাপদে থাকে। বাট বিলিভ ইট অর নট , দিস ইজ এ পেইন্টং বাই হিটলার :|
বলা হয় যে ইতিহাস কখন পরাজিত কে নিয়ে লিখে না। এডলফ হিটলার এর জন্য এর কতটুকু প্রযোজ্য বলা সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২১
৩৩টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×