আমি সাধারনত এসব নিয়ে লেখি নাহ,হঠাত কেমন ইচ্ছে হলো ।
তখন আমি নিতান্তই বেড়ে উঠছিলাম ,, বৃদ্ধ একটা সংসার এর উপর নির্ভর করে। বয়স্ক ঘরের ছাউনি বেয়ে জল গড়িয়ে পরতো প্রতি বর্ষায়, আম্মু একটু জোরে জোরে ই বকতো ,আমার আব্বু নামের আগন্তুক কাউকে । আমি তখনও বেশ ভালোই ছোট। মা এর কোলে ঘুম হতে শুরু করে,, পরের রাতের নিস্তব্দ কলোনি পরিচিত বলতে সেই মহিলা ই ছিলো । প্রায় দু-বছর পর, একজন মানুষ আসতো আমাদের বাসায়। হাতে নানান খেলনা,খাবার হরেক কিছুই ছিলো। লোকটা আমাদের ঘরে থাকতো, মা এর বিছানায় ভাগ বসাতো ।। আমি তখনও খুব ছোট ,চিনতে চিনতে বুঝতে পারি ওনার নাম ই আব্বু ছিলো .। কদিন পরে আবার উধাও ।
আবার হঠাত আব্বু নামের লোকটি আসতো,,কাঁধে বিশাল ব্যাগ । চিনতে পারার আগেই চলে যেতো কোথাও একটা।।
আম্মু কেন যেন সেই আব্বু নামের লোকটার জন্য খুব কাদত। কখনও আমায় জড়িয়ে,কখনও বা বিছানার এপাশ ওপাশ করে .।
আমি বড় হতে থাকি,,বুঝতে শুরু করি , পিতা পুত্রের অংকগুলো চোখে ভাসতো বিভীষিকার মতো ।।
শত নালিশ জমতে থাকে আব্বুর নামে ,,। একটা সময় আবদার গুলোতে পচন ধরতে থাকে ,আম্মুর কান্নাইয় খারাপ লাগার বদলে হাসি পেতো খুব ।। কার জন্য কাঁদছে, একজন অচেনা মানুষ এর জন্য ?"।।
আজ আমি সব ছাড়িয়ে এসেছি, সেই ভাবনা, অসংকোচ .। আজ খুব বুঝতে পারছি , আমি বেড়ে উঠছিলাম অদৃশ্য একটা গাছের শরীর বেয়ে , পরগাছার মতো .।
সেই গাছ টি ছিলো আব্বু , যে না থাকলে হয়তো বেড়ে ওঠা হতো নাহ .।
সত্যি তুমি পারো,
আপনজনের শত ভার কাঁধে নিয়ে উড়ে যাও অজানায়
হারিয়ে ফেলার ভয় এর চাইতে ,ক্ষুধা মেটানোর চেষ্টায় ব্যস্ত তোমার পরিশ্রমী প্রতিটা দিন। তুমি একাকীত্ব বরন করে নাও,বরন করো রোঁদের প্রখরতা না জানি আরও কতো কি জমে আছে,তোমার ঘামে ভেজা শার্টের পকেট এ ...
তবুও তুমি হাসো, অবোধের মতো সুখ তোমার চেহারায় ভাঁজ ধরিয়ে দেয়। তুমি শুধু একজন বাবা নও, একজন ছেলের অহংকার ... একজন স্ত্রীর শাড়ির ভাঁজে লুকিয়ে থাকা সাহস ,একজন মা এর পানের থলিতে জমা এক আকাশ ভালোবাসার নির্ভীক প্রাসাদ ...
(((....................................................
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮