শহীদুল আলম, নামকরা আকিয়ে।
ধানমন্ডির দৃক গ্যালারি, এনজিও করে তিনি ধনকুব।
সবুরখানের ভাতিজা। সবুরখানের ভাতিজা হলেও মুসলিমলীগ আদর্শ ধারন করতেন না।
তাকে শুরুথেকে এতদিন মোটামোটি ধর্মনিরপেক্ষ বাম ধারাতে দেখা গেছে। দক্ষিনআফ্রিকার নেলসন মেন্ডেলা, তিব্বতের দালাইলামা পন্থিদের সাথেও অনেক ঘোরাফেরা করেছেন। 'ফ্রী তাহামিদের' সেই পর্বতারহিনীর সাথে দালাইলামার আস্তানায়ও তাকে দেখা গেছিল। ২০১০এ তিনি একবার আলোচিত হয়েছিলেন। চিত্র গ্যালারি ফটোগ্রাফি পাঠশালা করেছেন। তার ধানমন্ডির গ্যালারিতে পরাধীন তিব্বতিদের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনি আয়োজন করেছিলেন, কিন্তু চীনের গুপ্তচররা টের পাওয়ায় চীন সরকার বাংলাদেশকে প্রবল চাপ দেয় এই প্রদর্শনি বন্ধ করতে। একটু পরেই মার মার কাটকাট করতে করতে একদল পুলিশ আলোকচিত্র প্রদর্শনি পন্ড করে দিয়েছিল। এছাড়া তিনি বৈশাখী মেলা করতেন, সেই শাহাবাগ গনজাগরনে অন্যান্ন আর্টিষ্টদের মত উনিও বার বার সশরীরে সমর্থন দিয়েছিলেন। মন থেকেই দিয়েছেন।
মোটামোটি সর্বজন গ্রহনযোগ্য সজ্জন সংস্কৃতিমনা একজন ভদ্রলোক।
কিন্তু রিসেন্টলি আরো কয়েকজনের মত উনিও বিক্রী হয়ে গেছিলেন।
তার মত গুনি সংস্কৃতিমনা ব্যক্তির অধপতন মেনে নেয়া যায় না।
২০১৫তে যুদ্ধাপরাধী সাকা-মোজাহেদের এটর্নি বার্গম্যানের পক্ষে সাক্ষী দিতে তার পরিবার শুদ্ধ আদালতে গেছিলেন। বর্তমানে রাতের অন্ধকারে জামাত-বিএনপির সঙ্গে হাটাহাটি করেন। তখন আর সেক্যুলার থাকেন না। যুদ্ধাপরাধীদের দালাল, সাকা, ক্যাডম্যানের দালাল হয়ে যান।
আল-জাজিরার পরিচয় কি? আল-জাজিরার ভূমিকা কি? আল-জাজিরা বাংলাদেশে কাদের পক্ষে কথা বলতো? বলে?
কেনো বলে? আল-জাজিরা ইতঃপূর্বে অন্যান্ন দেশে কি কি করেছে?
শহিদুল আলম কখন উস্কানি দিয়েছেন?
শহীদুল পুলিশের কাছে তাঁর ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, বিক্ষোভ তুঙ্গে থাকার সময় ৪ জন ছাত্র নিহত কয়েকজন ছাত্রীর নিখোঁজ/আটকে রাখা যে বিষয়টি তিনিও নওসবার মত ফেসবুকে প্রচার করেছিলেন, সেটি আরও নিশ্চিত হয়ে প্রচার করা উচিত ছিল।
শহিদুল আলমের উস্কানির ফলে কি কি ঘটতে পারত? স্কুল/কলেজের শিক্ষার্থীর আরোও লাশ পড়লে পরিস্থিতি কি কি হতে পারতো?
শিশু শিক্ষার্থিরা ৭ দিন ব্যাপি রাস্তায়, একজন উদার অরাজনৈতিক প্রথিতযশা শিল্পীর এই সংকটময় সময়ে কি কি ভূমিকা থাকা উচিত?
উনি কি সেটা পালন করেছে্ন?
নাকি উল্টোটা করেছেন?
নবীন শিক্ষার্থীদের বাড়ী ফিরতে না বলে, রাস্তায় থেকে যাওয়া, বড়দের আগুনের মূখে ঠেলে দেওয়া কতটা বেপরোয়া/বিপজ্জনক কর্ম?
আলজাজিরাকে বলেন, তিনি বলেন, চলমান নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সরকার চাপাতি দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থিদের কোপাচ্ছে !
কোন কোমলমতির গায়ে সরকার চাপাতি কোপ দিল? মিথ্যার একটা সীমা থাকা দরকার।
বলেছেন, দেশে বাক স্বাধীনতা নেই।
বাক স্বাধীনতা নেই?
অর্ধশতাধিক পত্রিকা, ৩৬ টি টিভি চ্যানেল, এফএম রেডিও, শতাধিক অনলাইন মিডিয়া। যা ইচ্ছে তাই লিখছে, বলছে।
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো ও মুসলিম দেশগুলোর ভেতর বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো সবচেয়ে বেশী বাক স্বাধীনতা ভোগ করে।
কোন মুসলিম দেশেই বিরোধী দল ১ মিনিটও টিভিতে বক্তব্য দিতে পারেনা। লাইভ বক্তব্য তো দুরের কথা।
বাংলাদেশে বিরোধী নেতা ও সমর্থক সাংবাদিকরা ৩০টা চ্যানেলে ঘন্টার পর ঘন্টা আনসেন্সর্ড লাইভ সম্প্রচার করে সরকারের মুন্ডুপাত করে যেতে পারে। দিনের পর দিন আসিফনজরুল, নুরুলকবির যাচ্ছেতাই ভাষায় সরকারি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ইচ্ছেমত সত্য-মিথ্যা যা ইচ্ছা বলে যাচ্ছে।
যেটা তুরষ্ক, ইরান, ফিলিপিনস, ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়া কোথাও ১ মিনিটও সম্ভব না।
তিনি আরো বলেন কোটা সিস্টেম হলো মেধাবীদের বাদদিয়ে সরকারের দলীয় লোকজনকে চাকুরি দেওয়া।
উনি শিক্ষিত সচেতন হয়েও বলেননি কোটা প্রার্থিরা মেধাবীদের সাথে কঠিন পাল্লাদিয়ে তাদের সমকক্ষ হলে তারপর কোটা বিবেচনা হয়
উনি একটিবারও মুক্তিযোদ্ধা কিংবা সমাজের বঞ্চিত পিছিয়ে পড়া জেলা, আদিবাসী, পঙ্গু, জেন্ডার সমতা সুরক্ষা নারীরা প্রাপ্য, বলেন নি।
আরও বলেন, এই সরকার অনির্বাচিত। দেশ শাসন করার বা ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই কারন তারা বিনা নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতায় বসেছে।
কিসের ভিত্তিতে একথা বলেন?
নির্বাচন কি হয়নি? একটিদল না আসলেই সেটা অনির্বাচন?
এই নির্বাচনে কি জনসমর্থন একদমই ছিলনা?
১৪ জানুয়ারী নির্বাচনে ভোটার সংখা কম ছিল, কারচুপির প্রশ্নই আসে না, কারন অর্ধেকের বেশী আসন বিনা বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েগেছিল। বাকি নির্বাচন অনুষ্ঠান না করা হলেও সরকারগঠন সম্ভব ছিল।
শক্ত বিরোধী নেই, কারচুপি লাগে নাকি। নির্বাচনের সময়টা রাস্তায় ব্যাপক আগুনসন্ত্রাস, পুলিশ হত্যা, প্রিজাইডিং আফিসার হত্যা ২০০ ভোটকেন্দ্র (স্কুলঘর) জালিয়ে দেয়া হয়েছিল।
অনেক কম ভোটার। এরপরও পরদিন নির্বাচনের ফলাফল আসার পর সবাই নিরবে সমর্থন দিয়েছিল। বিএনপি সর্মর্থক ছোটবড় সব ব্যাবসায়ীও নিরব সমর্থন দিয়েছিল।
জনগন লাগাতার হরতাল ও বিরামহীন আগুনসন্ত্রাসকে বুড়োআঙ্গুল দেখিয়ে সবাই কাজে যোগ দেয়।
ভোটের পরদিন লাগাতার কঠিন কার্ফিউর ন্যায় হরতাল/অবরোধের হুমকি দিয়েছিল বিএনপি-জামাত।
কিন্তু কেউ মানে নি,
সবাই কাজে ফিরে গেছিল।
পরদিন সকালে রাস্তাঘাটে রিতিমত জানজট লেগে যায়।
দেশের সব স্কুলে নতুন বই হাতে স্কুলশিশুদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে,
ঢাকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো হরতাল/অবরোধে চারমাস বন্ধ ছিল, সেগুলোও নির্বাচনের পরদিন খুলে যায়,
এই চার মাস বড় সপিং সেন্টারগুলো মেইন গেট বন্ধ রেখে, চিপার একটি গেইট খোলা রাখতো
কিন্তু নির্বাচনের পরদিন রাজধানীর সবগুলো কর্পোরেট অফিস, সপিং সেন্টার একযোগে খুলে সবাই নবনির্বাচিত সরকারকে বিপুলভাবে নিরব স্বাগত জানিয়েছিল।
এসব অবস্থা দেখে হতবুদ্ধি খালেদা কি করবে আর বুঝে উঠতে পারেনি।
সবসময় জনপ্রীয়তা গ্রহনযোগ্যতা বুঝতে গনভোট লাগে না,
পাবলিকের আচরন ও মেজাজেও অনেক কিছু জানা যায়, বুঝতে হয়। পর্যাপ্ত জনসমর্থন না থাকলে সরকার এক মাসও টেকার কথা না।
আর উনি ফস করে বলে বসলেন "বিনা নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতায় বসেছে"। হারামিপনার সীমা থাকা দরকার।
তার গুরু কামালহোসেন তো রিট মামলা করেছিলেন। জাজ স্পষ্ট বলেদিয়েছে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচনে বিজয়ী আইনে বৈধ, এরুপ উদাহরন প্রতিটি নির্বাচনেই কমবেশী দেখা যায়। সবদেশেই এই নিয়ম। রুল দিয়ে রিট খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
তিনি বলেন
এখন ক্ষমতা ছেড়ে দিলে দেশের মানুষ তাদের কেটে টুকরো টুকরো করবে । তাই পালাবার কোন রাস্তা নাই বলেই তারা যে কোনভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়।
(এটা স্পষ্ট জামাতি ডায়ালগ, যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি দেয়ার পর জামাতিরা এরকম বলতো)
বিদেশি একটি চ্যানেলে এই ধরনের ডাহা মিথ্যা এবং বিপজ্জনক কথাগুলো কি একজন আর্টিস্ট বা শিল্পী বলতে পারেন ?
উনি কোথায় কি এঁকে বাংলাদেশকে কোন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, আমি জানিনা । তবে এই সাক্ষাতকার যে একটি উদীয়মান স্বাধীন দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হেয় করবে, তাতে সন্দেহ নাই।
রিসেন্ট ফেবুতে নওসবার মত পরিকল্পিত মিথ্যা উষ্কানি রাষ্ট্র ও মানবতা বিরোধী।
পুলিশ তাকে ধরেছে, উনি হয়তো জানে সে দিন মহম্মদপুরের বৈঠকে/চক্রান্তে কারা কারা ছিল বা .. আরো কিছু থাকতে পারে।
একজন প্রথিতযশা শিল্প ব্যক্তিত্বকে হয়তো বেশীদিন আটকে রাখা সম্ভব হবে না।
তার অপরাধের শাস্তি দাবী করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৫১