উলঙ্গদশা থেকে মানুষ কাপড় পড়তে শিখলো লজ্জাস্থান বা শরীর ঢাকতে নয়। শরীর ঢাকার প্রয়োজনই আসতোনা কোনোদিন যদিনা 'পোশাকি সভ্যতা' সংজ্ঞায়িত হতো সভ্যতার পুস্তকে। অথবা যদি শুধু সভ্য হতো মানুষের চর্ম-চক্ষু। মানুষ পোশাক ব্যবহার শুরু করে আবহাওয়া আর জলবায়ুর সাথে সহ-অবস্থান করতে।
সাতটি মহাদেশের আবহাওয়া আর জলবায়ুর নিপুণতার প্রেক্ষিতে কালের যাত্রায় আসে শতশত পোশাকের ধারা। উঠে আসে রংধনুর সাত সহস্র রঙের রঁজনবৈচিত্র্য।মানব সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে দৃষ্টি ভঙ্গির অবনতি ঘটে পাল্লা দিয়ে।
তবুও যাক, পোশাকের রঙের রঁজনবৈচিত্র্য আর পোশাকি সম্ভ্রম; এমনকি পোশাকি সভ্যতার গায়েও চাদর ছড়িয়ে দেয় ধীরে ধীরে। এরই কোনো এক উন্নতির স্তরে মাথা বা মধ্যাঙ্গুলি উঁচু করে দাঁড়ায় সেই পুরাতন আর অদৃশ্যের ভয়ে ভীত 'ধর্মীয় অনুভূতি'। কর্মের ধার ধারেনা যে ধর্ম এই সংস্কৃতি তাদেরই কর্ম বা ধর্ম। দৃশ্যমান ইতিহাস, ক্রমধারা বিকাশ আর সংস্কৃতি; সব মুছে দিয়ে অদৃশ্যের ভয়ে জীবনের বলিদান।শীতপ্রধান দেশে যখন রাসপুটিন বাধ্য হয়ে বসে মূত্র বিসর্জন করে, তখন তাহারা গেরুয়া পোশাকে সৃষ্টিকর্তাকে মানবহীন রাস্তায় খুঁজিয়া বেড়ায়। গেরুয়ার নিচে শরীর উষ্ণকরণ অন্তর্বাস তাহারা পরিধান করেন কিনা জানিনা, না করিলে তাহারা মহামানব'ই বটে। সাদা আলখেল্লা পরিহিত অন্যদলের গিড়া উন্মুক্ত রাখার কথা মরুর বুকে থাকলেও মেরুর নিকটেও তাহারা এই শীতেও হাঁটুঅব্দি লোমশ পদযুগল উন্মুক্ত করিয়া ঘোরেন। আমার মস্তিষ্কে ঘুরপাক খায়।
.
আমি বসে বসে ভাবি, নিয়ে কম্পিত হৃদয়'ও খানি ... শারীরিক অনুভূতির সাথে কি তাহারা মানবিক অনুভূতিটুকুও হারাচ্ছেন? ঈসা'র ভক্তকে মুসা'র ভক্ত বা মুসা'র ভক্তকে কৃষ্ণের ভক্ত বানাতে গিয়ে আর কত রক্ত দিয়ে সৃষ্টিকর্তার নাম লিখবো? সৃষ্টিকর্তা আজও পারলেননা নিজের নাম লিখতে এই অশিক্ষিত আমাদের বুকে।
- সেপ্টেম্বর, পশ্চিম ইউরোপে কোথাও।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৪৫