somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইভটিজার ডারউইনশিশু সমীপে

২০ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইভ টিজার শব্দটি ইদানীং বাংলা ডিকশনারীতে জায়গা করে নিয়েছে। ইংরেজী পত্রিকায় এদের স্টকার হিসেবে লিখেছে। পশ্চিমের লোকেরা বাংলাদেশকে আ কান্ট্রি অব স্টকারস ভাববে।পত্রিকারি দোষ কী ?

পথে ঘাটে উত্যক্তকারী বললে চর্যাপদীয় শোনায়। এক সময়ে এটাকে টন্টিং বলা হতো। মামুদের দেখতাম জিনস পরে বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে গীটার বাজাতে। আর শিস দিতে,মাউথ অর্গান বাজাতে।

রাজেশ খান্নার মেরি সপনেকি রাণী তুমি আওনাকো দেখে বাপ চাচাদের প্রজন্মের চারুচর্চার লক্ষণ দেখেছি।দাদুদের অশোক কুমারো কম ছিলেন না।

সারাজীবন ফিল্মের নায়িকাদের দেখলাম হিরোকে মাই ফুট বলতে বা চড় দিতে।এখন পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে কান ধরে উঠবস করাচ্ছে। চলচ্চিত্রের সঙ্গে জীবনের এতো ব্যবধান আগে দেখিনি।

এর কারণ সম্ভবত টিজিং এর মান অত্যন্ত নিম্নগামী হয়েছে। মামু গীটার বাজিয়ে টিজিং করতো চমতকার কোন প্রেমের গান গেয়ে। আর ভাগ্নে একেবারেই পশুর মতো আচরণ করছে। বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে।

তার মানে কী এই বাংলাদেশের দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে কিছু শিশু জন্মেছে যাদের ডারউইনের উলটো বিবর্তনের শিকার হতে হচ্ছে। এইসব শিশুর বাবা টাকার পিছে দৌড়াতে গিয়ে বাচ্চার দিকে নজর দিতে পারেনি। আর মায়েরা শাড়ী গয়না আর পরচর্চার চিন্তায় বাচ্চাটা একা হয়ে যাচ্ছে,নানারকম বিকৃতি তৈরী হচ্ছে খেয়াল করেন নি।

পৃথিবীতে সবচেয়ে জরুরী নিজের বাচ্চা মানুষ করা আর প্রতিবেশীর বাচ্চার খোঁজ খবর নেওয়া। অবশ্য আজকাল প্রতিবেশী বাচ্চার চেয়ে মায়েদের সঙ্গে হাই হ্যালো করার বেশী ইচ্ছা বাবাদের । বাচ্চাটা দেখে বড়োরা চোখে চোখে একটা বেদনা জানানোর চেষ্টা করছে, বেদনা থাকুক বা না থাকুক। বাচ্চারা যা দেখবে তাই শিখবে। মন খারাপের কথা সিনথিয়াকে জানাতে গিয়ে পুলিশ বা মাইকেল জ্যাকসন মামুদের খপ্পরে পড়ে যায়। একজন হতে পারতো সাঈফ আলী খান বা জিম ক্যারী হুরমতী হয়ে গেলো। বুকে নাম লিখে ছবি তুলে পত্রিকার পাতায় কলংক লেপনের বা হুরমতীর কপালে ছ্যাঁকা দেবার বিকৃত প্রক্রিয়া দেখে আমরা বুঝি শিশুদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা কতোটুকু।আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা যে জাড্য জরদগব ডেট এক্সপায়ার্ড ডেড পলিসি মেকারস সোসাইটি তৈরী করছে; তা এখন দৃশ্যমান আইন শৃংখলার অজুহাতে জন নির্যাতনের এই অন্ধকার যুগে।

আর আমজনতা রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিন্দু মাত্র সাহায্য না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পকেট মারের ওপর রাগ ঝাড়ছে।ইভ টিজারদের ঘৃণা জানাচ্ছে। ইভ টিজারদের আমরা হুরমতীর ছ্যাকা দিচ্ছি,কিন্তু কেন আপনার বাচ্চার বয়েসী ছেলেটার মনে বিকৃতি জন্মালো, সেটা সংশোধন করা যায় কিনা তা নিয়ে অভিযুক্তের পরিবার ছাড়া আর কেউ ভাবছে না।

ইভ মামণীদের কথা আর কী বলবো, সারাক্ষণ আব্বু আম্মুকে ঝগড়া করতে দেখে তাই ছেলেদের দেখলেই বিরক্ত লাগে। আর প্রত্যেক ইভের চোখে তার বাবা একজন নায়ক,ঐদিকে হলিউডের নায়ক বলিউডের নায়ক, ঢাকার বুমিং শো বিজ নায়ক, এতো নায়ক কে ডিঙ্গিয়ে এখন জুলিয়েটের কাছে পৌছানো কঠিন। ভার্চুয়াল জগতে পৌছানো সহজ। কিন্তু কান ধরে টেনে আনার ব্যবস্থা আছে।
সাইবার ক্রিমিনালদের জন্য সাইবার আইন তৈরী হচ্ছে। ফলে এইসব ঝামেলায় ছাত্র জীবনে না যাওয়াই ভালো।

যে সব ইভটিজাররা এখনো ধরা পড়ে নি তাদের আপাতত গার্লস স্কুলের দিকে না যাওয়াই উত্তম।বরং যে ইভকে ভালো লেগেছে তাকে ভালো লাগার আসলেই কোন কারণ আছে কিনা তা একুশবার ভাবা দরকার।

পশ্চিমে উইন্ডো শপিং বলে একটা ব্যাপার আছে। প্রেমের ভাবনাটাকে উইন্ডো শপিং এর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই ভালো। দোকান খোলা থাকলেই অযথা পয়সা নষ্ট। রিসেশন সব জায়গায়।

এখন ইভ হ্যাঁ বলা মানে একটা বাড়তি খরচ। ইভ কৃপণ নয়, কিন্তু ওর কস্টিউম মেকাপের খরচ আদমের চেয়ে বেশী।তাই কফির বিল আদমের ঘাড়ে পড়ে। এটা মিনিমাম ভদ্রতা। তারচেয়ে আপাতত কয়েকটা বছর ইভদের এতো পাত্তা না দিয়ে নিজের চরকায় তৈল দেয়া ভালো।

যদি পড়ালেখায় ফাঁকি না থাকে বা অল্প ফাঁকি থাকলেও যদি ইভদের প্রতি ছোকছোকানি কম থাকে,একটু সেন্স অব হিউমার থাকে, তাহলে আর অতো হ্যাংলার মতো ইভদের কাছে যাবার দরকার হবে না। ইভেরাই উইল গেট ইন টাচ।আর গার্লস স্কুলের ওই গম্ভীর বা হেঁয়ালী ইভ একমাত্র ইভ নয়। অনেক হাসি খুশী ইভ আছে। যাদের অত রূপের বা ড্যাডির ব্ল্যাক মানির গর্ব নাই। খুঁজলে বেশীর ভাগ ইভই ভালো।আমরা ফিল্ম দারা প্রতারিত, তাই ক্যাটরিনা কায়েফ খুঁজি, তারপর চড়-পুলিশ। এটা খুব সেকেলে।

রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের একজন শিক্ষক বলেছিলেন বাগানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফুলটা দূর থেকে দেখবে, যদি ছিঁড়ে নিতে চাও ওটা বাদে অন্য যে কোন টাই নিরাপদ।

স্যারের এই কথার প্রধান ভোক্তা ছিল আমাদের এক বন্ধু।এখন পুলিশ সার্ভিসে, বউ বাচ্চা নিয়ে খুশী। ঘুষ খায়না। ভালো অফিসার। সে এক স্যারের মেয়েকে একটু পছন্দ করে ফেলেছিল। সারদা পাইলট হাইস্কুলের পথে যাওয়া ঢাউস বাসের জানালায় এক ইভকে দেখে সে মেরি সাপনে কী রাণী তুমি আওনাকো গেয়ে ফেলেছিল। জলপাই কায়দায় ওকে এক্সট্রা ড্রিল দেয়া হয়েছিল। আর সিভিলিয়ান কায়দায় ওই ফুলের গল্পটা বলেছিলেন আমাদের বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক।

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×