দেশের সবচেয়ে বড় যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার গুরুর মৃত্যুতে খুশি হবার কথা। কিন্তু হতে পারছি না। সেজন্য দুঃখিতও বোধ করছি না।
বরং মনটা বিষাদে তিতা হয়ে আছে।
সংক্ষেপে বললে, আমাদের শহীদসংখ্যা তিরিশ লক্ষ থেকে অনেক অনেক কম হতো যদিনা একাত্তুরের এপ্রিলে 'শান্তিবাহিনীর' সৃষ্টি হতো।
হযরত সুলাইমানকে (আঃ) (বাইবেল অনুযায়ী কিং সলোমানকে) আল্লাহ প্রচন্ড ক্ষমতা দান করেছিলেন। তাঁকে শুধু মানুষই না, পৃথিবীর সব জীব-জন্তুর সম্রাট করেছিলেন। সেই সুলায়মান (আঃ) রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়ে সবসময়ে মাথা নিচু করে হাঁটতেন। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, "আমার পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে একটি পিপড়াও যদি অন্যায়ভাবে মারা গিয়ে থাকে, তবে আল্লাহর কাছে সেজন্যও আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।"
যেখানে একটি সামান্য পিপড়া মারার অপরাধে একজন নবীকেও আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হয়, সেখানে তিরিশ লক্ষ মানুষ মারা হয়েছে! তিরিশ লক্ষ!!
নারী ধর্ষণ এবং লুটপাটের হিসেবতো এখনও করিইনি।
এই লোকটা কিভাবে স্বাধীনতার তেতাল্লিশ বছর পর সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রাকৃতিক নিয়মে মরার সৌভাগ্য লাভ করে?
আমি নিশ্চিত এই ঘটনায় পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাগণ, শহীদ জননী-বীরাঙ্গনাগণ সবাই অভিমানে চোখের জল ফেলছেন। বুকের ভিতর আর্তনাদ চেপে রাখার চেষ্টা করছেন। বাঙ্গালি জাতি যে তাঁদের নিয়ে আরেকটি নিষ্ঠুর রসিকতা করলো!
আজকে আমাদের জন্য ভীষণ লজ্জার দিন। শোকের দিন। মাতমের দিন।
ষোলই ডিসেম্বর যদি আমাদের বিজয় দিবস হয়ে থাকে, তবে এখন থেকে তেইশে অক্টোবরকে আমাদের 'পরাজয় দিবস' হিসেবে পালন করা উচিৎ।
জাতীয় সংসদে অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব উন্থাপনের আহ্বান জানাই।
মাননীয় স্পীকার, আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে পারিনি। তিরিশ লক্ষ খুনের সাথে বেইমানি করেছি। আমরা খুবই অক্ষম জাতি! জনাব গোলাম আযমের স্বাভাবিক মৃত্যুতে আমরা ভীষণভাবে শোকাভিভূত।
আরও লেখা পড়তে:
https://www.facebook.com/groups/canvasbd/