শিশুর পাঠ কিরূপে সুখপাঠ্য হইবে
[গতকাল্য আর্জেন্টিনা ভাল খেলিয়াছে]
===========মোঃ খুরশীদ আলম
পাঠক্রম বা পাঠচক্র বা পাঠযজ্ঞ কোন কালেই সুখপাঠ্য ছিল না, ছিল না সুখাদ্য।
না আমার কাছে,
না আপনার কাছে,
না কোমলমতি শিশুগণের কাছে।
আমরা যখন শিশু ছিলাম নিম তিতাও সুখাদ্য মনে হইতো পাঠ অনুশীলনের বিপরীতে।
কিন্তু এক্ষণে আসিয়া বুঝিয়াছি আমরা সকলেই মহা কাল্পনিক জগতের বাসিন্দা ছিলাম, আর কিছু নয়।
ইহাকে (পাঠকে) রকমারি কৌশলের আশ্রয়ে ভিন্ন ভিন্ন মসলাদার স্বাদে উপস্থাপন করিয়া শিশুর সম্মুখে পরিবেশন করিতে হয়।
আপনি বলিলেন, “ বাছা, পাঠ করিতে থাক”
ওমনি আপনার যাদু মনি পাঠ করিতে আরম্ভ করিল, ইহা ভাবিলে আপনি ভিন্ন জগতে বসবাস করিতেছেন।
সে পাঠ গ্রহণ করিতে থাকিবে, কিন্তু দৈবক্রমে কি অদেশা শক্তিতে বলিয়ান হইয়াই আপনাকে সাওয়াল করিতে উদ্যত হইবে;
“ পিতৃমশায়, গতকাল্য আরজেন্টিনা ভালই খেলিয়াছিল, কি বলেন ? ” কিংবা “ আমি এক্ষণে মূসার ফ্যানে পরিণত হইয়াছি। ”
চটজলদি সকল ভাবনাকে অতিক্রম করিয়া আগ্নেয়গিরীর উত্তপ্ত লাভা ছড়াইতে থাকিবে আপনার চোখ-মুখ বা পঞ্চইদ্রিয় হইতে, ইহা অসম্ভব বোধ করিনা।
কি করিবেন? ভিতরের ক্রোধে ফাটিয়া তাহার শাস্তির বিধান করিবেন ? আমরা এমনি করিয়া থাকি, করিতেছি।
আমার পিতা করিয়াছে;
তাহার পিতা করিয়াছে;
এখন আমার সন্তানের পিতা করিতেছে ( আমি করিতেছি)।
ইহার ব্যতিক্রম আবিস্কার করিয়াছি।
শিশুগণ শিশু বলিয়াই শিশু, আমরা প্রত্যক্ষ করি চর্মচক্ষে আর শিশুগণ প্রত্যক্ষ করে দিব্যদৃষ্টি দিয়া। তাহাদের আদো বোলে প্রকাশ করা আগত বাণী প্রায়ই মিলিয়া যায়, মিলিয়া যাইতে বাধ্য।
শিশুগণ জান্নাতের ফুল, জান্নাতের শোভা বন্ধনকারী বলিলেও যথেষ্ট হইবে না।
তাহাদিগকে ভীতি প্রদর্শন করিয়া নয় বরং তাহাদের ললাটে চুম্বন করিয়া, কেশে হাত বুলাইয়া, বাপ হইয়াও তাহাকে বাপ সম্বোধন করিয়া, তাহাদের অন্তরকে বিগলিত করিতে হয়।
ইহা করিতে হয় একদিন;
দুই দিন,
প্রত্যেহ;
অদ্য;
আগামী কাল্য; এই চেষ্টার বিধান করা কোনক্রমেই সমাপ্তীরেখায় আসিলে হইবে না।
তাহার সহিত বাক্য বিনিময় করিতে হইবে, তাহার রাজী-খুশীতে হামেশা বাগড়া দেওয়া যাইবে না, ধুলি-বালি নিয়া সে তাহার ভুবন গড়িবে, বিচরণ করিবে স্বাধীন হইয়া, এখানে বাধ সাজিলে চলিবে না। কেননা শিশুগণ তাহাদের জগতে কাহারো নজরদারি ও খবরদারি কামনা করে না।
তাহাকে আপনার মত গড়িয়া তুলিতে তাহার আবদারকে কুর্ণিশ করিতে হইবে।
কোমলে, কঠোরে, আড়ালে-আবডালে স্নেহ-ভালবাসায় আর প্রেমময় বাক্য বিনিময়েই তাহার পাঠ সুখপাঠ্য হইবে বলিয়া এই অধম মনে করিতেছে। কেননা বহু অধ্যবসায় আর সাধনার পরে এই অধমের হৃদয়ে এই বিশ্বাস প্রথিত হইয়াছে।
ভাবিয়া সিদ্ধান্ত লইলেন কি? আপনার রায় কেমন হইবে?
[ছবি : গুগোল হইতে]
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯