somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

.....ধরার উপরে আছি......২য় পর্ব

০২ রা মার্চ, ২০১১ রাত ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব ...১ম পর্ব

যাহারা অন্যের ধরা খাওয়া দেখিয়া বিশেষ পুলকিত হয় তাহাদের মনোবাসনা পূরনে নিবেদিত.......
তোমার দিল কি দয়া হয়না:
আমার সদ্য বিসিএস'এ চান্স পাওয়া এক চাচ্চুর জন্য ফোরটিন জেনারেশনের সবাই ফিল্ডে নামিয়া পড়িলো পাত্রী খুজিতে.........প্রায় প্রতিদিনই ড্রয়িং রুমে আলুচনা হয় সম্ভাব্য পাত্রীদের ব্যাপারে আর পড়ার টেবিলে বসিয়া সামনে বই খুলিয়া হস্ত দু'খানির মাঝে গাল রাখিয়া অনাগত সেই মধুর সময় কবে আসিবে এবং আসিলে আমি কাহাকে কাহাকে আমার হবু পাত্রী নির্বাচন করিব সেই সব জটিল দ্বিবাস্বপ্ন দেখিতাম। এমনি কোন একসময়ে আমার উর্বর মাথায় হিটলার আর্বিভুত হইলেন। আমার চাচ্চুর সাথে যদি আমার ক্লাশের পরী শমী'র বড় বোনের বিবাহ ঘটানো যায় তাহা হইলে তাহাদের বাসায় আমার প্রবেশ আর কে রোধ করিবে.......(এমনিতে তাহার কাছে ঘেষার চান্স কস্মিনকালেও পাওয়া যায়না)। ইহাতে আমার চেয়ে আমার মাতার উপকারই বেশি হইবে বিখজ ভবিষ্যতে তাহাদের আর পুত্রবধূ খুঁজিতে হইবে না........মায়ের উপকারে করে যেজন, সেজন সেবিছে ঈশ্বর। অতএব....চাচ্চুর মাথায় এক বিকালে ঢুকিয়ে দিলাম সেই বান্ধবীর বোনের মহিমান্বিত কথা.....চাচ্চু যদিও মুখে কিছু বলিলেন না...তথাপি দেরিও করিলেন না...তারপর দিন সন্ধ্যায় আম্মা ও ফুফু কে পাঠিয়ে দিলেন তাহাদের বাসায় । আর আমি টেবিলে বসিয়া ...চাচ্চুর বিয়ের জন্য মোনাজাত করিলাম... ফকিরকে দু'টাকা দেয়ার মানত করিলাম এবং এইবার রোজায় দুপুরে হিন্দু হোটেলে গিয়া সেহরী খাওয়ার জন্য তওবা করিলাম.......তবুও যেন আমার হিটলারী প্ল্যান সাকেসস হয়। রাত ১০/১১টা নাগাদ আম্মুরা বাসায় ফিরেই যে ঘোষণা দিলেন ......তাহাতে আমি আমার সকল দোয়া ফেরত লইলাম.......বিখজ প্ল্যান পুরাই সাকসেস শুধু আমার বান্ধবীর বড় বোনের বদলে বান্ধবীকেই পছন্দ হইয়াছে এবং তাহারা ছক কষিতে বসিলো কিভাবে আমার বান্ধবী কে চাচ্চুর জন্য ফিক্সড করা যায় তাহা লইয়া।...........হে আল্লাহ তুমি কি আমার বাংলায় করা দোয়া বুঝিতে পারও নাই..????.....খাল কাটিয়া এইকি কুমির আনিলাম !যাহাকে আমি দিবারাত কল্পনা করি তাহাকে ভবিষ্যতে 'চাচীআম্মা' ডাকিব ভগবাণ তোমার দিল কি দয়া হয়না...!!

ষ্যার ডাকলে কি হয় ষ্যার?:
তখণ ইনভার্সিটিতে পড়ি। একদা আমার ইন্টারে পড়ুয়া চাত্রী (ঐ অঞ্চলে ছাত্রী বলতে পারে না) আব্দার করিল, "ও ষ্যার আমি একদিন আপনাদের ইনভার্সিটিতে যাব....আপনি তাকবেন ষ্যার?"
"কেন??"
"আমার আম্মু বলচে....আমি যদি ইন্টার পাস করতে পারি তাইলে আমাখে কম্পুটার ছাইন্সে ভরতি করাবে.....আমি একটু কম্পুটার ছাইন্স ডিপার্টমেন্ট দেকতে চাই ষ্যার...."
"তাইলে আর যাওয়ার দরকার নাই" মনে মনে বলিলাম ইন্টার পাস তুমি করিলে ফেল করিবে কে?
"কিতা হইছে ষ্যার, আমি যাব ষ্যার"
আমি ভাবছিলাম ভুলিয়া গিয়াছে। কিন্তু পরের শুক্রবার বিকেলে হলে ঘুমায়াছিলাম, ফোন...
"ও ষ্যার......আপনি কুতায়? আমি ইনভার্সিটিতে আসছি...."
...খাইছে আমারে...শুক্রবারে আসিয়াছে!!.....এইটাইমটা ক্যাম্পাসে সবার আড্ডা চলে..... ভার্সিটির পোলাপাণ যদি দেখে ছাত্রী নিয়া ক্যাম্পাসে ঘুরতেছি তাহা হইলে......আর মুখ দেখানো যাবেনা কারণ এরকম অনেক রসাত্মক/বিদ্রুপাত্মক কাহিণী হলে বহুল জনপ্রিয়...
"ও ষ্যার আপনি আসেননা..."
আসিলাম, এবং তাহার কড়া মেকাপ-গেটাপ দেখিয়া আরও মিইয়ে গেলাম। আজ ধরা খাইব।
সেতো খুশি......
"ও ষ্যার ...আপনারে ইস্মার্ট লাগতেছে ষ্যার"
"শোন তৃষিতা....ক্যাম্পাসে সবাই আস্তে আস্তে কথা বলে....আর তুমি
ঐ ষ্যার ষ্যার করবা না, ..দরকার হলে ভাইয়া বলবা..."
"কিতা অয়? ষ্যার কে ষ্যার বললে কিতা অয়?"
ওফ্ এই গাধারে কি বুঝাইব!।...
কোনমতে সবার চোখ এড়াইয়া তাহারে দেখাইতেছি....এইটা এই ব্লিডিং....ঐটা তমুক....

হঠাৎ শুনি...."আসসালামু আলাইকুম... বাবু ভাই না? কেমন আছেন?" হলের জুনিয়র যাহার সাথে আসার আগেই একবার দেখা হইয়াছে....
কোনমতে চোখ রাঙাইয়া বুঝাইলাম এইটা স্টুডেন্ট; নো ফাইজলামি...
হারামি মিউ মিউ হাসি দিয়ে বলে....
"ভাই উনি কে?"
"স্টুডেন্ট" আমার ভাব-মূর্তি বজায় রাখিয়া বলি...
"ও আচ্ছা....স্টুডেন্ট.." বলিয়া বদটা চলিয়া যায়.... আর আমি হাফ ছাড়ি...
কিছুক্ষন পর সমবেত....আওয়াজ
"আসসালামু আলাইকুম ভাই নাকি?" এইবার দেখি বদ ছোকরা পুরা এক গ্রুপ নিয়া আসছে.....সবাই আলাদা আলাদা ভাবে আমার ছাত্রীর সাথে সালাম দিয়া পরিচিত হইতেছে এমন বিনয়ের সাথে যেন, কত লক্ষী ছোট ভাই আমার একেকজনা!!.।
কোনমতে এই গ্রুপ পার করিলাম।
ছাত্রীতো বিশাল হাসি দিয়া বলে " ও ষ্যার আপনার বন্ধুরা দেখি সবাই আপনারে বালা পায়..."
আমি মনে মনে হলে ফেরার পরের ঘটনা কল্পনা করিয়া আতংকে আছি... এহেন পুংটারা জীবিত মানুষরে পচায়া মাইরা ফেলে...আর আজতো টপিক পাইয়া গেছে....মাস্টর-চাত্রী'র ইসু্।
দু'মিনিট পার না হইতেই দেখি...আমার কিছু বন্ধু সহ হলের পুংটাগুলা স্বদ্ল বলে আসিতেছে...আর সেই সালাম...যাহারা জীবনে তাহাদের পিতা-মাতাকে সালাম করে কিনা সন্দেহ তাহাদের এই ভক্তি বড়ই সন্দেহজনক...
"আসসালামু.....ভাই নাকি...?" বন্ধু যদি বলে 'ভাই নাকি?' তাহা হইলে কোন এঙ্গেল চালাইতেছে বুঝিতে পারিলাম না।
এইবার আমার গাধা চাত্রীরের মদন বানাইতেছে...
"আপু...আপনি কি করেন?" "ভাইয়া না আপনার কথা অনেক বলে আমাদের"
"আপু আপনাকেনা মারাত্মক সোন্দর লাগতেছে"
"আপু আপনার দাওয়াত আবার আসবেন কিন্তুক , অব্শ্যই...."

অথচ..যাহারে পচাইতেছে...সে তাহা প্রশংসা হিসেবে ধরিল...
নইলে বলিবে কেন, " ও ষ্যার আপনার বন্ধুরা না কি বুকা!! আমাকে না আপনার ডার্লিং মনে করচে....হি..হি. ....হি..."


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ২:৫৭
২৯টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×