সে অনেক কাল আগের কথা যখন আমি এলোমেলো কথা লিখতাম। তারপর এলোমেলো কথা পসরা গুটিয়ে কিছু গোছানো কাজে নেমে পরলাম। ভালই লাগে এই গোছানো সংসার জীবন।আজকে কিছু অনুভূতি খুব লিখতে ইচ্ছে করছে। তাই শুরু করে দিলাম। জানি লেখাখানি ভালো হবে না, কারন লিখি না তো অনেক দিন। তারপরেও কি বা যায় আসে। লিখতে বসেছি এটাই বা কম কি।
সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেলো সংসার জীবনের। অনেক আনন্দ, হাসিখুশি, খুনসুটি, রাগারাগি আর অনেক অনেক ভালোবাসা দিয়ে ভরপুর ছিল একটা বছর। যেন চোখের পলক ফেলতেই শেষ হয়ে গেলো।আমি জানি না আমি এই সময়টাতে আমার দায়িত্ব এবং কর্ত ব্য ঠিক মত পালন করতে পেরেছি কিনা। তবে আমি আমার দিক থেকে সবসময় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। বাকিটা আল্লাহ্ সবসময় আমার সহায় ছিলেন। সে জন্য আমি মহান আল্লাহ্ পাকের অশেষ শুকরিয়া আদায় করি।
আমার এই চলার পথে আমার সবচাইতে বড় শক্তি আর সাহস ছিল আমার জীবনসঙ্গী। সে প্রতি মুহূর্তে আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তার জন্য তাকে ধন্যবাদ দিলেও কম হয়ে যাবে।
সংসার জীবন অনেকটা গোলক ধাঁধার মত।কখন কোন রাস্তা আসে বলাই যায় না।সেই গোলক ধাঁধায় নিজেকে নিজের মত রাস্তা করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা যেমন কঠিন তেমনি আনন্দেরও। এই গোলকধাঁধায় চলতে চলতে একদিন হঠাৎ পেয়ে গেলাম নতুন এক পথের ঠিকানা। অন্যরকম এক পথ।নতুন এক জীবনের সন্ধান। নিজের সন্তান।
যেদিন প্রথম জানলাম সেদিন কিছু বুঝিনি। কেমন যেন মিশ্র এক অনুভূতি ছিল।
কেমন যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না। ধীরে ধীরে সময় যেতে থাকলো। আমার ভেতরে নতুন এক জীবন একটু একটু করে বাড়তে লাগলো।অনেক কষ্ট অনেক প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম আমি।তবুও ভালো লাগা একটুও কমেনি। বরং অনুভূতি গুলো আরও বাড়ছিলো।
প্রযুক্তির কল্যাণে কাল যখন আমার ভেতরে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা নতুন জীবনের ঝলক নিজের চোখে দেখছিলাম তখন যে অনুভূতি হচ্ছিলো তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। কেমন যেন অনুভূতি। আমার ভিতরে একটা ছোট্ট মানুষ হাত পা নাড়ছে। ভাবতেই কেমন কেমন যেন লাগে।ভেতর থেকে খুশি আর ভালোলাগায় চোখের কোনে বার বার পানি জমে যাচ্ছিলো। ঘরে ফিরেও বার বার আমার ছোট্ট সোনার ছবিগুলো দেখছিলাম।
আল্লাহ্ পাক আমার সোনামণি কে সুস্থ রাখুক। ভালো রাখুক। তাকে ভালোভাবে পৃথিবীতে আসতে দিক।এই কামনা করি। আর আল্লাহ্ পাক আমাকে সাহস ও শক্তি দিক আমি যাতে আমার সোনামণিকে ভালোভাবে রাখতে পারি, পৃথিবীতে আনতে পারি। সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ বানাতে পারি।
আর আমার ছোট্ট সোনামণি তুমি ভয় পেও না। আমি আছি, আমি সবসময় থাকবো তোমার সাথে।তোমার মা তোমার অপেক্ষায় আছে। তুমি নির্ভয়ে বেড়ে ওঠো আমার ভেতরে। আল্লাহ্ তোমার রক্ষা করবেন। সবশেষে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার জীবনসঙ্গী কে, যার জন্য জীবনের সবচাইতে সুন্দর সময়, মুহূর্ত বা অনুভূতি যাই বলি না কেন উপভোগ করতে পারছি বলে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬