somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনবিক বোমা সৃষ্টির পরে বাঙালির মোবাইলে ক্যামেরার সংযুক্তিই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা

২৮ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেদিন অফিসে আসার সময়ে হাইওয়েতে প্রচন্ড ভিড় ছিল। বুঝে গেলাম সামনেই একসিডেন্ট হয়েছে। একটু পরেই দেখলাম সাইরেন বাজিয়ে এম্বুলেন্স, ফায়ার ট্রাক ছুটে চলেছে। এই ভিড়ের মধ্যেও সবাই সরে গিয়ে রাস্তা করে দিচ্ছে। এমনিতেও তাঁদের জন্য ইমার্জেন্সি লেন থাকে। ওটা সবসময়েই ফাঁকা থাকে। ভিড় যতই হোক না কেন, ইমার্জেন্সি লেনে ফাজিলের মতন গাড়ি তুলে দিলে বিরাট অংকের জরিমানা গুনতে হয়।
তো ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে দেখি আসলেই ভয়াবহ একসিডেন্ট হয়েছে। এক গাড়ির উপর আরেকগাড়ি উঠে গেছে, এটার ধাক্কায় ওটা দুমড়ে মুচড়ে গেছে। পুলিশ আমাদের একদিকে চলাচলের ছয় লেনের রাস্তার তিন লেনই বন্ধ করে দিয়েছে। বাকি তিন লেন দিয়ে সবাই গাড়ি চালিয়ে যে যার অফিসে যাচ্ছে।
পাশ কাটিয়ে যাবার সময়ে দেখলাম দুমড়ানো মুচড়ানো গাড়ির পেছনের সিটে একটি শিশু বসা। কৌতূহলী দৃষ্টিতে বাইরের দৃশ্য দেখছে। তাঁর বয়স আমার ছেলের চেয়েও কম।
প্যারামেডিক্স, উদ্ধারকর্মীরা যে যার কাজে ব্যস্ত। আহতদের ঝটপট বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। প্রয়োজন বুঝে হাসপাতালে ছুটছেন।
একটা গাড়িও থামছে না। একজন মানুষও তামাশা দেখছে না। জানে এখানে তাঁদের কিছুই করার নেই। উল্টো ভিড় করলে আহত মানুষদের উদ্ধারকাজে ঝামেলা সৃষ্টি করা হবে। তাই সবাই ভিড় ফাঁকা করায় ব্যস্ত। এবং ভিড় ফাঁকা করার প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে নিজেকে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা।
ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, এই ভিড়ের মধ্যে কয়েকশো বাঙালি আছেন। যারা ড্রাইভ করে ভিড় খালি করছেন।
বিদেশে বাঙালি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল জাতি। আমাদের যাবতীয় ইতরামি আমাদের নিজেদের দেশে।
বনানীর টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় যা আরেকবার প্রমাণিত হলো।
ভবনে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে পারছে না "উৎসুক জনতার" ভিড়ে। উৎসুক জনতা কী করছে? মোবাইল ফোন বের করে ছবি তুলছে। লোকজন আগুনে পুড়ে মরছে, এই জানোয়ারগুলো ছবি তোলায় ব্যস্ত। তুই শালা এই ছবি দিয়ে কী করবি? তুই কী ফটো সাংবাদিক? না। তুই বদমাইশ টা ফেসবুকে আপলোড করবি। কিছু লাইক পাবি। এর বেশি কিছুই হবেনা। মাঝে দিয়ে তোর কারনে, হ্যা, তোদের মতন নির্বোধ, উৎসুক জনতার কারণেই আজকে কিছু মানুষ কবরে গেলেন।
তোকে তোর লাইক সহ কবরে পাঠানো উচিৎ ছিল।
প্রিয় বাঙালি ভাইয়েরা ও বোনেরা, আল্লাহর ওয়াস্তে একটা কথা মাথায় গেঁথে নিন।
যখন কোন দুর্ঘটনা হতে দেখবেন, তখন দয়া করে সেখানে ভিড় জমাবেন না। মানুষের মৃত্যুদৃশ্য দেখা এমন কোন সুখকর অভিজ্ঞতা না। এটা আপনার নিজের মস্তিষ্কেই চাপ ফেলবে। আর তারচেয়েও বড় কথা, কোন ঘোড়ার আন্ডা উপকার করতে না পারলে আপনার উপস্থিতি উল্টো সেখানে ঝামেলারই সৃষ্টি করবে। বিপদ আরও বাড়াবে।
আর দয়া করে সব কিছুর ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোডের চেষ্টা নিবেন না। এইটা বর্বরতা, অসভ্যতা, অমানবিকতা। আল্লাহর ওয়াস্তে মানুষের মতন আচরণ করেন। প্লিজ!
আনবিক বোমা সৃষ্টি মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনার একটা। অবাধে অটোমেটিক রাইফেল বিক্রিও একইরকম দুর্ঘটনা। আর বাঙালির মোবাইলে ক্যামেরার সংযুক্তি তারচেয়েও বড় দুর্ঘটনা। ইতরামির আগুনে ঝড়ো হাওয়া বইয়ে দিয়েছে এই প্রযুক্তি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:০৩
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×