প্রতিবার রমজান এলেই পবিত্র কোরআন শরীফ বাংলা অর্থ ও তাফসীর সহ(ইবনে কাসীরেরটা) পড়ি । এবারও তার ব্যতিক্রম নয় ।
তো দুইদিনে ত্রিশ পৃষ্ঠার মতো পড়লাম। এরপর এলোমেলো উল্টিয়ে আরো দশ পৃষ্ঠা পড়লাম। সবখানেই যে জিনিসটি খেয়াল করলাম তাহল , আল্লাহ তায়ালা কুরআনে যত ভয়াবহ শাস্তির কথাই বর্ণনা করেছেন না কেন ঠিক তার পরবর্তী আয়াত সমূহে ক্ষমার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন আল্লাহ। অর্থাৎ শাস্তি দেয়াটা আল্লাহর ইচ্ছে না, মানুষ যাতে ক্ষমা পায় সেটাই আল্লাহর উদ্দেশ্য ।
সূরা আল ইমরানের ১৩৫ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী আল্লাহ সকল অপরাধীকে মাফ চাইলে(সঠিক প্রক্রিয়ায়) ক্ষমা করে দেন ।
আল্লাহর ৯৯ টা গুণবাচক নামের একটি কিন্তু গফুরুর রাহিম অর্থাৎ সর্বাধিক ক্ষমাশীল । আরো দারুন ব্যাপার হলো, আল্লাহর ৯৯ টা গুণবাচক নামের তিনটার অর্থই হলো তিনি ক্ষমাশীল(গফুরুন, গাফ্ফার, আওউফ) !!!
এই বিষয়টা একটু ভাবুন । আল্লাহর ৯৯ টা নামের ভিতর একই গুণের পুনরাবৃত্তি তিন তিন বার করা হয়েছে, যদিও বাকি গুন সমূহ একবার করেই বলা হয়েছে । কাজেই আল্লাহযে কতটুকু ক্ষমাশীল ঐটা সহজেই অনুমেয়।
সূরা আল জুমার , আয়াত নাম্বার ৫৩ তে আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন তিনি ক্ষমাশীল এবং কেউ যাতে তাঁর থেকে ক্ষমা পাওয়ার ব্যাপারে নিরাশ না হয় ।
শরীয়তে পড়লে জানা যায়, এক ব্যভিচারিণী মহিলাকে আল্লাহ তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করানোয় মাফ করে দিয়েছিলেন। এছাড়া আল্লাহ শুধু মাফই করেন না, পাপকে পুন্য দিয়ে প্রতিস্থাপিতও করে দেন । এই কথাটা আল কুরআনের সূরা ফুরকানের আয়াত নাম্বার ৭০ খুঁজে বের করলেই দেখা যাবে।
আল্লাহ কোরআনের সূরা ফাতিহায় স্পষ্ট বলেছেন, তিনিই বিচার দিবসের মালিক , এছাড়া সূরা আল ইউসুফের ৪০ নাম্বার আয়াতে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন তিনিই বিধানদাতা । তার উপরে খবরদারি করার কেউ নেই । অর্থাৎ তিনি কাকে ক্ষমা করবেন বা না করবেন সেটা সম্পুর্ন তারই ইচ্ছা । এই বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে আল্লাহ বলেছেন সুরা আল ইমরান ২৬ নাম্বার আয়াতে।
এরপরও, কিছু হুজুর বা মুসলিম আছেন যারা অমুক জান্নাতে যাবে তমুক জাহান্নামে যাবে । এই লোক জাহান্নামি এসব বলে বেড়ায় । এসব হুজুর এবং মুসলিমরা ইসলামের পজিটিভ সাইড এড়িয়ে মনগড়া নেগেটিভ সাইড বানিয়ে প্রচার করছে কেবল নিজেদের সুবিধার জন্য । অর্থাৎ তাদের ভাবসাব এমন যে, আল্লাহর বদলে জান্নাত জাহান্নাম নির্ধারণ করার দায়িত্ব তারাই নিয়েছেন !!!
আল্লাহ, এদেরকে হেদায়েত দিক ।
আমি মনে করি, প্রতিটি মুসলিমের কোরআন শরীফ অর্থসহ পারলে তাফসীর সহ পাঠ করা উচিৎ। এতে ভন্ড ও ভুয়া ফতোয়াবাজদের ধরতে ও চিনতে সুবিধা হবে একইসাথে ইসলামের প্রতি আনুগত্য ও ঈমান বৃদ্ধি পাবে।
এনিওয়ে, মাহে রমজানে আরো কোরআন নিয়ে পোস্ট দেবো । আরবীতে জাস্ট রিডিং পড়ে পুরোটা পড়ার চেয়ে(খতম দেয়া) অর্থ সহ দুই পৃষ্ঠা পড়ে সেটার জ্ঞান কাজে লাগানোটাই আমার কাছে ভালো ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:৩৮