পাকিস্তানী আমলে বাঙালি চাকুরী পায়নি, মেধার জোরে সর্বোচ্চ ০৮%, প্রমোশন হয়নি, সেনাবাহিনী তে মেজর আর কর্ণেলের উপর কোন পদ বাঙালির ছিল না।
আজ দেশ স্বাধীন করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। তারা জীবন বাজি রেখে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে, রক্ত দিয়েছে জীবন দিয়েছে। তাদের অধিকার তুলে দিতে আমরা পাকিস্তানি হায়েনাদের মত তৎপর।
আমার বাপ দাদা ত যুদ্ধে যাবার সাহস করেনি, তারা সাহস করেছিল বলেই ত আমি অধিকার পেয়েছি। আজ ব্যাংক, কলেজ, স্কুল, সচিবালয়, আদালত, প্রশাসন সর্বক্ষেত্রে ১০০% বাঙালি চাকুরী করছে। কাদের জন্য? কে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করে দিল?
তারাই মুক্তিযোদ্ধা।।
আমরা শালা এমন এক অকৃতজ্ঞ জাতি, পেছনের কথা ভুলে যাই উপকারী কে মনে রাখিনা, ইতিহাস জানতে চাই না। কাউলে অধিকার আর মর্যাদা দিতে চাই না।
বিশ্বের সব দেশে ছাত্ররা শিক্ষিত হয় জ্ঞানে আর মনে বড় হতে, উদার হতে। আর আমাদের দেশের ছাত্ররা শিক্ষিত হয় মনের দিক দিয়ে কার্পণ্য হতে।
রাতের অন্ধকারে ভিসির বাসায় ডাকাতের মত আক্রমণ, চুরি, অগ্নিসংযোগ, হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্রের মহরা এসব কি গুরুর প্রতি ভক্তির চিহ্ন? এটি কি মেধাবীর নমুনা? যে রাজাকার শব্দ উচ্চারণ করতে ৩০ লক্ষ শহীদদের মৃত্যুযন্ত্রণা উঠে আসে, ভেসে আসে ২ লক্ষ মা বোনের চিৎকার। সেই রাজাকার নামক লানত শব্দটি ওদের গালে, হাতে, গায়ে, পিঠে লিখা। এরা কি মেধাবী? এরা কি ইতিহাস শিখেছে?
হ্যাঁ, সংস্কার হতে পারে যে কোন আইনের, দাবি জানাতে পারে যে কেউ যৌক্তিক দাবির। কিন্তু উদ্ধতস্বভাব কেন?
পোষ্য কোটা, জিলা কোটা না থাকতে পারে, কিন্তু প্রতিবন্ধী কি তোমার আমার ভাইবোন নয়? তাদের কি হবে যারা পা দিয়ে লিখে পাশ করছে?
যে মুক্তিযোদ্ধা ১৯৯৬ সালের আগে মূল্যায়ন ছিলনা বলে ভিক্ষা করে খেত। তাদের সন্তানদের কি হবে? কি হবে তাদের যার বাবা তোমাদের আমাদের বাঙালি পরিচয় দিতে গিয়ে শহীদ হয়েছে?
তাই, আমি প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখার পক্ষে।
যদি সেই কোটা পূরণ না হয়ে তবে তা ফাঁকা না রেখে নিয়োগে মেধার ভিত্তিতে পূরণ করার পক্ষে। কিন্তু সবকিছু তুলে দেবার পক্ষে আমি নই। বিশ্বের কি আর কোন দেশ নেই? সেসব দেশে কোটা থাকলে আমাদের দেশে অসুবিধা কি?
আর কোন একটি দেশের নীতিমালা নিয়ম কি হবে তা কোনদিনই ছাত্ররা নির্ধারণ করতে পারেনা। ছাত্রদের কি অভিজ্ঞতা আছে দেশ পরিচালনা ক্ষেত্রে? যদি তারা এতই সৎ হত তবে মনে রাখতে হবে আজকে যারা দুর্নীতিবাজ তারাও একদিন ছাত্র ছিল। আবার এই এই ছাত্ররাও এখন নীতির কথা বলে কিন্তু চেয়ার পেলে এরাও বড় বড় দুর্নীতিবাজ হবেনা তার গ্যারান্টি কে দিবে? সুতুরাং ছাত্ররা অযৌক্তিক দাবি করলেই তা মানতে হবে, এমন কোন কথা নেই।
মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে শুরু থেকে জামায়াত শিবির গোষ্ঠী ফুঁসে ছিল, এখন তারা দল ভারি করতে সক্ষম হয়েছে বলেই ঘোমটা খুলে খেমটা নাঁচ শুরু করেছে।
নিজেদের দাবিগুলো সাধারণ ছাত্রের মোড়কে বাজারে এনেছে। এই দাবিগুলো নিরীহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীর হলে তারা রাতের অন্ধকারে পুরাতন অভ্যাসে ভিসির বাসাতে আক্রমণ করতো না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১৭