হেফাজতি নেতা বলেছেন 'যে মূর্তি নিজের মুখে বসা মাছিও তাড়াতে পারেনা, সেই মূর্তি ন্যায় বিচারের প্রতিক হতে পারেনা ।'
কথা হল, 'হেফাজতিদের সমাবেশ থেকে যে আগুন লাগানো হয়েছিল, তাতে ত হাজার হাজার কোরান পুড়ে ছাই হয়েছিল ! কোরআন কি নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছে ?'
আসলে, কোরআনকে অবমাননা করে নয়, আমি কোরানকে বিশ্বাস করি, এটাও বিশ্বাস করি কোরআন হল একটি বস্তু । ঠিক মূর্তিও একটি বস্তু তবে কোরানে মত নয় । এদের কারো কোন ক্ষমতা নেই সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতা ছাড়া । কোরান হল হেদায়াতের বাণী । আর মূর্তিটি হল বৃটিশদের সময় থেকে চলে আসা একটি ন্যায় বিচারের প্রতিক । বৃটিশ আইনে বিচার পরিচালিত হয় বিভিন্ন দেশে দেশে । বৃটিশদের আইনের পাশাপাশি তাদের কালচার পালন করা হয় ।
মুসলীম কালচারের আদালত চলেনা । তার প্রমাণ হল , মুসলীম হাকিমরা বিচারক হিসাবে বসতে মাদুরের উপরে । চেয়ারে বসতেন না, আর মুসলীম বিচারকদের 'মাই লর্ড' বলা হত না । এগুলো খলিফাদের সময়ের বিচার কার্যের কথা বলছি ।
তাহলে, হেফাজতিরা মূর্তি দেখতে পেল, মাই লর্ড শব্দ বা চেয়ারে বসা অর্নার বা ধর্মাবতারদের দেখতে কেন পেল না ? হেফাজতিরা কি একবারো বলেছে, বৃটিশ কাঠামোতে আদালত কক্ষ ভেঙ্গে মুসলীম কায়দায় মাদুর বসিয়ে বিচার করতে হবে ?? বলেনি । কারণ তাদের মাথায় এগুলো খেলেনা । হেফাজতির মাথায় খেলে সস্তা আর পচা বস্তা মার্কা ইস্যু , যা দিয়ে দেশে বিশৃংখলা বাঁধানো যায় ।
আবারো বলি, সৌদি আরবে কোরানের সৌধ ও গেট আছে । তার উপর কি মাছি মশা বসেনা ? কোন হেফাজতি কি কখনো বলেছে যে ভাস্কর্য মোজেজা দেখাতে পারেনা সেই ভাস্কর্য কোরানের ভাস্কর্য হতে পারেনা । ওটা ভেঙ্গে কোরানের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে ।
তাও বলেনি । শুধু শুধু মূর্তি পূজা মনে করা হচ্ছে আদালতের নারী এক ভাস্কর্যকে । যার হাতে তলোয়ার মানে শাস্তির প্রতিক আর আরেক হাতে ন্যায় বিচারের দন্ড । মহিলার চোখ বাঁধা , যা পক্ষপাতহীন বিচারকে বুঝায় । এসবের মর্ম না বুঝলে চুপ থাকা শ্রেয় ।
মূর্তি পূজা তখনই হত যখন এই ভাস্কর্যকে ফুল চন্দন আর ধুপের ধোঁয়া দিয়ে সেজদা করা হত, আর সাথে সাথে মূর্তির কাছে আরাধনা করে চাওয়া হয় । .. এসবের ত কোন কিছু হয়নি । তবে কেন হেফাজতিরা এতদিন পর এই বিষয় নিয়ে গর্জে উঠেছে ? নাকি লক্ষ্য দেশকে অস্থিতিশীল করা !!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১৬