সর্বোচ্চ শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে কয়েকটি অপরাধ জামিন অযোগ্য করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সংশোধিত আইনে ন্যূনতম সাত বছর ও সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ২০০৬ সালে প্রণীত তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজার বিধান ছিল।
এ ছাড়া এমএলএম ব্যবসা (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই ব্যবসায় কাউকে প্রতারিত করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে। প্রতারণা করলে সরকার কোম্পানির কার্যক্রম স্থগিত করে কোম্পানিটিতে এক বা একাধিক প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইনের খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান, আগের আইনে শাস্তি অপর্যাপ্ত ও অস্পষ্ট ছিল। সংশোধিত আইনে ন্যূনতম সাত বছর ও সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি অপরাধ জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। আগের আইনে সব অপরাধ জামিনযোগ্য ছিল।
আগের আইনে কিছু অপরাধ নন-কগনিজেবল (আমলযোগ্য নয়) ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন আইনে এ ধরনের সব অপরাধই হবে কগনিজেবল (আমলযোগ্য)। এসব ক্ষেত্রে পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। তিনি বলেন, এত দিন এ আইনে মামলা করতে হলে পুলিশকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হতো। কিন্তু এখন পুলিশই অপরাধ আমলে নিয়ে মামলা করতে পারবে।
এমএলএম কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন: লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজা এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে এমএলএম কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, আইনটি পাস হলে বর্তমানে যেসব কোম্পানি আছে, সেগুলোকে ৯০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স নিতে হবে। এ আইনের ফলে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে যাবে। আর বহুধাপ বিপণনের (এমএলএম) ব্যবসা করতে চাইলে লাইসেন্স নিতে ও কোম্পানি করতে হবে। লাইসেন্স হস্তান্তরযোগ্য হবে না বলেও তিনি জানান।
আইনটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সচিব আরও বলেন, ক্রেতার অনুমতি না নিয়ে জোর করে কোনো পণ্য বিক্রি করা যাবে না। আইনের বাইরে কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। আর বিধিবহির্ভূতভাবে কাজ করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কেউ কোনো অপরাধ দুবার করলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, মালিক বা পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।