somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইনভেস্তেমেন্তে (গল্প)

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
এ গল্পের সবগুলা চরিত্রই বাস্তব তাই নাম বানাতে লেখক হিসেবে আমাকে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

আপাতত ধরা যাক গল্পের নায়ক অনাদি।

গেল বছরের শুরুতে অনাদি'র সাথে প্রথম দেখায় আমার রিয়েকশন ছিলো, someday i am gonna fuck you babe.
অনাদি দেখতে খুবই উত্তেজক, sexy, বিশেষত, আমার যেসব উপাদান ছেলেদের মাঝে দেখতে ভাল্লাগে, যেমন ধরেন প্রশস্থ কাঁধ, ফ্ল্যাট কোমর, কার্ভি বাহু, বিষন্ন চেহারা সে সব কিছুর অধিকারী, তাকে অপছন্দ হবার কোনো কারণ নাই।
আমি তাই আমার যৌনতার খেরোখাতায় এর নাম তুলে রাখতে দেরী করি না। অবশ্য তার সিরিয়াল তখন বহুত পেছনে।
আমার সামনে তখন কয়েকটা থ্রিসামের দাওয়াত ঝুলছে, তার বাহ্যিক শরীরের সাথে সাক্ষাত হলেও নামধাম জিজ্ঞেস করার অবকাশ ছিলো না।
অন্যদিকে সেও আমার মত স্বঘোষিত কুলাঙ্গারের সাথে পরিচিত হতে তেমন আগ্রহ না দেখানোয় গল্পটা মিইয়ে যেতে থাকে।

বাসা থেকে অকথা-কুকথা বলে টাকা নিয়ে জায়গায় অজায়গায় ইনভেস্ট করে রেখেছি, মাঝে মধ্যেই যখন বিনিয়োগের সমন জারি হয়, কখনও টাকার অভাবে সুদসমেত ধারগুলা থেকে বাঁচতে ১টার পর ১টা মূলধন উঠিয়ে ফেলছি। সব সাক্ষাতে ১ই পোশাকে যাওয়া নিয়ম দাঁড়িয়ে গেছে, এখন সত্যিই হাতে কিছু টাকার দরকার।
তো সিড়িতে বসে যখন আমার সাম্প্রতিক অর্থাভাবের কথা ভাবছি, ১ জন এসে জানিয়ে গেলো, আম্লীগেরে বাছাধনেরা রাস্তায় ঝামেলা করে ১খানা পেরাইভেট কার পুড়িয়ে দেয়ায় আজ সক্কলেরে দীর্ঘপথ হেটে যেতে হবে, আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠিউঠি করছি, এমন সময় অনাদি'র শুভমুখের দর্শন।
তুমি ঝিগাতলায় যাবা না? সে জিজ্ঞেস করে। ঝাড়া দেড় মাস পর সে মুখ খুলল।
কিছুটা অইদিকেই।
ট্যানারি মোড়ে আমার ১টা টিউশন হয়েছে, কিন্তু আগে কখনও যাই নি, তুমি কি ১টু চিনায়ে দিতে পারবা? তার মুখে ইতস্তত আকুতি।
বাহ বাছা! খুঁজে খুঁজে আমাকেই বের করলা! আমি মনে মনে ভাবি, মানুষের নিশ্চিন্তে ভুল নিরাপত্তায় পা রাখার কথা, মুখে বিশ্বস্ততার মুখোশ সেঁটে বলি, সমস্যা নাই, ওই এলাকা আমার মুখস্ত।
সে আশ্বস্ত হয়ে আমার পাশে হাটতে শুরু করে।
সে তার জীবনের অহেতুক গল্প ব্লা... ব্লা... ব্লা... ফুল, পাখি, গান... করে, আমি শোনার ভান করতে থাকি। তাছাড়া দিনের বড় অংশ এসব স্থূল দীর্ঘপরিকল্পনায় কাটালে কিছুদিন পর আমাকে ভিক্ষা করতে হবে। তখন আমার চোখের সামনে দুশ্চিন্তা করার জন্য বড় বড় নোটিশ ঝুলছে।
কথা ঘুরাতে আমি বলি, তুমি অফটাইমে কী কর?
গিটার বাজাই, বেস গিটার। তুমি?
হাবিজাবি কাজকারবার আর কি।
আমি অবশ্য তাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করলে নিজের সম্পর্কে অনেক কিছুই বলতে পারতাম তা এখন সম্ভব না, কারণ বিরক্তিকর লেফটিস্ট ইভা আপা মোবাইলে ক্রমাগত মিসড কল দিয়ে যাচ্ছে।
সে আবার বলল, (খুব সম্ভবত কথা চালিয়ে যাবার চেষ্টা করছে) আমার মনে হয় না তুমি হাবিজাবি কাজ কর তোমার মধ্যে কী ১টা বিশেষত্ব আছে।
আমি মনে মনে বলি কচু আছে রে গাধা, ৫-৬বার সেক্স করে যখন তোকে ফেলে দিবো তখন টের পাবি কত বিশেষত্ব আছে।
সে আমার নির্লিপ্ত চেহারা দেখে আরো নিশ্চিত হয়, নাহ এ আসলেই সেইরকম কেউ।
দীর্ঘ বিরক্তিকর যাত্রা শেষে তাকে গন্তব্যে নামায়ে দিয়ে, ১ই রিকশা নিয়ে রওনা হলাম, পেছনে ফিরে দেখলাম সে ভাড়া দেবার জন্য ডাকছে।
রিকশা থামলো না, কারণ এটা এখানে প্রথম সফল ইনভেস্টমেন্ট।


২.

পরিবাগের স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে যোগাযোগ করি করি করেও করা হয়ে উঠছে না, অন্যদিকে সায়মা, মালতী আর ইব্রাহিমের পড়ালেখার বয়স ফুরোচ্ছে, আমি তাদেরকে দেয়া কথা কথা রাখতে পারছি না, বাড়ির জমি নিয়ে দেওয়ানি মামলার জন্মান্তরের টানাটানি, প্রাত্যাহিক মিসহ্যাপের মধ্যে হাশফাঁস একেকটা দিন যাচ্ছে, রাতে ফাইবার অপটিকস ফেলে রেখে সাইবার জগতে সাঁতার দিচ্ছি।
কারো সাথে সিরিয়াস বিষয় আবার কারো সাথে পর্ন নিয়ে গ্যাজাচ্ছি।
অনাদি ছেলেটা সেদিন কী কী বলে ভ্যারভ্যার করেছিলো আমার নির্জ্ঞান স্বত্তা থেকে তুলে আনার চেষ্টা করি।
সম্ভবত বলেছিলো, আমি আগে ঢাকায় থাকতাম না। সম্ভবত, ল্যাবের এসি নিয়ে। অথবা, ক্যান্টিনে খাবার খেয়ে গত মাসে তার জন্ডিস হয়েছিলো সে অনেকদিন ক্লাসে আসে নি। হতে পারে, হলের মাঝরাতের রাজনীতি নিয়ে। এমন কী আমি কেন সবসময় শেষ সারিতে বসি এটা নিয়েও বিস্ময় আর হতাশা প্রকাশ করে থাকতে পারে।
আমার কাছে এও মনে হয় সে দেখতে কতটা অ্যাপিলিং এটা সে জানে না, ফলে এটা জানানো আমার দরকারের লিস্টে থাকলো।
অবশেষে অনাদি বন্ধু হতে চেয়ে অনুরোধ পাঠালেন। আবেদন মঞ্জুর হলো।
বন্ধু দূযোর্ধন বলে, লিস্টে নয়া চেহারা?
হেসে জিগাই, জোস না?
তুই সেদিন থ্রিসামের দাওয়াতে আসলি না ক্যান, মেয়েটা জটিল ছিলো, হিউজ টিটস সাথে ডিলডোও ছিলো, সে চোখ টিপের ইমো দেয়।
নেক্সট ডে বাডি, কোনো মিস হবে না।
অন্য বক্সে সদ্য ফেসবুক বন্ধু অনাদি জানায় সেদিন রিকশা ভাড়া দিতে দিলাম না ক্যানো!
বুঝলাম ইনভেস্টমেন্টে কাজ হয়েছে,
বন্ধুসুলভ ভাব নিয়ে আমি বলি, এত দেনা পাওনার হিসাব রাখতে চাইলে কাল দিয়ে দিও।
তার কাছে বোধহয় আচরণটা রূঢ় লাগে, লাগুক, ধাক্কা খেয়ে শিখুক।
সে কী ভেবে বলে, নাহ তোমাকে ১দিন আইসক্রিম খাওয়াবো, ওকে?
বাস্তবে আইসক্রিমের মত ফালতু খাবারের প্রতি আমার কোনোই আকর্ষণ নাই, এর চে ভালো ডিল হতে পারতো, আড়াই মিনিটের ১টা চুমু, তাও বললাম ,আচ্ছা।
দূযোর্ধনকে জানাই ডেটে যাচ্ছি।
অনাদির সাথে?
হুম।
এর সাথে না খেললে হয়না? বেচারা ভালোমানুষ।
ভালোমানুষ বলেই তো লিস্টে তুললাম, অনেকদিন ভালো মানুষের স্বাদ পাচ্ছি না।

সে বলে, আমাকে তোর ভাল্লাগে না?
তুই আর আমি, শ্লা দুজনই হারামি।


৩.
ইনভেস্টমেন্ট ২ : ব্যাকআপ সাবকনশাস সোলেস

ডেটে গিয়ে প্রাথমিক যে কাজটা সারতে হবে, তা হল কিছু জ্ঞানগর্ভ কথা ঝাড়া। মানুষের লাইফটা আসলে সমুদ্র পাড়ের বালুর মত। অসংখ্য ছোট বড় পাথরের নিচে রোজ জমে চলেছে আমাদের আজ আর গতকাল। যদি সবগুলো ১ করে ফেলি, তৈরি হতে পারে দমবন্ধ বিচ্ছিন্ন পাহাড়। আর যদি যেতে দিই, ঢের পরে কোনো ১দিন ফিরে এলে যে কোনো পাথর তুললেই দেখবো চারপাশে সোঁ সোঁ নির্জন অতীতের বাতাস। ১বার শুনলে আপনি হয়ত ভাববেন, বাহ কী গভীর দার্শনিক যুক্তি! কিন্তু ধরেন যখন আমি একে ত্যাগ করব তার অবচেতন এসব কথাকে নিজের মত সাজিয়ে নেবে।
যা কিছু হারায় তাই হয়ত সুন্দর! হারাবো বলেই হয়ত ধরে রাখার তীব্রতর ইচ্ছা জেগে থাকে। তো আমার প্রস্থানেও তার নিজেকে পরিত্যাক্ত বোধ করে আত্মবিনাশী চিন্তার সম্ভাবনা কম থাকলো।
কিন্তু মানুষ ভাবে কী আর হয় কী!
শ্লার.. ডেটও যে এত ফালতু হয়! আমার কথার কোনো ধারই বুঝতে পারলো না আহাম্মকটা। আজাইরা সুর, মুর্ছনা, কবিতা নিয়া প্যাঁকপ্যাঁক করতেসে।
জিজ্ঞেস করলাম, নির্মলেন্দু গুণের 'নিশিকাব্য' পড়স?
সে বলে, দেখেছিলাম, কবিতাগুলো কেমন যেন!
ক্যামন?
অশ্লীল টাইপ।
অ্যাডাল্ট হও নাই এখনও ? আমি টপিকে ফেরার রাস্তা খুঁজি।
সে হেসে ফেলে।বলে, ওইসব পড়তেও লজ্জা লাগে।
জিজ্ঞেস করি, 'কামকানন'?
ইতোমধ্যে তার কান লাল হতে শুরু করেছে। আমি হতাশ। সেও হয়ত!
প্রসঙ্গ বদলাতে সে বলে, তুমি শাস্ত্রীয় সংগীত কর তাই না?
না!
তাহলে শুনলাম যে?
গুজব। গুজব।

বাড়ি ফিরে মেসেজ পেলাম তার ঘুরে বেড়াতে ভালো লেগেছে।
ধুর.. ১টা লোভনীয় শরীরের পেছনে খরচ করার জন্য 'সময়' বোধহয় সবচে কস্টলি।
সময়ের চেয়ে একে ঘন্টাপ্রতি ৫শ টাকা দেয়াও আমি প্রেফার করতাম।


৪.
সবচে ঝুঁকিপূর্ণ ইনভেস্টমেন্ট হইল : সময়


খরচ করার জন্য 'সময়' হইল সবচে বাজে খাত, একে তো এটার রাস্তা কেবলই একমুখী, তার ওপর আপনি যদি এটা খরচ করে ফেলেন তাহলে আপনি ভাদাইম্যা, না খরচ করলে ভাব চোদানোর উপাধি পেতে পারেন। মানুষ বড়ই আজব, সব সময় চেষ্টা করবে আপনাকে ভুলভাবে সংজ্ঞায়িত করতে। সেফসাইডে থাকতে কথা বলার চেয়ে শোনার পথ বেছে নিলাম।

সে রাতদিন কথা বলেই যেতে থাকলো।
তার রঙিন শৈশব, মফস্বলের সাইকেল ভোর, রোদ আর অনন্ত আকাশের। তার ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলোর কথা, আশাবাদের সেইই ই ই ই দূরের কোনো ১দিনের কথা।
কী ভাবে সহজে বিদেশ যাওয়া যায়, ক্যানো আমার জিআরই দেয়া দরকার এসব নিয়েও হাবিজাবি উপদেশ দিলো।

অন্যদিকে আমি আমার খরচ হয়ে যাওয়া মহা মূল্যবান সময়ের দুঃখে আনমনে হাপিত্যেশ করতে থাকলাম।
বাড়িতে বিদেশ ফেরত আত্মীয়রা যেসব জিনিস এনেছে তা যদি আজ রাতে সরিয়ে আলাদা করে ফেলি, বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যেতে পারে। নোকিয়া এন সিরিজের ২টা মোবাইল ইন ট্যাক্ট বিক্রি করতে পারলে অল্প হইলেও আইসিবি'র কয়টা শেয়ার কিনে রাখবো, ভেবে ভালো লাগে।
অনেকক্ষণ পর কানে আসলো, অনাদি বলে চলেছে, এরকম হলে জীবনটা কত সুন্দর হতো! তাই না?
আমি বলি, হুম।


আত্মদ্বন্দ্ব আর আকাঙ্ক্ষার মুখোমুখি

বাড়িতে ১টা আইপিএস লাগাতে টাকা রাখিস, সব উড়িয়ে ফেলিস না। মা বলে গেলো। রাইট নাও আমার প্রায়োরিটি লিস্টে এসব কিছু নাই। আজকাল ক্লান্ত লাগছে। এমন কী অনাদির শরীরের প্রতিও আকর্ষণ পাই না। আমাকে সে বন্ধু ভেবে বসে আছে, তাই প্রতিদিন ফেইক করছি।
ক্লান্ত রাতে, যখন টানা ১৮ ঘন্টার ক্লান্তিতে পিঠ ভেঙ্গে আসে, ঘুম ঘুম চোখে মনে পড়ে ১যুগ আগের এমন কোনো রাতে হয়ত আমি কাউকে সঙ্গী হিসেবে চেয়েছিলাম বিটিভির আতেলীয় আজিজুল হাকিমের নাটক দেখে। অবশ্য চেয়েছিলাম শান্ত কোনো মানুষ, লাজুক, স্নিগ্ধ, ধর্মের সীমানার ওপাড়ের। হতাশাব্যাঞ্জক হলেও সত্য, অনাদির সত্যিকার নাম যেটা (পাবলিক প্রোপার্টি করবো না) ওরকম নামের কাউকেই আমি ভেবে নিতাম ঘুমস্বপ্নে। আমাকে আরো হতাশ করছে অনাদি'র মধ্যে আমার সুখস্বপ্নের সমস্ত ক্রাইটেরিয়া বিদ্যমান, অথচ আমি তাকে চাইতে পারি না সেভাবে। অথবা চাই। তা না হলে রিদোয়ানের মত ঝাঁ চকচকে স্পোর্টসম্যান যার সাথে চাইলেই যে কোনোদিন সেক্স করতে পারি তাকে বাদ দিয়ে এরকম একঘেঁয়ে অন্তর্মুখী একজনের পেছনে সময় নষ্ট করছি ক্যানো!
নাহ, এ গল্প এমন না।
অনাদিকে চাচ্ছি স্বাদ পরিবর্তনের জন্য। নিজের যোগ্যতা প্রমাণেরও ১টা ব্যাপার আছে, যে আমি চাইলেই যে কাউকে পেতে পারি। রিদোয়ান অলরেডি পাবার লিস্টে আছে, তাকে নিয়ে রোডম্যাপের দরকার নাই।
আর অনাদি'র প্রেমে পড়ব কোথা থেকে, যেখানে আমি জানিই যে সে যদি কমদামী জুতা পায়ে দিতো আমি তার দিকে ফিরেও তাকাতাম না, আর আমি যদি দেখতে খারাপ হতাম কোনোদিনই সে আমাকে নিয়ে বিকালে ঘুরতে বের হত না। প্রেমের ক্যাপসুলের ভেতরের তিক্ততা যখন জানাই আছে, ১টা বাণিজ্যে দোষ কী! ক্যাপিটালে রেখেছি আকাঙ্ক্ষা, বিনিয়োগ বাড়াচ্ছি রোজ, লাভসমেত আউটপুট কী আমার প্রাপ্য না!


৫. ইনভেস্টমেন্ট ৪ : ১টা রিভার্স প্লট

ইনভেস্টমেন্টের মধ্যে এটা আমার মোস্ট ফেভরেট। এটা আপনি সেই সময় করবেন যখন কেউ আপনাকে বিশ্বাস করে ফেলবে, অবশ্যই তার আগে না। কেউ যখন বিশ্বাস করে আপনি ভালো লোক, আপনি যতই আপনার চরিত্র বিশ্লেষণ করে নোংরা দিক তুলে ধরেন, সে ভাববে , আহা! কী মহৎপ্রাণ। খারাপ মানুষ কখনোই এমন আত্মসমালোচনাকারী বিনয়ী হয় না। তখন আপনার সব কাজ তার চোখে ভালো, খারাপ কাজ ধরা পড়লে আছে, ব্যাকডোর অ্যাস্কেপ অপশন।
যেমন আজকে সে বলছিলো মানুষ তোমাকে কী ভুলই না বোঝে! অথচ তুমি অসম্ভব ভালো ১টা মানুষ।
মানুষ আমাকে ঠিকই বুঝে অনাদি, আমি বাস্তবেই ধান্দাবাজ, সেলফিশ, ক্রুয়েল আর লম্পট ১টা মানুষ।(কোনো মিথ্যা নাই )
সে কষ্ট পাওয়া কন্ঠে বলে, তুমিই যদি এমন হও তাহলে আমরা কী?
আমি জানাই, আমার জন্য তোমার ১টা সফট কর্নার তৈরি হয়েছে বলে তুমি আমাকে খারাপ হিসাবে দেখতে চাও না, না হলে তুমিও ১ই কথা বলতা।
কক্ষণো না, আমি কখনোই তোমাকে ঘৃণা করতে পারবো না।
টাইম উইল স্যে। আমার হাসি পায়।
আমার সবগুলা সত্য কথা এখন তার চোখে মিথ্যা, যাহ! আজ আমি তার চোখে মহান হয়া গেলাম।



কয়েকটা যৌন দিন :

আজকাল অনাদি'র মধ্যেও জৈবিকতা দেখা দিয়েছে, লো'কাট প্যান্টস পরে, দেখতে ভালই লাগে, তাকে জানাই ইয়্যু লুক সেক্সি দিস ডেইয। সে প্রশ্রয়ের হাসি হাসে। আজকাল মাঝেমধ্যেই আমরা রাজপথে হাত ধরি, রাস্তা পারাপারের ছুঁতোয়। অবশ্য সে হাত ধরে থাকা ফুরোয় না দীর্ঘসময়।
এর মাঝে অনাদি ১ দিন মেসেজ দিয়ে তার বাসায় আসতে জানায়।
ভাবি, যাক! এদ্দিনে ডাক পড়লো।
খাঁ খাঁ দোতলা বাড়িতে সে একা। চোখেমুখে কান্নার অস্পষ্ট ছাপ।
কী হয়েছে জানতে চাইতেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লো।
বাবা.. এটুক বলে সে চুপ মেরে গেলো। যতটুক মনে পড়ে হাবিজাবি কথার ফাঁকে তার বাবার কিডনীর সমস্যা ছিলো বলেছিলো সে। হয়ত এখন অবনতি ঘটেছে। রেচনতন্ত্র খুবই সেনসিটিভ জিনিস।
হুম, অবশ্য এখন এ মুহূর্তে অনাদি'র সেই বহুল প্রত্যাশিত শরীর আমার শরীরের সাথে লেপ্টে আছে, তার শ্বাসের মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি, এভাবে আর কিছুক্ষণ থাকলেই তার উত্তেজিত অংশগুলা নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা করবে, হয়ত এসব সময়ই ১টা শরীর অন্য ১টা শরীরের কাছে আত্মসমর্পণ করে, সেও বোধহয় চাইছে কিছু ১টা হোক। লালচে ঠোঁটজোড়াও কাছাকাছি। ভাবলাম তাকে জিজ্ঞেস করি, সে জানে নাকি মানুষের জন্মের আগে কোষ বিভাজনে মুখ আর পায়ু একই থাকে। তো সে যদি ওষ্ঠচুম্বনে আনন্দ পায় তাহলে সে গ্যে সেক্সেও পুলকিত বোধ করবে, বিজ্ঞান তাই বলে।

তবে বললাম, যাই এখন, হাতে কাজ বাকি আছে।



বহুদিন পর রাতে দূযোর্ধনের সাথে যোগাযোগ।
তুই আর আসলি না রোনো।
দৌড়াচ্ছি বন্ধু। অনেক।
অনাদিকে খুলেছিস?
সুযোগ তো এসেছিলো।
তো?
সে ভালনারেবল ছিলো।
বাপরে! প্রেমে পড়েছিস মনে হয়?
পাগল কামড়াইসে আমাকে? আই ডোন্ট গো ফর পিটি সেক্স। দ্যাটস আ পিস অফ ডিপশিট।
তাইলে একে বাদ দে।
নট নাও, অনেক ইনভেস্ট করা হয়ে গেছে এর পেছনে।
পেছনে বলতে কী বুঝালি? পায়ুপথে?
ভালো শ্লা আছিস তুই।
আসলেই। অনাদি এমন কী? যার জন্য তুই আমাকে, রাখিকে, তন্ময়কে লিস্টের পেছনে ফেলে দিলি?
ফার্স্ট অফ অল তোদেরকে কখনোই পেছনে রাখি নাই, জাস্ট তন্ময়কে ন্যুড দেখতে ইয়াকি লাগে। আর আমি বেশ কয়দিন কিছু কাজ নিয়া বিজি ছিলাম, ওই যে ইব্রাহিম সায়মাদের কথা বলসিলাম না, ওইটা নিয়া , সাথে কল সেন্টারে ১টা জবের খোঁজ করতেসি। আর অনাদি'র ঘটনা হইলো, সে দেখতে জটিল, সাথে সনাতনও। সে এখন আমার জন্য ১টা প্রেস্টিজ ইস্যু তাছাড়া খৎনাহীন শিশ্নের প্রতি খানিকটা কৌতুহলও আছে।
তুই শালা ১টা sick.
pervert বল। বেটার শোনায়।


শেষাবধি :

বেশ কয়দিন অনাদি'র খবর নাই, ভাবছি তার বাপ এখনো ঠিক আছে নাকি, তাদের বাসায় দেখতে যাওয়া উচিৎ হবে কী হবে না। এর মাঝেই অধমের খোঁজ পড়লো।
প্রথম কথা, তুমি আমাকে তোমার সম্পর্কে কিছু বলো না ক্যানো? তার স্বরে জেরার আভাস পাচ্ছিলাম।
বললাম, বলার মত কিছু থাকলে না বলবো!
তুমি ১টা খানকির থেকেও নোংরা হয়ে সেদিন বাসায় কীভাবে আমাকে ডাম্প করে চলে গেলা?
আমি অবশ্য এটা আশা করি নাই। এর মানে কী সে সবই জানতো? কতদিন ধরে জানতো?
ভালোমানুষীর শেষ চেষ্টা ব্যাকডোর এস্কেপ খুঁজতে গিয়ে দেখি এটা আমি চালু করতে সময় পাই নাই। তা না হলে ধরেন বলতে পারতাম, আমি শর্ট টাইম রিলেশনের মানুষ, বেশিদিন কারো সাথে থাকতে পারি না, দমবন্ধ লাগে। তাছাড়া আমরা তো কোনো কমিটমেন্টেও ছিলাম না, এইসব হাবিজাবি।

সে বলে চলল, তোমার কী করে মনে হইলো আমি তোমার মত ১টা বাইসেক্সুয়াল নিম্ফোম্যানিয়াকের প্রেমে পড়ব?

আরো বলল, শাহরিয়ারের কথাটা বিশ্বাস করা উচিৎ ছিলো, he often told me that you are a fucking slow whore.

আমি ভাবি, বাহ!! এর জিহ্বার এত ধার আগে জানলে চুম্বন কত ভালোই না জমত!

তার চোখে ঘৃণা ও বিতৃষ্ণা।

১টা প্রিয় বিষন্ন চেহারা এখন লালচে।

গেট থেকে বের হয়ে মনে হয়,

শ্লা!! এই হিপোক্রিটের সাথে ঘুরে গেলো সাড়ে চার মাস সেক্স করা হয় নাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৭
৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×