somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রূপকথার গল্প

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি গ্রামে এক সময় দুই চোরের বাস ছিল। দুজনের মধ্যে খুব ভাব। তারা কেউ কারোর পরামর্শ ছাড়া কোন কাজ করতো না। তারপর চুরির মাল নিজেরা সুবিধা মত ভাগ করে নিত। এই দুই চোর ছিল অনেক ধূর্ত। তারা দিনের বেলা ভাল মানুষ সেজে লোক ঠকাত, আর রাতের বেলা মানুষের সর্বস্ব চুরি করত। পাড়ার লোকেরা সবাই তাদের চিনতো। কিন্তু তাদের কুবুদ্ধির জন্য কেউ কিছু করতে পারতোনা।

দুই চোরের বেশ ভাল মতই দিন কাটছিল। শেষে এক সময় দেশের অবস্থা খারাপ হয়ে এল। চোরদের দিন ও আর চলে না। দুই বন্ধু ভারি মুশকিলে পরল। তারা বসে বসে ভাবতে লাগলো কি করে তাদের দিন কাটবে। তারা যখন এইসব দুঃখের কথা বলছে সে সময় দেখা গেল একজন বুড়ো লোক সামনের রাস্তা দিয়ে ঠুক ঠুক করে চলছে। সে আবার বির বির করে কি যেন মন্ত্র পড়ছে। দেখে মনে হয় লোকটা খুব ধার্মিক।বৃদ্ধের পেছন পেছন তার একটা গাধা চলেছে। তার পিঠে মস্ত এক বোঝা।

চোরদের একজন বলল "আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে। বুড়োর গাধা টা চুরি করা যাক। তারপর গাধাটা বিক্রি করে ভাল মত ভোজ লাগাবো। "
অপর চোর বলল , " কিন্তু বুড়োর সামনে এই ভর দুপুরে চুরি করবে কি করে ?"
১ম চোর বলল, “কিছু ভেবো না। যা বলি শুধু তাই শুনে যাও।“ বুড়ো মাথা নিচু করে চলেছে আর গাধাটা রয়েছে তার থেকে অনেক দূরে। আমি গাধার পিঠ থেকে যখন বোঝাটা আমার ঘারে তুলে নিব, তুমি তখনই গাধাটাকে সরিয়ে ফেলবে। তারপর সব কাজ আমার।

ব্যবস্থা মত সব করা হল। ১ম চোর যখন গাধার বোঝা নিজের কাধে নিয়ে বুড়োর সঙ্গে চলতে লাগলো, দ্বিতীয় চোর তখন গাধা নিয়ে তার ঘরে চলে গেল।
বুড়ো এগিয়ে যেতেই এক পরিচিত লোকের সঙ্গে তার দেখা হল। দুজনের গল্পে বেশ কিছু সময় কেটে গেল। তারপর বুড়ো আস্তে আস্তে তার বাড়ির দরজায় এল আর পেছনে ফিরে তার গাধাটাকে খুঁজতে গিয়ে সেই চোরকে দেখতে পেলো। বুড়ো অবাক হল আরও যখন দেখতে পেলো গাধার পিঠের সমস্ত মালপত্র এই লোকটার কাধে রয়েছে। বুড়ো লোকটাকে জিজ্ঞেস করল, কি ব্যাপার?

চোর তখন বানিয়ে বানিয়ে বলল, “প্রভু, আমিই আসলে আপনার গাধা। আমি খুব ধনীর ছেলে ছিলাম আর সে জন্য খুব অহঙ্কার ও ছিল। সবার উপর মেজাজ দেখাতাম। একদিন রাগের মাথায় মাকে মারার পরই আমি গাধা হয়ে গেলাম। তারপর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে, বাজারে বিক্রি হয়ে, শেষে আপনার কাছে এলাম। আপনি সবসময় প্রার্থনা করে আবার আমায় মানুষ করে দিলেন। আমি আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ।“

বুড়ো ছিল খুব ধর্মভীরু। সে চোরের দুহাত ধরে বলল, ' তোমার ওপর খোদার অসীম দয়া। চল,আমার ঘরে একটু খাওয়া দাওয়া করবে।'
বুড়ো চোরকে সেদিন অনেক কিছু খাওয়ালো। তার কাছে খেয়েদেয়ে,ঘুমিয়ে, অনেক উপহার নিয়ে চোর বাড়ি ফিরলো।

এদিকে পরদিন বুড়ো আবার বাজারে গেল গাধা কিনতে। দেখলো তার পুরনো গাধাটা আবার এসেছে। মনিবকে দেখে সে আনন্দে ডেকে উঠলো। কিন্তু বুড়ো গেল বেজায় খেপে। সে সহজ সরল ধার্মিক মানুষ। তাই ভাবলো লোকটা আবার বুঝি কোন অন্যায় করে গাধা হয়ে গেছে। সে গাধাকে ধমকে উঠলো, ' আবার তুই পাপ করেছিস? আমি আর তোর জন্য প্রার্থনা করতে পারবোনা।' এই বলে সে অন্য একটা গাধা নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো।

আর চোরেরা?? গাধাটা বিক্রি করে সেই টাকায় মস্ত ভোজ লাগিয়ে দিল।
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×