অনেক দিন আগের কথা।
এক ধনী লোকের একজন কৃতদাশ ছিল। কৃতদাশ তার মনিবের বাড়ীতে কাজ শুরু করার আগে মনিবকে ২টি শর্ত দিলেন। ১) রাতের বেলা তাকে কাজ করানো যাবেনা । ২) ব্যাক্তিগত ইবাদতে বাঁধা সৃষ্টি করা যাবে না।
মনিব কৃতদাশের কথায় কোন বাধ সাজলেন না।
মনিব তার অনেকগুলো ঘরের মধ্যে কৃতদাশকে নিজের পছন্দমত একটা ঘর নির্বাচন করতে বললেন। কৃতদাশ সবচেয়ে অসুন্দর ও জরাজীর্ণ এককোণোয় ঘরটি পছন্দ করলেন।
মনিব কৃতদাশকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি ব্যাপার, তুমি এতো সুন্দর সুন্দর ঘর থাকতে এই বিরান ও অসুন্দর ঘরটি পছন্দ করলে কেন ?
কৃতদাশ উত্তর দিল, হযরত, আল্লাহর জিকিরে বিরান ভূমিও প্রাণ ফিরে পায়। আপনি হয়তো সেটা জানেন না।
এভাবে অনেক দিন কেটে গেল।
একদিন, গভীর রাতে জমিদার মুনিব পায়চারি করছিলেন তার প্রাসাদে। দূরে কৃতদাশের ঘরের দিকে তার নজর পড়লেই তিনি অবাক হয়ে গেলেন। জীর্ণ ঘরটির ছাদ আলোকিত করে প্রজ্বলিত রয়েছে মিষ্টি আলো। আর ছাদ তার স্থান থেকে সরে গেল। তিনি কোন কথা না বলে ব্যাপারটি বুঝার জন্য ঘরের কাছে গেলেন। যা দেখলেন তাতে তিনি আশ্চার্য না হয়ে পারলেন না। কৃতদাশ সেজদায় পড়ে আল্লাহর স্মরনে মগ্ন, জিকিরে ফিকিরে মগ্ন। এই দৃশ্য দেখে জমিদার মনিব প্রসাদে ফিলে এলেন।
একই দৃশ্য পরের দিন জমিদার মনিব তার প্রিয়তমা স্ত্রীকেও দেখালেন।
পরের দিন, জমিদার কৃতদাশকে জিজ্ঞাসা করলেন। ওহে, তুমি সিজদারত অবস্থায় ছাদের উপর নূরের চেরাগ জ্বলতে থাকে। এর রহস্য আমাকে বল।
কৃতদাশ আল্লাহর দরবারে দু;হাত তুলে প্রার্থনা করলেন , হায় আল্লাহ, আমি দোয়া করেছিলাম আমার এই রহস্য তুমি কারো কাছে প্রকাশ করোনা। এখন যখন প্রকাশ করেছ, তাহলে আমাকে তোমার কাছে তুলে নাও।
সাথে সাথে কৃতদাশ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।
উপদেশ : আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যারা কাজ করে তারা কখনো অন্যের কাছে প্রতিদান আশা করে না। তারা নিজেদেরকে সবসময় আড়ালে রাখতে ভালবাসে।
(সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫১