বৃষ্টি থেমে গেছে কিন্তু বারান্দার ওপাশের টিনের চালে বৃষ্টির পানি এখনো পড়ছে। শব্দটা কেমন যেন এক নেশা ধরিয়ে দেয়। এ যেন অন্য এক ভুবনের নেশা। জাগতিক সব মোহের আহ্বান থেকে একটু ছুটি নেওয়ার নেশা। নৈঃশব্দের মাঝে বিলীন হওয়ার নেশা। হঠাৎ করেই প্রকৃতির কাছে নিজেকে হারিয়ে ফেলার নেশা। কি অদ্ভুত এক অজানা অনুভূতি! অনুভূতির গহীনে শুধুই নিজের অনুভূতিগুলিকেই খুঁজে পাচ্ছি। স্বার্থপরতা ??? না ! প্রতিটি মানুষই কোন না কোন সময় নিজের মাঝে শুধু নিজের অনুভূতিকেই খুঁজে। কিন্তু অনুভূতির গহীনে সবার তো যাওয়া হয় না। নাকি কেউ যেতে চায় না ?
আচ্ছা, সব মানুষের অবচেতন মনেই কি একটু খানি একাকীত্ব লুকিয়ে থাকে ? অদ্ভুত সময়ে অদ্ভুত এই একাকীত্ব হাজার বছরের এই খাঁচা থেকে বেরিয়ে ছড়িয়ে পরতে চায় ? কে জানে ! সব কিছু তো জানতেও হয় না। থাক না কিছু অজানা।
একটু পর হয়তোবা আকাশে ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো মেঘের আড়াল থেকে চাঁদটা তার অস্পষ্ট লজ্জামাখা মুখ বের করবে, হয়তোবা আঁধারেই ঢাকা থাকবে সারা নিশি। কিছু কিছু রাত তো আঁধারেই ভালো লাগে। এই বিদীর্ণ আঁধারে মাখা রাতে কতো স্মৃতিই তো অস্তিত্বে ভর করবে। কেউ স্বপ্নলোকের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াবে, কেউ কারো গায়ের গন্ধের জন্য পাগলপারা হবে, হয়তোবা কেউ হাজার বছরের পুরনো ধ্রুবতারা দেখতে দেখতে নিজেকে হারিয়ে আবার নিজেকেই খুঁজে পাবে, কেউবা সবচাইতে প্রিয় মানুষটাকে হারাবার হাহাকার নিয়ে নির্ঘুম জেগে থাকবে সারাটা রাত, হয়তো আরও হাজার হাজার বছর পর কেউ একজন বৃষ্টি দেখতে দেখতে এই একাকীত্বটার অস্তিত্বকে খুঁজে পাবে।