somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের দেশের সম্রাট বিপদের সময়ে জাঙ্গিয়া পড়িবেন না।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খবর শুনলাম, বাংলাদেশে, বিশেষ করে ঢাকায় নাকি হ্যালোউইন উৎসব পালিত হচ্ছে।
রোমান হতে চাইলে কাউকে রোমে যেতে হয়। বাঙ্গালিই বোধয় পৃথিবীর একমাত্র জাতি যাদের অন্যের সংস্কৃতি নকল করতে কোথাও যেতে হয় না।
প্রবাসী বাঙ্গালিদের জন্য হ্যালোউইন, থ্যাংকস গিভিং ইত্যাদি পালন করা যথেষ্টই যৌক্তিক। তাঁদের জন্য এটা আসলেই ছুটির দিন, উৎসবের দিন। এই বাহানায় একটা গেট টুগেদার হয়ে যায়। সেই সাথে 'যেমন খুশি তেমন সাজা' শুধু একটা বাড়তি ফ্লেভার দেয়।
বাংলাদেশের 'ই-স্মার্ট' পোলাপানরা এই দিনে কেন লাফালাফি করে সেটা মাথায় ঢুকে না।
সেখানে 'হ্যালোউইন পার্টি' এখন একটা "কুল ফ্যাক্টর" হয়ে গেছে। না পালন করলে আপনি ক্ষ্যাত।
বুঝিনা বিদেশীদের ভাল দিকগুলো আমাদের চোখে কেন পরেনা!
এরা আঠারো বছর হবার পর থেকে নিজের পায়ে নিজে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। রেস্টুরেন্টে সার্ভ করে, কিচেনে ডেকচি মাজে, কেউ কেউ টয়লেট পর্যন্ত পরিষ্কার করে। তবু নিজের খরচ নিজেই বহন করে। বাবা মায়ের হাতের দিকে চেয়ে থাকে না।
আমাদের দেশের মতন না যে, কাউকে "কী করছো?" জিজ্ঞেস করলে দাঁত ক্যালিয়ে জবাব দেয়, "আমি এখনও বাপের হোটেলে খাই।"
বলার সময়ে বিন্দুমাত্র লজ্জাও বোধ করেনা।
বিদেশীরা সব কাজকে শ্রদ্ধা করতে শিখে। এখানে রাস্তায় ঝাড়ু দেয়া একজন যুবতী কিংবা অন্যের বাগানের ঘাস পরিষ্কার করা কোন যুবককে যদি তাঁর কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সে সাথে সাথে বলবে, "I am proud of my job!"
এটা স্রেফ কথার কথা নয়। যদি "proud" ফিল না করতো, তাহলে চাকরি ছেড়ে চলে যেত। এখানে চাকরি ধরা, ছাড়া, ছাটাই হওয়া কোন বিষয়ই না।
আর আমাদের দেশের অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ছেলে মেয়েদেরও হোটেল রেস্টুরেন্টে কিংবা দোকানে কাজ করতে গেলে জাত চলে যায়! বড় অফিসারদের পোলাপানের কথা না হয় বাদই দিলাম।
আমার ছোট চাচা লস এঞ্জেলেসে লেক্সাসের ডিলারশিপে কাজ করেন। ফাইন্যান্স ম্যানেজার। তাঁর ডিলারশিপের মালিককে অনেকেই চিনতে পারেন, পেনস্কি (Penske Corp.) কর্পোরেশন।
জনাব পেনস্কির ছেলে যখন লেখাপড়া শেষে তাঁর বাবার কাছে এসে চাকরি খুঁজতে আসেন, তখন তিনি ছেলেকে নিজের ডিলারশিপের সবচেয়ে নিম্নশ্রেণীর কাজ, গাড়ি ধোয়া মোছার চাকরি দেন। এখানে উল্লেখ্য, জুনিয়র পেনস্কি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করেই পিতার কাছে এসেছিলেন।
তারপর সেই কার-ওয়াশ থেকে ধাপে ধাপে কাজ শিখে শিখে তিনি চেয়ারম্যানের পজিশনে উঠে আসেন। লাভের লাভ হয়েছে এই যে, তিনি সব ডিপার্টমেন্টের কাজই জানেন এবং বুঝেন। ভংচং বুঝিয়ে তাঁকে বোকা বানানো এখন প্রায় অসম্ভব!
আমাদের দেশের মত না যে যোগ্যতার খাতায় মা বাবার পরিচয়ই যথেষ্ট।
অ্যামেরিকা যে দেড়শ বছর ধরে বিশ্ব শাসন করছে, সেটা কী আসমান থেকে ওহী নাজেল হয়েছিল বলে? জ্বী না। সেটা নিজের কাজকে শ্রদ্ধা করতে শিখেছে বলে।
কিন্তু আমাদের চোখে এসব পড়বে না। আমরা কেবল আজাইরা জিনিসই নকল করবো।
নকল লইয়াও একখানা ঘটনা বলিয়া লেখা শেষ করা যাক।
একবার এক ছেলে ইতিহাস পরীক্ষায় সামনের ছেলের খাতা দেখে লিখছিল। সামনের ছেলে লিখলো, "সম্রাট শাহজাহান বিপদের সময়ে ভাঙ্গিয়া পড়িতেন না।"
নকলবাজতো অন্ধ, সে চোরা চোখে যা পড়তে পেরেছে তাই লিখেছে।
"সম্রাট শাহজাহান বিপদের সময়ে 'জাঙ্গিয়া' পড়িতেন না।"
আমাদের স্মার্ট জেনারেশন যে হারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে, দেখা যাবে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের দেশের সম্রাট বিপদের সময়ে জাঙ্গিয়া পড়িবেন না। আফসোস!
https://www.facebook.com/groups/canvasbd/
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৫৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×