- তাহলে গল্পটি আপনি লেখেননি ?
- আর কতবার বলবো ?
- না, মানে এভাবে সত্য তো বলতে শুনিনি কাউকে
- হয়তো আপনি জীবনে সত্যবাদীদের সাথে চলাফেরা করেন না মোটেও
- কিন্তু স্যার, আমরা তো এখানে আপনার ইন্টার্ভিউ নিতে এসেছি, আপনার ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশ পাওয়া গল্পটা রীতিমত ফেসবুকে ভাইরাল । বাচ্চা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সবার মন ছুঁয়ে গেছে গল্পের কথাগুলো । যখন আমরা সংবাদিকরা আপনার একটা ইন্টার্ভিউ নিতে পেরে নিজেদের ভাগ্যবান ভাবছি, সেখানে আপনি কিনা অস্বীকার করছেন গল্পটার ব্যাপারে । মাথায় তো কিছুই ঢুকছে না স্যার ।
- আপনারা সাংবাদিক । এইসব ছোটখাট বিষয় আপনাদের মাথায় না ঢুকলে চলবে কি করে !!
- তাহলে স্যার গল্পের শুরুটা কিন্তু আপনার প্রোফাইল থেকেই ।
- মানে ?
- মানে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার বিষয়টা, আর কি !! আপনার প্রোফাইল থেকেই কিন্তু গল্পটা পায় পাঠকরা । এই ব্যাপারে কি বলবেন স্যার ?
- দেখুন, ভরদুপুরে আর কথা বলতে ভালো লাগছে না । আপনারা দয়া করে এখন আসুন । খাতিরযত্ন করতে পারলাম না দুঃখিত । আমি এই সময় একটা ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ঘুমাই ।
- কিন্তু স্যার...
- প্লিজ !! আল্লাহ্ হাফেজ ।
অনেকটা জোর করেই সাংবাদিকদের বিদায় করলেন । দরজা লাগিয়েই সোজা রিডিং রুমে চলে এলেন আসলাম সাহেব । এরপর বুক শেলফের একেবারে কোণায় থাকা একটা পুরনো ডায়েরি বের করলেন । হ্যাঁ, তারিখটা এখনও অক্ষত । ১৩ - ১১ - ২০০১ । ঐ দিনই সফিক গল্পটা লিখেছিল একটা ছোট্ট মেয়ের জীবন অনুধাবন নিয়ে, এরপর বাসা থেকে দৌড়ে এসে আসলাম সাহেবকে পড়ে শুনিয়েছিল । সফিক, আসলাম সাহেবের ছোটবেলার বন্ধু । রোড এক্সিডেন্টে মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ছেলেটা হারিয়ে গেলো কিন্তু অতটুকু বয়সেই এমন কিছু লিখে গেছে, যা অনেক বড় লেখকরাও লিখার কথা ভাবতে পারে না ।
ছেলেটার অনেক সখ ছিল লেখক হওয়ার । আসলাম সাহেব সফিকের সখ পূরণ করেছেন । সফিকেরই লেখা একটা গল্প তিনি ভাইরাল করতে পেরেছেন কিন্তু যত যাই হোক, লেখার ক্রেডিট তার পক্ষে নেওয়া সম্ভব না । সফিকের নাম বললেই বা কে চিনবে !! কিছু কিছু কাজের ক্রেডিট চাইলেও নিতে নেই । উপরে বসে থাকা ঈশ্বরও এতেই খুশি হন ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:৩৭