“উপর দিকে থুথু দিলে নিজের গায়ে থুথু পড়ে, চোখ বুঝিয়া লম্ফ দিলে পা ভাঙ্গিয়া যায়”
প্রসঙ্গ - মাহমুদুর রহমান ট্রাজেডি
খুব জনপ্রিয় একটা বাক্য কিন্তু তার মূল বক্তব্য অত্যন্ত জোরোলো- “উপর দিকে থুথু দিলে নিজের গায়ে থুথু পড়ে, চোখ বুঝিয়া লম্ফ দিলে পা ভাঙ্গিয়া যায়”
হ্যাঁ, সত্যিই তাই। থুথু যেন নিজের গায়ে না পড়ে সেজন্য দেখে শুনে থুথু ফেলতে হয় আর পা যেন না ভাঙ্গে সেজন্য অযাচিত লম্ফজম্ফ না করাই শ্রেয়।
সময়ে অসময়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা সমালোচনায় উঠে আসা শ্রদ্ধেয় মাহমুদুর রহমান স্যার সেই কাজটিই করেছেন। সদাসয় সরকার তার পত্রিকা বন্ধ করে রেখেছেন, বিভিন্নভাবে তাকে কোনসাঠা করে রেখেছেন। এতে তার জনপিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে বৈ কমেনি।
তিনি আবার ফ্রন্ট লাইনে এসেছেন। গত দু’একদিন ধরে উনাকে নিয়ে আবার আলোচনার মাঠ গরম হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গনে লাঞ্চিত হয়েছেন, রাক্তাক্ত হয়েছেন, তার গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। কিন্তু কেন।
ঘটনার পরপরই সকলের সামনে তিনি জোরালো গলায় তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দিলেন। তিনি সত্য কথা বলবেন, লড়ে যাবেন, ওরা দিল্লির চাটুকার, তিনি ইসলামের পথে চলবেন, তার বয়স ৬৫ বছর এবং ইসলাম ও দেশের জন্য জীবন দিবেন বলে তার আকাঙ্খা ব্যক্ত করলেন।
ভাবতে অবাক লাগে। এই সমস্ত বুদ্ধিজীবিরা ইসলামকে কিভাবে সংজ্ঞায়িত করেন। ইসলামের জন্য কথা বলা বা জীবন দেয়ার বোধ তার আজকে কেন হল। প্রাপ্ত বয়স্ক হবার ৪৭ বছর পরে তার এই বোধদয় হলো যে তাকে ইসলামের পথে জীবন দিতে হবে। যে ব্যক্তি ৬৫ বছরেও ইসলামের আদর্শটুকুন নিজের দেহের মধ্যে সেট করতে পারেননি তিনি দিবেন ইসলামের জন্য জীবন। এতো সস্তা পাবলিকের সেন্টিমেন্ট ! পাবলিককে শিক্ষিতজনেরা আসলে ভোদাই মনে করে। তার নমুনা তিনি দেখিয়ে দিলেন।
ইসলাকে এদেশের রাজনীতিকরা দুইভাবে বিভক্ত করে রেখেছেন- ১) আওয়ামী পন্থি ইসলাম এবং ২) বিএনপি-জামায়াত পন্থি ইসলাম। জনাব মাহমুদুর রহমান সাহেব কোন পন্থি ইসলামের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত হয়েছেন তা বোকা জনগণের বুঝতে বাকি নেই। ইসলাম তার কাছে এমন প্রাণ চায় কিনা সেটা বুঝার জন্য তার কিছুটা সময় ব্যায় করা দরকার বলে মনে করি।
সরকার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। ভবিষ্যতে অন্য কোন সরকার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার করবে, এমন বক্তব্য তার মতো ব্যক্তিত্বের মুখে মানায় না। তরুণ প্রজন্ম আর দেশপ্রেমিকদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে পরিণতিতো বরণ করতেই হবে। ভবিষ্যতে কি হবে তা কে জানে? আন্দাজে কথা বলা মানেই হলো নিজেকে সমালোচনার উৎস হিসাবে দাঁড় করানো আর সস্তা জনপ্রিয়তা কামাই করার অহেতুক চেষ্টা। এমন কথা না বললেই কি। মুখের বাইরে কথা বললে পরিণতি বরণ করার জন্য অপেক্ষা করতেই হয়।
সাধেই কি আর মুরুব্বিরা বলে - “উপর দিকে থুথু দিলে নিজের গায়ে থুথু পড়ে, চোখ বুঝিয়া লম্ফ দিলে পা ভাঙ্গিয়া যায়”
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৪৩