কবির কবিস্বত্ত্বা ও একটি কবিতা
========মোঃ খুরশীদ আলম
উপক্রমনিকা : এই লেখাটি দু’টি অংশে বিভক্ত।
► এক. কবির কবিস্বত্ত্বা ও
► দুই. একটি কবিতা (কবিতাটি তাকে উৎসর্গ করা হলো যার কাছ থেকে এই অকবি বারংবার উপেক্ষিত, অপমানিত । একবি আজো চেয়ে আছে সেই মায়াবতীর, কবি প্রত্যাশা করে অংহবোধ ত্যাগে সেই মায়াবতী তাকে বাঁধবে প্রেমের বাহুডোরে । )
► এক. কবির কবিস্বত্ত্বা ◄
আরম্ভ : প্রেয়সী কতখানি নির্দয়রূপ প্রকাশ করিলে কবির অনুভূতি এইরূপ হইতে পারে তাহা বিচারের ভার পাঠকমহলে নিবেদিত হইল। আমাদিগের আচরণ, বাকপটুতা কখনো কখনো শিষ্টাচারকে অতিক্রম করিয়া থাকে। কে জানে, এইরূপ সত্য অনুভূতিতে জাগ্রত করিয়াই হয়তো কবির কলম কখনো কখনো প্রচলিত ধারার উর্দ্ধে উঠিয়া তাহার হৃদয়ানুরাগকে ভিন্নমাত্রায় উপস্থাপন করে ।
সে যাহাই হোক, সকল কবিগণই প্রেমে পড়ে । প্রিয়তমা প্রেয়সীকে প্রেম নিবেদন করে । কবির প্রেম গৃহীত হয় আবার নিগৃহীতও হয়। কবিগণের কাব্যজীবনের একটা বৃহৎ সময় অতিবাহিত হইয়া থাকে প্রেয়সীর গুণকীর্তণ বর্ণনায়। প্রেয়সীর রং-রূপ-গন্ধে কবিস্বত্ত্বা অন্ধ হয়, কবির বিবেকের দ্বার বন্ধ হয়। বিবেক বিসর্জনে কবি প্রেয়সীর রূপলীলার বর্ণানাতীত ব্যাখ্যা যত্রতত্র তুলিয়া ধরে। কবির ভাবাত্বক-রসাত্বক বিশেষণে পাঠকমহল নিজেদিগকে কবিতার পরতে পরতে তৃষ্ণিত মরুর বাতাস বাদল মেঘে ভরিয়ে দেয়, নিজেকে আবিস্কার করে কবির কবিতার নায়করূপে।
হৃদয়ের খোরাক কবিতা, কবি সেই খোরাকদাতা, কবি তার মনমগজে সৃজণশীলতার বীজ বপন করিয়া স্বর্গীয় অনুভূতি তথা কবিতার ফলন বৃদ্ধি করিতে থাকে। অথচ দুর্ভাগ্য বহন করিয়া কবিগণ প্রায়ই কষ্টের দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করেন। অপরের সুখ সন্ধানে কবিগণ নিজেদের সুখ বিসর্জন কখন দিয়া বসিয়া থাকেন তাহা তাহাদেরও অজ্ঞাত থাকিয়া যায় আমৃত্যু। ত্যাগ-তিতীক্ষার প্রতীক কবিস্বত্ত্বা অপরের সুখের তরে বিনিদ্র রজনী কাটাইয়া দেয় উদাসী হইয়া, অথচ সেই বিবাগি কবির জীবনের সুখ অধরাই থাকিয়া যায়। তাহাস্বত্বেও বলিব, ধন্য কবি, ধন্য সকল কবি ও কবিস্বত্ত্বা।
► দুই : একখানা আবেগী কবিতা ◄
আবেগী মনরে ! তোর লাগিয়া এতো জ্বালা সই
তোর লাগিয়া এতো দুঃখ বই,
কত কথা কয়যে সবে, যা আমি তা নইরে
তোর লাগিয়া এতো জ্বালা সই ।
যারে নিয়া ভাবি সদা, সে চিনেনা মোরে,
চিনিয়া আমায় অবহেলায়, রাখিলো সদা দূরে ।
তোর লাগিয়া তাহার পাশে কুকুর হয়ে রই রে !
তোর কারণে অবহেলা সই।
আবেগী মনরে! তোর লাগিয়া এতো জ্বালা সই।
গলার মালা, পুষ্প তাহার, চাইযে হতে সই
নাইবা হলাম সুরমা কাজল, শত্রুওতো নই
তবুও তুচ্ছ হয়ে তাহার পাদুকা হয়ে রইরে !
তোর কারণে এতো জ্বালা সই।
আবেগী মনরে! তোর কারণে এতো ব্যাথা সই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৬