somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেসিপি পোস্ট ২ – গোলাপ ফুল পিঠা

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগেই বলে রাখি, এইটা কোন শর্টকাট রান্না না। অনেক সময় আর পরিশ্রম দরকার। সুতরাং কোন স্পেশাল মেহমান আসলে এটার আয়োজন করতে পারেন। গত শুক্রবার এরকম একটা দাওয়াতের জন্য বানিয়েছিলাম।
কি কি লাগবেঃ
১। তরল দুধ- ২ কেজি
২। ময়দা- ২ কাপ + রুটি বেলার জন্য
৩। চিনি- ১ কাপ
৪। লবণ- ১ চিমটি
৫। ডুবো তেলে ভাজার জন্য তেল
চুলায় দেড় কাপ দুধ আর লবণ দিয়ে বসালাম। ফুটে উঠলে ময়দা দিয়ে জোরে ঘুটা দিলাম। দুধের ঘনত্ব অনুযায়ী ময়দার পরিমাণ সামান্য এদিক ওদিক হতে পারে। এরপর নামিয়ে হাত দিয়ে মথে নরম খামির বানালাম। একটুও পানি দেয়া যাবে না। এরপর এক খামচি খামির নিয়ে রুটি বানালাম। রুটিটা বেলতে একটু কষ্ট হয়েছে, কারণ দুধে গোলানোর কারণে খামিরটা খুব ইলাস্টিক হয়ে গেছে। যা হোক, রুটির পুরুত্ব হবে একটু বেশী। মেলামাইন বা চিনামাটির প্লেট যেরকম পুরু হয় সেরকম। এবার রুটি থেকে ছোট্ট করে কাটলাম। ছবিতে দেখেন। আমি কাপ দিয়ে কেটেছি। এই মাপের অন্য কিছু দিয়েও কাটা যায়। কেটে ঘষা দেয়া যাবে না। তাহলে কিনার মোটা হয়ে যাবে। এইরকম তিনটা ছোট্ট রুটি দিয়ে একটা পিঠা হবে।
পরপর তিনটা ছোট্ট রুটি একটার উপরে আরেকটা রাখলাম। এবার শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে মাঝখানে একটু চাপ দিলাম যেনো তিনজন লেগে যায় কিন্তু এত্তো জোরে আবার দেয়া যাবে না যে নিচের পিঁড়িতে লেগে যায়। এবার ছুরি দিয়ে ছবির মত চারদিকে চারটা কাটা দিলাম যেনো মাঝের একটু জায়গা বাদ থাকে। এইবার সবচে উপরে রুটিটার একটা ভাগ উঠিয়ে দুই কোণা এক্ত্র করে মাঝের গর্তটাতে চেপে বসালাম। এরপর এর ডানের ভাগটা উঠিয়ে দুইকোণা কেন্দ্রের যত কাছে পারা যায় এনে চেপে বসালাম। শুনতে বিদঘুঁটে লাগছে? ছবি দেখেন, সহজ হয়ে যাবে। এইভাবে পিঁড়ি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সবগুলো ভাগ উঠিয়ে বসালাম। শেষের চারটার কোণাগুলো ভালো করে লাগিয়ে দিতে হবে, নইলে পিঠা খুলে আসবে।

আর একটা ডিজাইন বানিয়েছিলাম। একটা ছোট্ট রুটিকে ছবির মত অর্ধেক করে দুই কোণা একসাথে লাগিয়ে দিলাম একটা টিপি। এরপর বাইরের পার্টটা বাইরের দিকে ভাঁজ করে দিলাম একটু। কোন সময়েই জোরে চাপ দেয়া যাবে না। ব্যাস হয়ে গেলো সীমের ফুল।

দেখেন আমি কত্তগুলা বানাইসি!! জান বের হয়ে গেসিলো।

বাকি দুধটা চিনি দিয়ে চুলায় বসালাম। প্রায় এক কেজির মত হলে নামিয়ে রাখলাম।
এবার বানানো পিঠাগুলাকে দুবো তেলে ভাজবো। প্রথমে চুলায় বেশী করে তেল দিয়ে গরম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে চুলাটা কমিয়ে দিলাম। মাঝারী আঁচে রেখে একটা একটা করে দিয়ে ভাজলাম। দুই পাশ ভালোমত ভাজতে হবে। একদম বাদামী আর শক্ত হবে। সব ভাজা হলে ঠান্ডা করে নিলাম।
একটা গর্ত পাতিল নিলাম। আমি দুধের পাতিলেই করেছি। সবগুলা পিঠা একটার পর আরেকটা সাবধানে সাজিয়ে রাখলাম। খালি জায়গা যেনো কম থাকে এজন্য গোলাপগুলোর ফাঁকে সীমফুল দিয়ে ভরাট করে করে রেখেছি। কথাটা সিভিল ইঞ্জিনীয়াররা ভালো বুঝবেন। সব রাখা হলে ঘন করা দুধটা ঢেলে দিলাম। এইভাবে সারারাত থাকবে। সকালে হাত দিয়ে উপরেগুলো নিচে আর নিচেরগুলো উপরে দিয়ে আরো ঘন্টাখানিক রাখলাম। এবার কিন্তু পিঠাগুলা অনেক নরম হয়ে গেছে।
সাবধানে উঠিয়ে ছড়ানো কাঁচের ডিশে সাজিয়ে রাখলাম। মোট ২ কেজি দুধের পিঠায় আমার এরকম তিনটা ডিশ ভরে গেছে। পিঠা সাজিয়ে পাতিলের বাকি দুধগুলো সমান পরিমাণে তিনটা ডিশে ঢাললাম। উপর দিয়ে ঢালার সময় ফুলগুলোর উপরে ঢেলেছি যেনো ভেতরে যায়। সব কাজ শেষ।
এই শেষ কাজটা করেছি সকাল ৯টায় আর খাওয়া হয়েছে বিকাল ৩টার দিকে। পিঠাগুলা একদম নরম হয়ে ইয়াম্মী হয়েছিলো। সবাই যেভাবে গপাগপ খাচ্ছিলো আমি বানানোর সব কষ্ট ভুলে গেছি। আপনারা কেঊ বানালে জানিয়ে যাবেন। আর কোন সমস্যা হলেও।
ছবি লেখার মাঝে দেয়ার চেষ্টা করেছি। মনে হয় যায় নাই। আমি সরি। এমনিতেই প্রতিটাকে রিসাইজ করতে গিয়ে আমার জান শেষ!!!
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×